আইসিজের রায়ে বদলাবে না গাজার পরিস্থিতি
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচারালয়ের (আইসিজে) রায়ে যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি তেমন বদলাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা। দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের শিক্ষক মোহাম্মদ ইলমাসরি। তাঁর মতে, ইসরায়েল আইসিজের যুদ্ধবিরতি কার্যকরের রায় আমলে নেবে বলে মনে হয় না। যুদ্ধবিরতি কার্যকরে ইসরায়েলকে নির্দেশ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (২৪ মে) অভিমত জানায় আইসিজে। বার্তা সংস্থা আলজাজিরা প্রকাশিত এক প্রতিবেদন সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
আদালত রাফা শহরে সামরিক অভিযান বন্ধে ইসরায়েলকে নির্দেশ দেন। মোহাম্মদ ইলমাসরি আলজাজিরাকে বলেন, ‘গত কয়েক মাসে ইসরায়েলের আচরণে দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক আইন কী বলে, সে বিষয়ে তারা তেমন পাত্তা দেয় না। এই আদেশ বা আইনগুলোর প্রতিটি পাস হলে বিষয়টি আসলে আরো অসহযোগিতার দিকে যায়।
যতক্ষণ না যুদ্ধরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সরাসরি বলবে যথেষ্ট হয়েছে, এবার থামো; ততক্ষণ কিছু বদলাবে বলে আমি মনে করি না।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার জন্য সম্প্রতি আইসিজেতে আবেদন করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে রায় বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই এ আদালতের। এর আগে রাশিয়াকে ইউক্রেনে হামলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল আইসিজে, কিন্তু তাতে সায় দেয়নি মস্কো। তবে আইসিজে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রায় দিলে দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক আইনি চাপ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহের শুনানিতে দক্ষিণ আফ্রিকা অভিযোগ করে, রাফায় স্থল অভিযানের মধ্য দিয়ে গাজায় চালানো ইসরায়েলি গণহত্যা একটি নতুন ও ভয়ংকর পর্যায়ে চলে গেছে। আদালতে শুনানিতে দক্ষিণ আফ্রিকার আইনজীবী ভন লউই বলেন, রাফার অভিযান গাজা ও এর ফিলিস্তিনি জনগণের ধ্বংসের শেষ পদক্ষেপ। গণহত্যা থেকে ফিলিস্তিনের জনগণের সুরক্ষা প্রয়োজন। আর এই আদালত যুদ্ধবিরতির নির্দেশ দিতে পারেন। তবে ইসরায়েলের আইনজীবীরা দক্ষিণ আফ্রিকার মামলাটিকে ‘বাস্তবতাবিবর্জিত’ আখ্যা দেন এবং ১৯৪৮ সালের গণহত্যা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে বিদ্রুপ করেন।
ইসরায়েলের শীর্ষ আইনজীবী গিলাদ নোয়াম বলেন, কোনো বিষয়কে বারবার গণহত্যা বললে, তা গণহত্যা হয়ে যায় না। মিথ্যার পুনরাবৃত্তি করলে, তা সত্য হয়ে যায় না। একটা মর্মান্তিক যুদ্ধ চলছে তবে কোনো গণহত্যা হচ্ছে না।
প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিরোধিতা করে চলতি মাসের শুরুতে রাফার কিছু অংশে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। হামাসের সুড়ঙ্গ ও যোদ্ধাদের নির্মূলের অজুহাত দেখিয়ে শহরটি থেকে ব্যাপক পরিসরে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় তেল আবিব। এর পরিপ্রেক্ষিতে আট লাখের বেশি মানুষ নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে