উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটযাত্রা
আজ রোববার, ৭ জানুয়ারি দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সাধারণভাবে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যে ধরনের উৎসাহ-উদ্দীপনা প্রত্যক্ষ করা যায়, এবারের নির্বাচন নিয়ে তার কিছুটা ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আন্দোলনরত রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং তাদের সহযোগীরা দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন বয়কট করেছে। শুধু তাই নয়, তারা জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদিকে সরকারের পক্ষে এই সময় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো বিকল্প ছিল না।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে জানুয়ারি মাসের মধ্যেই দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান ব্যতীত সরকারের হাতে আর কোনো বিকল্প ছিল না। তাই যে কোনো মূল্যেই হোক সরকারকে এ সময়ের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। তারপরও যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন তাদের প্রচার-প্রচারণায় রাজনীতির মাঠ গরম ছিল। নির্বাচন কেন্দ্রে সাধারণ ভোটারের উপস্থিতি কিছুটা কম হচ্ছে বলে নির্বাচন পরিচালনাকারীদের কেউ কেউ বলছেন। কারণ বিএনপিসহ তাদের সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়ায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে এক ধরনের শঙ্কা বিরাজ করছে। তারা নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা হলেও শঙ্কিত। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বিস্তর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আনসার, পুলিশ ও বিজিবির পাশাপাশি সেনা সদস্যরা সার্বক্ষণিক কেন্দ্র ও কেন্দ্রের আশপাশে টহল দিচ্ছে। কোনো ধরনের নিরাপত্তাহীনতা বা বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিলেই তারা ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।
ভোটের আগের সন্ধ্যায় আমি রমনা থানা এলাকার কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, প্রতিটি কেন্দ্রেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল খুবই নিচ্ছিদ্র। নির্বাচন কেন্দ্রের ভেতরে এবং বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো ধরনের ত্রুটি লক্ষ্য করা যায়নি। কেন্দ্রের বাইরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থন, বিশেষ করে সরকারি দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক সমর্থকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। রাজধানীর কোনো কেন্দ্রেই বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি; কিন্তু সব কেন্দ্রেই ভোটারের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। মগবাজার, মধুবাগ শের-ই-বাংলা কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। যারা ভোট দিতে আসছেন তারা ত্বরিত ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছেন। কাউকেই ভোট দানের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়নি।
মগবাজার বিটিসিএল ভোটকেন্দ্রেও একই অবস্থায় প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। এ কেন্দ্রের একজন ভোটার আব্দুস সালাম। বুথফেরত আব্দুস সালামের সঙ্গে আলাপ হলে তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরের পরিস্থিতি খুবই সুন্দর। ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা ভোটারদের ভোটদানে সার্বিক সহায়তা করেন। তিনি একজন ব্যবসায়ী। সকাল সকাল ভোট দিতে এসেছেন স্ত্রীকে নিয়ে। আজ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তাই সারা দিন বাসাতেই অবস্থান করবেন। তিনি নিজেকে সরকারি দলের একজন সমর্থক হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ এবারও নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে। সাধারণ মানুষ বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম সমর্থন করে বলেই আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় বসাবে।
সকাল ৯টায় আমি রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল ভোটকেন্দ্রে যাই। এখানে ভোটকেন্দ্রের সামনে কোনো লাইন প্রত্যক্ষ করিনি। অনেকেই আসছেন এবং ভোট দিয়ে দ্রুত বাসার উদ্দেশ্যে চলে যাচ্ছেন। এখানে আলাপ হলো সুরেন্দ্র নাথ সাহার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি এ আসনে নৌকার মাঝি বাহাউদ্দিন নাছিমকে ভোট দিয়েছি। আমি আওয়ামী লীগ সমর্থক। তিনি আরও বলেন, যারা বিএনপি এবং অন্যান্য দল সমর্থন করেন, তারা ভোট দিতে আসেননি। ফলে ভোটারের উপস্থিতি কিছুটা কম। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের উপস্থিতি বাড়তে পারে। ভোটারের উপস্থিতি কম থাকার ব্যাপারে তিনি আরও একটি যুক্তি দেন। তিনি বলেন, ভোট উপলক্ষে আজ রোববার ছুটি থাকায় শুক্র, শনি সাপ্তাহিক ছুটিসহ মোট তিনদিন ছুটি পেয়ে অনেকেই গ্রামের বাড়িতে অথবা বিভিন্ন স্থান ভ্রমণে চলে গেছেন। এ জন্যও ভোটারের উপস্থিতি কম হবে।
সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন হাবিবুল্লা বাহার কলেজের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রের ভেতর এবং বাইরের পরিবেশ খুবই সুন্দর। ভোট দিতে খুব একটা সময় লাগেনি। তবে কেন্দ্রের বাইরের ভোটারের কোনো লাইন লক্ষ্য করা যায়নি। ভোটারের উপস্থিতি কম হবার ব্যাপারে তিনি কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যেহেতু রাজপথের বৃহত্তম বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন বয়কট করেছে, তাই তার প্রভাব পড়েছে ভোটারদের ওপর। এ ছাড়া এই কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর শক্ত কোনো প্রতিপক্ষ নেই। অনেকেই তিন দিনের ছুটি পেয়ে ঢাকার বাইরে চলে গেছেন। উপরন্ত শীতের কারণে ভোটাররা সকালে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হননি। তিনি আরও বলেন, আমি আশা করি, দুপুরের পর ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে।
মুগদা আইডিয়াল প্রি-ক্যাডেট স্কুলকেন্দ্রে ভোট দেন সাংবাদিক সালাহউদ্দির রাজীব। তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে খুব একটা ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি খুবই কম। তবে দুপুরের পর ভোটারের উপস্থিতি বাড়তে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মিরপুরের পীরেরবাগ ৬০ ফুট রাস্তার আলিম উদ্দিন স্কুল কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক আবুল কাশেম সোহাগ বলেন, আমাদের এই কেন্দ্রে এখনো (সকাল ১০:১৫টা) ভোটারের তেমন কোনো উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে কি না, তা নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আবু হেনা রাজ্জাকী, যিনি মধুবাগ শের-ই-বাংলা স্কুল কেন্দ্রের ভোটার। তিনি বলেন, আমি এবার ভোট দিতে যাব না। কারণ যে ভোটের রেজাল্ট আগেই সবাই জানে সেখানে ভোট দিতে যাবার কোনো মানে থাকতে পারে না। শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সবার অংশগ্রহণের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে সেটা জাতির জন্য মঙ্গলজনক হতো। আজ অর্থাৎ ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ব্যক্তিগতভাবে বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি। কোনো কেন্দ্রেই বিপুলসংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। সাধারণত আমাদের দেশে যে কোনো নির্বাচনের সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হবার আগে থেকেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়; কিন্তু এবার তার ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেছে।
নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করছেন এমন কেউ কেউ বলছেন, তীব্র শীতের কারণে মানুষ এখনো ভোট দিতে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়নি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন। এবারের জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রমী দৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিবার জাতীয় নির্বাচনের আগের দিন রাতে কেন্দ্রে নির্বাচন সামগ্রীসহ ব্যালট পেপার পাঠিয়ে দেয়া হয়; কিন্তু এবার নির্বাচনের অন্যান্য সামগ্রী আগের রাতে কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হলেও ব্যালট পেপার কেন্দ্রে পৌঁছানো হয়েছে নির্বাচনের দিন অর্থাৎ ৭ জানুয়ারি সকালে। ব্যালট পেপারে আগের রাতে সিল মারার অভিযোগ এড়ানোর জন্যই মূলত এটা করা হয়েছে। নির্বাচনি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের পরিবেশ ছিল খুবই সন্তোষজনক। আমি এসব কেন্দ্র পরিদর্শনকালে কেউই কোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ করেননি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীর ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে সকালে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। তিনি জনগণকে সব ধরনের ভয়ভীতি উপেক্ষা করে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, জামায়াত-বিএনপি নির্বাচনে বাধাদানের জন্য জ্বালাও-পোড়াও করেছে; কিন্তু মানুষ তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন রয়েছেন। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে কারচুপি করতে পারবে না বলেই নির্বাচনে আসেনি।
নানা কারণেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সংসদীয় এলাকা ৩০০টি হলেও এবার ২৯৯টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একটি সংসদীয় এলাকার একজন প্রার্থী ইন্তেকাল করায় সেই আসনে এখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। পরে সুবিধাজনক সময়ে এ আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৪টি। এর মধ্যে ২৮টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। রাজপথে বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ মোট ১৬টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রয়েছে। বিএনপিসহ এসব রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আন্দোলন করছে অনেক দিন ধরেই। শুধু তাই নয়, তারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে সাধারণভাবে জাতীয় নির্বাচনের যে জৌলুস তা অনেকখানিই ম্লান হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ থেকে এবারের জাতীয় নির্বাচনে যে ২৬৫ জন অংশগ্রহণ করছেন তাদের মধ্যে ১৭০ জন বা ৫৯ শতাংশই ব্যবসায়ী।
এবারের জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা হচ্ছে ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭৬ লাখ এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৮৪৯ জন। মোট ভোটারের মধ্যে নতুন ভোটার ১ কোটি ৫৪ লাখ। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ছিল ১০ কোটি ৪১ লাখ। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ছিল ৯ কোটি ১১ লাখ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যা আজকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, এতে মোট ১ হাজার ৯৭০জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে ২৬৬, জাতীয় পার্টি থেকে ২৬৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যান্যের মধ্যে তৃণমূল বিএনপির ১৩৫, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ এবং বিএনএমের ৫৬ প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। ২৮টি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ৫৩৫ এবং স্বতন্ত্র ৪৩৬ এবং অবশিষ্ট অন্যান্য প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
নির্বাচনে নারী প্রার্থী ৯০ এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৭৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনে যতসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন অতীতে আর কখনোই এত বিপুলসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে দেখা যায়নি। মোট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন ১ হাজার ৮৯৫ প্রার্থী। শেষ পর্যন্ত কিছুসংখ্যক প্রার্থী নির্বাচনের অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার কারণে মোট প্রতিযোগীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। বর্তমান জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ২৮৩টি আসনে প্রতিযোগিতা করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কয়েকজন প্রার্থী প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। আওয়ামী লীগ সমঝোতার মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে ২৬টি আসনে ছাড় দিয়েছে। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী, যারা প্রতিযোগিতা করছেন তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর বাইরে ২৬৯ জন প্রতিযোগিতা করছেন।
নির্বাচনে এবারই প্রথম দলীয় মনোনয়ন না পেয়েও দলীয় অনুমতি নিয়ে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন অনেকেই। জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করার লক্ষ্য নিয়ে বিএনপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল আন্দোলন সংগ্রাম করে চলেছে। ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীবাহী বাসে সন্ত্রাসীরা অগ্নিসংযোগ করে বেশ কয়েকজন নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছেন। সবচেয়ে উদ্বেগজনক ব্যাপার হচ্ছে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে যাত্রীবাহী ট্রেনে অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। যারাই এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা যে কাজটি মোটেও ভালো করেনি, তা বলাই বাহুল্য। নির্বাচনে কে অংশ গ্রহণ করবে আর কে ভোট দেবে–এটা একজন নাগরিকের নিজস্ব অধিকার। কাউকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের নিষেধ করা যেতে পারে; কিন্তু তাই বলে কাউকে জোর করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ অথবা অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার অধিকার কারও নেই।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড ও অর্থনীতিবিষয়ক লেখক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে