Views Bangladesh Logo

শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে বরাদ্দ বাড়ান

দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের করুণ পরিস্থিতির মুখে অনুমান করা গিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার এই দুটি খাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে; কিন্তু ২০২৫-২৬ অর্থবছরের খসড়া বাজেটে জানা গেল এই দুটি খাতে বরাদ্দ কমছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের খসড়া এডিপি অনুসারে, শিক্ষা খাতে ৯১টি প্রকল্পে আগামী অর্থবছরের বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা, চলতি অর্থবছরের মূল এডিপিতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ৩১ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল এডিপি থেকে আগামী এডিপিতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। আর স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমছে আড়াই হাজার কোটি টাকা।

এসব তথ্য জানা গেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে। ৬ মে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বর্ধিত সভায় আগামী এডিপির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। আজ রোববার (১৮ মে) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় নতুন এডিপি পাস হওয়ার কথা। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, এবার মূল বাজাটের আকারও কমছে চলতি বছরের তুলনায়। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপির আকার হচ্ছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। অবশ্য পরে তা কমিয়ে আনা হয়।

নতুন খসড়া এডিপিতে বরাদ্দের দিক থেকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতকে। এ খাতে মোট ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩২ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে শিক্ষা খাতে।

পরিবহন ও যোগাযোগ, বিদুৎ ও জ্বালানি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ খাত। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই দুটি খাতেও বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি; কিন্তু শিক্ষা ও চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার এবং এই দুটি খাত উন্নয়ন না হলে জাতির সামগ্রিক উন্নয়নও ব্যাহত হয়, সেই প্রেক্ষাপটে শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেতে পারত। কারণ বাংলাদেশের শিক্ষা ও চিকিৎসাব্যবস্থা এমনই নাজুক, এই দুটি খাতকে ঢেলে সাজানো ছাড়া আর উপায় নেই।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে, পৃথিবীর যে ১০টি দেশ অর্থনীতির আকারের তুলনায় শিক্ষা খাতে সবচেয়ে কম বরাদ্দ দেয়, বাংলাদেশ তার একটি। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা পেতে একজন বাংলাদেশির বছরে ৮৮ ডলার খরচ করা প্রয়োজন; কিন্তু বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে মাথাপিছু খরচ হয় ৫৮ ডলার, যার বড় অংশই নাগরিকরা নিজেরা সংস্থান করেন।

শিক্ষা ও চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আশা করা গিয়েছিল শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে, এই খাতে বরাদ্দ বাড়বে। না বাড়াটা দুঃখজনক বিষয়। এখনো হয়তো সময় আছে বরাদ্দ বাড়ানোর। তাই আমরা চাই শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতকে প্রাধান্য দিয়ে এ খাতে আরও বরাদ্দ বাড়ানো হোক।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ