ভারত এখন ভুটানের সঙ্গে রেলপথ সংযুক্ত করতে আগ্রহী
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তথা অনান্য নানা কারণে মায়ানমার এবং বাংলাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগের প্রকল্পগুলো পিছিয়ে পড়ায় ভারত এখন আরেকটি প্রতিবেশী দেশ ভুটানের সঙ্গে নতুন একটি রেললাইন সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছে। ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে এই প্রকল্প তৈরি হবে। ৬৯ কিলোমিটার প্রস্তাবিত নতুন এই রেল লাইন। আসামের কোকরাঝাড় শহরকে ভুটানের গেলফু শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করবে এই নয়া রেলপথ। এই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে বালাজান, গরুভাসা, রুনিখাতা, শান্তিপুর, দাদগিরি এবং গেলফু (ভুটানে) ছয়টি নতুন স্টেশনের উন্নয়ন।
এ ছাড়াও, অবকাঠামো পরিকল্পনায় দুটি স্পর্শকাতর সেতু, ২৯টি প্রধান সেতু, ৬৫টি ছোট সেতু, একটি সড়ক ওভারব্রিজ, ৩৯টি সড়ক আন্ডারব্রিজ এবং ১১ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি ভায়াডাক্ট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সমস্ত সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং বিস্তারিত প্রকল্পের জন্য আরও অনুমোদন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনার জন্য কাগজপত্র জমা দেয়া হয়েছে বলে গুয়াহাটিতে ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে সদর দপ্তরের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা কপিঞ্জল কিশোর শর্মা বলেন।
প্রস্তাবিত রেলপথটি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধির মাধ্যমে ভারত-ভুটান সম্পর্ককে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে। এটি যোগাযোগ ব্যবস্থাকেও উন্নত করবে। এ ছাড়া ভুটানকে তার প্রথম রেল যোগাযোগ প্রদান করবে। পাশাপাশি রেলপথটি আসামের বোড়োল্যান্ড অঞ্চলকে একটি বাণিজ্য ও পরিবহন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি দেবে।
উল্লেখ্য যে, ২০২৪ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ এবং ভারত নিজেদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক করতে নতুন রেলপথ তৈরির যাবতীয় উদ্যোগ নেয়। দুদেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও বৃদ্ধি করার কথাও এগোয়। জানা গিয়েছে, ১৯৮০ সালে ভারত এবং বাংলাদেশ একটি বাণিজ্যিক চুক্তি করে। সেই চুক্তি মোতাবেক এই রেললাইন করার উদ্যোগ নেয়া হয়।
বাংলাদেশের মধ্যে এই লাইন করা হলে আগরতলা তথা উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেক এলাকা থেকে কলকাতার দূরত্ব কমত। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে জানান, ওই রেললাইন হলে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ আরও উন্নত হত। এটা দুদেশের মধ্যে পর্যটন এবং ব্যবসারও উন্নতি করত।
বাংলাদেশের মধ্যে যে সব রুটে ট্রেন চালানোর কথা হয় সে সময়, সেগুলির মধ্যে বালুরঘাট থেকে মেঘালয়ের মেন্দিপাথর। এছাড়াও বাংলাদেশের বামনহাট হয়ে অসম পর্যন্ত একটি লাইন, ত্রিপুরার বেলোনিয়া থেকে চট্টগ্রাম, বিহারের ফরবেসগঞ্জ থেকে বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর রুটসহ আরও কয়েকটি অঞ্চলে। একই সঙ্গে আগরতলা থেকে দর্শনা, যশোর হয়ে কলকাতা পর্যন্ত ট্রেন চালানোর পরিকল্পনাও হয়েছিল সেই সময়। যদিও সেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি; কিন্তু ভুটানের সঙ্গে এই নতুন রেল সংযোগ নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত দুদেশই।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে