‘অস্থিতিশীলতার প্রতিবাদে’ এবার বাংলাদেশে গাড়ির যন্ত্রাংশ পাঠাচ্ছে না ভারত
‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ ও ‘চলমান অস্থিতিশীলতার’ প্রতিবাদে এবার অটো-মোটরের খুচরো যন্ত্রাংশ রপ্তানি বন্ধ রেখেছে ভারত। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এসব যন্ত্রাংশ প্রতিবেশী দেশে পাঠাবেন না রাজধানী নয়াদিল্লির কাশ্মীরি গেট পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই বিকল হয়ে যাওয়া গাড়ি, অটোরিকশা, ট্রাক, সরকারি পরিবহনসহ নানা ধরনের যানবাহন বিপাকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশে অটো-মোটরের যন্ত্রাংশের ৯৫ শতাংশ বাইরে থেকে কেনা হয়। এর ৯০ শতাংশই আমদানি হয় কাশ্মীরি গেটের বাজারটি থেকে। বাকিটা আসে চীন ও জাপান থেকে।
এশিয়ার বৃহত্তম অটো-মোটরের খুচরো যন্ত্রাংশের পাইকারি বাজার কাশ্মীরি গেট। বাংলাদেশ ছাড়াও অনেক দেশেই সেগুলো রপ্তানি হয় এখান থেকে। অনেক বিদেশি বড় সংস্থার গাড়ির যন্ত্রাংশও সুলভমূল্যে সরবরাহ করে বিশাল বাজারটি। চেম্বার অব ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সিদ্ধান্তে শুধু বাংলাদেশেই যন্ত্রাংশ রপ্তানি বন্ধ রেখেছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা।
কাশ্মীরি গেট ব্যবসায়ী সংগঠনের (সিটিআই) চেয়ারম্যান ব্রিজেশ গোয়েল বলেন, ‘বাংলাদেশের হিন্দুদের পাশে দাঁড়ানোর এটাই সময়। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এপার থেকে গাড়ির যন্ত্রাংশ বিক্রি মাস খানেক বন্ধ রাখা হবে।’
ব্রিজেশ গোয়েল নিজেও মোটর যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী। তার বক্তব্য অনুসারে, আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এসব সামগ্রী বাংলাদেশে রপ্তানি করা হবে না। তবে ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক’ না হলে সিদ্ধান্ত বদলাবেন না তারা।
সিটিআইর পরিসংখ্যান অনুসারে, মাসে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয় বাংলাদেশের সঙ্গে। ভারতের চার হাজার ১৫৫ জন রপ্তানিকারক বাংলাদেশের ৭ হাজার ৮৬৩ ব্যবসায়ীকে এসব সামগ্রী পাঠিয়ে থাকেন। সংগঠনটির চেয়ারম্যান জানান, ২০২৩-২৪ সালেই সবচেয়ে বেশি ব্যবসা হয়েছে।
কাশ্মীরি গেট অটো পার্টস ও মোটর পার্টস মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিনয় নারাং বলেন, ‘স্থানীয় যন্ত্রাংশ ছাড়াও মারুতি, হুন্ডাই, হন্ডা, টয়োটা, টাটা, শের্ভোলে, ফক্সওয়াগন বিভিন্ন বড় কোম্পানির গাড়ির যন্ত্রাংশও রপ্তানি করেন এ বাজারের প্রায় ২০ হাজার দোকানদার। আমরা সবাই মিলে ঠিক করেছি, বাংলাদেশি হিন্দুদের পাশে থাকব। কিছুদিনের জন্য লাভ কম হলেও একমাস দেখব। তারপর পরিস্থিতি বুঝে ফের সিদ্ধান্ত নেব।’
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে