Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

অভিন্ন নদীতে ভারতীয় ব্যারাজ ও ড্যামে বাংলাদেশের মরণদশা

Kamrul  Ahsan

কামরুল আহসান

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এক সময় বাংলাদেশে ছিল ১ হাজারের ওপর নদী। এখন আছে ৭০০-এর মতো। অনেক উপনদী ও শাখা-নদীও আছে। তার মধ্যে ২৩০টির মতো নদী সারা বছরই জীবিত থাকে। বাকিগুলো শীত ও গ্রীষ্মকালে শুকিয়ে যায়, নাব্য হারিয়ে ফেলে। কিছু কিছু নদী মরে যায়। বর্ষাকালে আবার জীবিত হয়ে ওঠে। বড় নদীগুলো এসেছে ভারত থেকে। ভারত ও বাংলাদেশের অভিন্ন নদী ৫৪টি। ভারতের ওপর দিয়ে বয়ে আসা সব নদীর মুখে বাঁধ, ব্যারাজ ও ড্যাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সব প্রবাহপথ বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। এদের মধ্যে রয়েছে গঙ্গা নদীর ওপর ফারাক্কা ব্যারাজ, ব্রহ্মপুত্র নদীর ওপর বাঁধ, মুহুরী নদীতে বেলুনিয়া ব্যারাজ, পিয়াই নদীর ওপর পিয়াই বাঁধ, খোয়াই নদীর ওপর শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ। এসব নদীতে বাঁধ, গ্রোয়েন নির্মাণ কিংবা স্লুইচ গেট নির্মাণসহ আরও অসংখ্য ছড়া-নদীতে বাঁধ বা স্লুইচগেট নির্মাণ করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহপথে বাধার সৃষ্টি করছে।

ভারতের আন্তর্জাতিক নদী আইন পরিপন্থি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বার বার প্রতিবাদ জানালেও তাতে তারা কোনো কর্ণপাত করেনি। ফলে ফারাক্কাসহ ওই সব বিপজ্জনক ব্যারাজ, ড্যাম ও বাঁধের প্রভাবে সারা বাংলাদেশ ক্রমেই মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। যদিও বাংলাদেশ নিজেই আন্তর্জাতিক নদী আইন মান্য করে না। তাই পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশের শিল্পকারখানা, নৌ পরিবহন, নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা, মৎস্যসম্পদ, বনজসম্পদ, জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ বিপর্যয়, জীববৈচিত্র্য ধ্বংসসহ মৃত্তিকার জলীয়তা ও লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে দেশ এক মারাত্মক সংকটের দিকে এগোচ্ছে। প্রয়োজনীয় পানিপ্রবাহের অভাবে প্রায় সব নদীর নাব্য ভীষণভাবে হ্রাস পেয়েছে। ফলে প্রতি বছর অকাল বন্যা ও প্রকট নদীভাঙনের শিকার হচ্ছে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের অধিবাসীরা। তারা সড়ক, মহাসড়ক ও রেললাইনের পাশে আশ্রয় নিচ্ছে এবং ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের ফেনী, কুমিল্লাসহ ১২টি জেলায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। এই বন্যার কারণ হিসেবে অনেকে দায়ী করছেন গোমতী নদীর ওপর ত্রিপুরার ডম্বুর বাঁধ খুলে দেয়ার কথা। তাছাড়া ফারাক্কা ব্যারাজের ১০৯টি গেট খুলে দিয়েছে ভারত। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলেও বন্যা হচ্ছে। ফারাক্কা ব্যারাজ নিয়ে বহু বছর ধরেই আলোচনা হচ্ছে; কিন্তু তার কোনো সুষ্ঠু সমাধান আজও হয়নি। বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের ভারতের তৈরি অনেক বাঁধের কথাই জানেন না। তাই ভারতের কয়েকটি বড় ব্যারাজ, ড্যাম ও বাঁধের পরিচিত তুলে ধরা হলো ‘ভিউজ বাংলাদেশ’ এর বিশেষ আয়োজনে।

ফারাক্কা ব্যারাজ
ফারাক্কা ব্যারাজকে বলা হয় বাংলাদেশের মরণফাঁদ। ১৯৬১ সালে এই ব্যারাজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়, শেষ হয় ১৯৭৫ সালে। গঙ্গা নদীর ওপর অবস্থিত এই ব্যারাজটি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় এই ব্যারাজটি অবস্থিত। ফারাক্কা ব্যারাজ ২ হাজার ২৪০ মিটার (৭ হাজার ৩৫০ ফুট) লম্বা। সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তায় ব্যারাজটি বানানো হয়েছিল প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার খরচ করে। ফারাক্কা ব্যারাজের ক্ষতিকর প্রভাব যে শুধু বাংলাদেশেই পড়েছে তা নয়, পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশপাশেও পড়েছে। এমনকি বিহারের মানুষ শাবল নিয়ে মিছিল করেছে ফারাক্কা ব্যারাজ ভেঙে দেয়ার দাবিতে। ফারাক্কা ব্যারাজের ভেঙে দেয়ার জন্য ১৯৭৬ সালে মাওলানা ভাসানী ‘ফারাক্কা লং মার্চ’ করেছিলেন। ভাসানী যখন ফারাক্কা লং মার্চের নেতৃত্ব দেন তখন তার বয়স ৯০ বছরের বেশি।

ফারাক্কা ব্যারাজ। ছবি: সংগৃহীত

ফারাক্কা ব্যারাজের কারণে বাংলাদেশের বছরে প্রত্যক্ষ ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গার পানি অপসারণের ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এতে বাংলাদেশকে কৃষি, মৎস্য, বনজ, শিল্প, নৌ পরিবহন, পানি সরবরাহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়। প্রায় ২ কোটি মানুষ সেচের পানির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ ছাড়া পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় পলি প্রবাহ কমে যায় ২০ শতাংশ। পলি প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে জমির উর্বরা শক্তি কমে যাচ্ছে। মাটির অন্যান্য রাসায়নিক শক্তিও কমে যাচ্ছে। ফারাক্কা ব্যারাজের ফলে বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলের মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ মানুষ খোলা চোখে কেবল বন্যা ও শুষ্কতা দেখে; কিন্তু ফারাক্কার ব্যারাজের কুফল খোলা চোখে দেখার চেয়েও অনেক বেশি মারাত্মক।

টিপাইমুখী বাঁধ
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১০০ কিলোমিটার উজানে ভারতের বরাক নদীর ওপর নির্মিত টিপাইমুখ বাঁধ। বাঁধটি নির্মাণ হয় ২০০৯ সাল। টিপাইমুখ নামের গ্রামে বরাক এবং তুইভাই নদীর মিলনস্থল। এই মিলনস্থলের ১ হাজার ৬০০ ফুট দূরে বরাক নদীতে ১৬২ দশমিক ৮ মিটার। অভিন্ন নদীর উজানে এই বাঁধ ভাটির বাংলাদেশের পরিবেশ আর অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে এমত আশঙ্কা করেন বিশেষজ্ঞরা৷ বাংলাদেশের আরেক বৃহৎ নদী মেঘনার জন্য এই বাঁধ হুমকিস্বরূপ।

টিপাইমুখী বাঁধ। ছবি: সংগৃহীত

মূলত জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। এতে ভারতেও ক্ষতি হয়েছে। বাঁধের কারণে সৃষ্ট জলাধারের ফলে প্লাবিত এলাকার প্রায় ৩০০ বর্গকিলোমিটার, যার প্রায় ৯৫ শতাংশ মণিপুর ও ৫ শতাংশ মিজোরাম রাজ্যের। টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের ফলে ভারতের কিছু ক্ষতি হলেও কিছু লাভ হয়েছে; কিন্তু বাংলাদেশের পুরোটাই ক্ষতি। এই বাঁধের কারণে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর জল প্রবাহ কমে গেছে, নাব্য হ্রাস পাবে। মৎস্য, কৃষি, জীব-বৈচিত্র্যসহ নদীকেন্দ্রিক সবকিছুতেই এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।

গজলডোবা ব্যারাজ

তিস্তা নদী বাংলাদেশের উত্তরাংশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। হিমালয় থেকে উৎপন্ন হয়ে সিকিম দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য ভারত দিয়েছে গজলডোবা ব্যারাজ। এ ব্যারাজের কারণে তিস্তা নদীও পদ্মার ভাগ্যই বরণ করে নিতে বসেছে। পদ্মার মতো শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার বুকজুড়ে শুধু ধু ধু বালুচর, আর বর্ষায় প্রলয়ংকরী বন্যা। তিস্তা নদীর উজানে ভারতীয় অংশে গজলডোবা ব্যারাজ স্থাপিত হয় ১৯৯৮ সালে।। গজলডোবা ব্যারাজের মাধ্যমে তিস্তা নদীর নিয়ন্ত্রণ ভারতের হাতে চলে যায়। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে তিস্তা নদীর বাংলাদেশ সীমান্তের ৬০ কিলোমিটার উজানে ভারত সরকার এই ব্যারাজ নির্মাণ করে। এই ব্যারাজে ৫৪টি গেট রয়েছে। দরকারের সময় গেটগুলো বন্ধ করে দিয়ে ভারত সব পানি নিজের প্রয়োজনে নিয়ে নেয়। গ্রীষ্মকালে তাই বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বিশাল অঞ্চল পানির অভাবে খাঁ-খাঁ করে। তিস্তার প্রবাহ এখন শতকরা ১০ ভাগেরও নিচে নেমে এসেছে। ফলে বাংলাদেশে তিস্তার বিস্তীর্ণ সীমানাজুড়ে দেখা দিয়েছে চর।

গজলডোবা ব্যারাজ। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানত তিস্তার পানি তিস্তা-মহানন্দা খালে পুনর্বাহিত করার উদ্দেশ্য নিয়েই এই ব্যারাজ স্থাপন করা হয়। ২ হাজার ৯১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা-মহানন্দা খালের মাধ্যমে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার ও মালদহ জেলায় সেচের পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। গজলডোবা ব্যারাজ দিয়ে যেভাবে একতরফা পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে, তা স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। তিস্তা এখন দ্রুত মরে যাচ্ছে। তিস্তার পর্যাপ্ত পানির সংস্থান নেই। উজান থেকে বেপরোয়া পানি সরিয়ে নেয়ার কারণে শুকনো মৌসুমে তিস্তার পানি এমন তলানিতে এসে ঠেকেছে যে, এ পানিতে ক্ষেতে সেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিস্তার পানি এখন সম্পূর্ণ ভারতের নিয়ন্ত্রণে। তিস্তার পানি সরিয়ে নিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করছে। এতে তিস্তাপাড়ে প্রতি বছর বন্যা ও খরা দেখা দেয়। বর্ষায় তিস্তার পানি ছেড়ে দেয়ার কারণে বাংলাদেশ অংশে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দেয়। গজলডোবা ব্যারাজের প্রভাবে উত্তরাঞ্চলের ৩টি প্রধান নদী-আত্রাই, করতোয়া, পুনর্ভবা শীর্ণ খালে পরিণত হয়েছে। তিস্তার দুটি শাখা নদী বাঙালি ও ঘাট ইতোমধ্যেই শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে। নীলফামারীর ৩০টি ছোট-বড় নদী মরে যাচ্ছে।

মহানন্দা বাঁধ
মহানন্দা ভারত ও বাংলাদেশের একটি আন্তর্জাতিক নদী। এর উৎপত্তিস্থল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিং জেলার অংশে হিমালয় পর্বতে। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি বাংলাদেশে প্রবেশ করে আবার পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলায় প্রবেশ করেছে, পরে আবার বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে প্রবেশ করে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পদ্মা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। বৃষ্টির পানি এই নদীর প্রবাহের প্রধান উৎস। বাংলাদেশের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত মহানন্দা নদীর অংশটির দৈর্ঘ্য ৩৬ কিলোমিটার। বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া সীমান্তের বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টের পশ্চিম-উত্তর কোণে মহানন্দা নদীর ওপর বিশাল এক বাঁধ নির্মাণ করেছে ভারত।

মহানন্দা বাঁধ । ছবি: সংগৃহীত

১৯৭৯-৮০ সালে ‘তিস্তা-মহানন্দা প্রকল্প’র আওতায় ‘ফুলবাড়ী ব্যারাজ’ নামে খ্যাত এই বাঁধটি তৈরি করে তারা। এই ব্যারাজের মাধ্যমে ভারত একদিকে তিনটি ইউনিটে সাড়ে ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, অন্যদিকে ৬৭৫ বর্গকিলোমিটার এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ করছে। সেই সঙ্গে প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে ফিডার ক্যানেলের সাহায্যে পানি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার রাজ্যের বিভিন্ন স্থানের সেচ কাজ করছে। বিপরীতে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকার ভূগর্ভস্থ পানি নিচে নেমে যাওয়ার কারণে সেচ কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। বাঁধের মাধ্যমে পানি আটকে রাখায় শুষ্ক মৌসুমে জেলার নদনদীগুলোকে মরা নদীতে পরিণত করছে। এক সময় মহানন্দার ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকত ছোটবড় আরও কিছু নদী; কিন্তু মহানন্দা বাঁধের কারণে আজ সবই মরতে বসেছে। ভারতের বৈরী আচরণে মহানন্দা নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। এই নদীর ওপর নির্ভরশীল হাজার হাজার মানুষ জীবিকা হারিয়েছে। বর্ষাকালে বাঁধের পানি ছেড়ে দেয়ার কারণে দুকূল ছাপিয়ে প্রতি বছরই বন্যা হয় মহানন্দার দুপাড়ে।

ডম্বুর ড্যাম
সম্প্রতি কুমিল্লা অঞ্চলে বন্যা হওয়ার কারণে ডম্বুর ড্যামের কথা ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসছে। কুমিল্লার দুঃখ হিসেবে পরিচিত ত্রিপুরা জেলায় গোমতী নদীর ওপর ডম্বুর ড্যাম। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে সড়ক পথে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরের ডম্বুর হ্রদ। বহু ছড়া এই হ্রদে এসে মিশেছে। সেখান থেকেই গোমতী নদীর উৎপত্তি। ত্রিপুরার বেশিরভাগ নদী বা ছড়ার মতোই এই গোমতীও স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের দিকে বয়ে গেছে। ডম্বুর হ্রদের কাছে একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে ভারত। গোমতী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ডম্বুর স্লুইস গেট খুলে দেওয়ার ফলে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ব্যাপক বন্যা হয়েছে বলে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। যদিও ত্রিপুরা রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথমন্ত্রী এ নিয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। গোমতী এক সময় ছিল বেশ খরস্রোতা নদী। শুষ্ক মৌসুমে নদীটি এতটা শুকিয়ে যায় যে অনেক জায়গা দিয়ে হেঁটেই পার হওয়া যায়। বর্ষায় নদীটি ফুলেফেঁপে ওঠে। এবার খুব ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছিল। ২২ আগস্ট রাতে বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নে বাঁধ ভেঙে বিশাল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কয়েকশ গ্রামে দেখা দিয়েছে বন্যা।

ডম্বুর ড্যাম । ছবি: সংগৃহীত

পরিশেষে এটুকুই বলা যায়, ভারতের সঙ্গে আমরা যদি আমরা যদি আমাদের পানির ন্যায্য অধিকার নিয়ে কথা না বলতে পারি, এই বাঁধগুলোর সুরাহা না করতে পারি, তাহলে যুগ যুগ ধরে কেবল বঞ্চনার শিকার হব। শুধু বঞ্চনা না, তা হবে অনেক মৃত্যুর কারণ। এই বাঁধগুলোর ক্ষতির মাত্রার কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। অভিন্ন নদীগুলোতে বাঁধ দিয়ে ভারত আমাদের এক মরণফাঁদে ফেলেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশকেও নদীর ঐতিহাসিক অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক নদী আইন মেনে চলতে হবে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ