ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে পেট্রাপোলের শ্রমিক ও ছোট ব্যবসায়ীরা
ভারতের নতুন আমদানি নির্দেশনার ফলে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল স্থলবন্দরে। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ভারতের আমদানি পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা হঠাৎ করেই অনেকটা কমে গেছে, এতে বিপাকে ফেলেছে বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হাজারো শ্রমিক, খালাসি ও ছোট ব্যবসায়ীদের।
জানা গেছে, সাধারণত প্রতিদিন বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দর থেকে ২০০ থেকে ২২৫টি ট্রাক পণ্য নিয়ে পেট্রাপোলে প্রবেশ করে। কিন্তু গত রোববার সেই সংখ্যা নেমে দাঁড়ায় মাত্র ৪৫টিতে। তার আগের দিন শনিবার ট্রাকের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫০। সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে গার্মেন্টস পণ্যে, যা প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৮০টি ট্রাকে ঢুকত এবং উৎসবের সময় সেই সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়ে যেত। বর্তমানে সেই আমদানি কার্যত বন্ধ হওয়ার মুখে।
এই পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্টরা দায়ী করছেন ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য দপ্তরের সাম্প্রতিক নির্দেশিকাকে। নতুন এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গার্মেন্টস, ফল, কাঠের আসবাবের মতো পণ্য স্থলপথে আমদানি করা যাবে না—এসব পণ্য এখন থেকে শুধু সমুদ্রপথে আনা যাবে।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘বাংলাদেশের রপ্তানি আগের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে, কিন্তু ভারতের আমদানিতে ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত ছোট আমদানিকারকদের কার্যত দুর্দশায় ফেলেছে।’
পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মীর আব্দুল হাসেম বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞায় বড় শিল্পগোষ্ঠীর লাভ হলেও সীমান্ত এলাকার ছোট আমদানিকারকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তাদের পক্ষে সমুদ্রপথে পণ্য আমদানি করা আর্থিকভাবে সম্ভব নয়।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন নির্দেশনার ফলে পেট্রাপোল অঞ্চলের কয়েক হাজার শ্রমিক, খালাসি, ছোট ট্রান্সপোর্ট সংস্থা এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উপার্জনের উপর সরাসরি চাপ পড়বে। পাশাপাশি, সীমান্ত বাণিজ্যের এমন বিধিনিষেধ ভারত-বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে