Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

কৃত্রিম হাত-পা নিয়েই এভারেস্ট বেস ক্যাম্প অভিযান ভারতীয় যুবকের

 VB  Desk

ভিবি ডেস্ক

শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

র্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় হারিয়ে ফেলেন শরীরের তিনটি অঙ্গ (triple amputee), ব্যবহার করতে হয় কৃত্রিম অঙ্গ। কিন্তু এসব শারীরিক কোনও বাধাই দাবিয়ে রাখতে পারেনি ভারতের গোয়ার ৩০ বছরের তিনকেশ কৌশিককে। বিশ্বের প্রথম বিশেষভাবে সক্ষম মানুষ হিসেবে মাউন্ট এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে পৌঁছে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।

ভারতের হরিয়ানায় ১৯৯৩ সালের ২১ জুন জন্ম হয় তিনকেশের। তিনি শরীরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হারান যখন তাঁর বয়স মাত্র ৯ বছর। এক দুর্ঘটনায় তাঁর একটি হাত ও হাটুর নিচ থেকে দুটি পা সম্পূর্ণভাবে কেটে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনকেশ কখনোই অন্যদের চোখে নিজেকে সহানুভূতির নজরে ফেলতে দেননি। প্রবল মনের জোর আর সাহস ছিল তাঁর সম্পদ, মা-বাবাও প্রতিটি পদক্ষেপে জোরালোভাবে সমর্থন করেছিলেন তাঁকে।

সেই সাহস নিয়ে তিনকেশ আবার স্কুলে যেতে শুরু করেন এবং পড়াশোনা শেষ করেন। তিনি নিজেকে কখনো কারো থেকে কম মনে করেননি। জীবন অবশ্যই কঠিন ছিল, তবে জীবনকে আরও অর্থবহ করতে প্রতিদিন তিনি পরিশ্রম করে যাচ্ছিলেন। একইসঙ্গে সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। সেই ধারাবাহিকতায় কৃত্রিম হাত ও পা নিয়েই তিনি জিমে যেতে এবং নিয়মিত দৌড়াতে শুরু করেছিলেন।

তাঁর এই অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর কঠিন অধ্যবসায় বৃথা যায়নি। কৃত্রিম অঙ্গ ব্যবহার করেই অবিশ্বাস্যভাবে পাহাড়জয়ের স্বপ্ন পূরণ করেছেন তিনি। গত ১১ মে তিনকেশ কৌশিক সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭,৫৯৮ ফুট উপরে অবস্থিত মাউন্ট এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে বিশ্বের প্রথম ট্রিপল অ্যাম্পুটি হয়ে উঠেছেন। শক্তি হোক বা অনুপ্রেরণা, তাঁর সাহস ও কৃতিত্বের তুলনায় যেকোনো শব্দই যেন কম পড়ে।

দুনিয়াকে হতবাক করে দেওয়া বিশাল এই অর্জনের পর তিনকেশ নিজের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এই মুহূর্তটি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না, এটি কেবল অনুভব করা যায়। আমি এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে ট্রেকিংয়ের চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করেছি। ৯০% লোকোমোটর অক্ষমতাসহ এই কৃতিত্ব অর্জন করলাম, সেটাও প্রথম ট্রিপল অ্যাম্পুটি হিসেবে। এটা আমার জন্য খুবই আবেগঘন মুহূর্ত ছিল। আমি নিজের জন্য এটা করেছি। যারা আমাকে এখানে পৌঁছানোর জন্য সমর্থন করেছেন, আমি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”

প্রসঙ্গত, বছর কয়েক আগে থেকেই গোয়াতে ফিটনেস কোচ হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। বর্তমানে সেখানে ‘তিনকেশ অ্যাবিলিটি ফাউন্ডেশন’ নামে নিজস্ব সংস্থা চালাচ্ছেন; এবং অন্যদের জীবনেও অসীম সাহস ও অনুপ্রেরণা বিলিয়ে যাচ্ছেন তিনকেশ কৌশিক।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ