অবশেষে নতুন ঠিকানা পেল সড়ক দুর্ঘটনায় মা হারানো সেই শিশুটি
ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মায়ের বেঁচে যাওয়া শিশুপুত্র জায়েদ হাসানকে অবশেষে এক দম্পতির কাছে দত্তক হিসেবে হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যাবতীয় প্রক্রিয়া এবং নিয়ম-নীতি মেনে সোমবার (২০ মে) রাতে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হয়। তবে শিশুটিকে হস্তান্তরের ব্যাপারে হাইকোর্টের নির্দেশনা ছিল। এ জন্য কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।
শিশুটির মামা রবিন মিয়া প্রথমে ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে পারিবারিক আর্থিক অভাব-অনটনের কথা বিবেচনা করে শিশুটির দায়িত্ব জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের ওপর ছেড়ে দেন তিনি। পরে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড শিশুটিকে দত্ত্বক দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে আগ্রহী দম্পতিদের কাছ থেকে দরখাস্ত চায়। এরপর ১০টি আবেদন শিশু কল্যাণ বোর্ডের কাছে জমা পড়ে। সেগুলো থেকে যাচাই-বাছাই করে সবচেয়ে যোগ্য বিবেচনায় এক দম্পতির কাছে শিশুটিকে দত্তক দেয়া হয়েছে।
শিশুটির মামা রবিন মিয়া বলেন, আমার তিন সন্তানের পাশাপাশি তাকে লালনপালন করাটা অনেক কষ্টসাধ্য আমার জন্য। সেজন্য ভাগ্নের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দত্তকের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে ভালো একটি পরিবারে যাচ্ছে, উন্নত জীবন কাটাবে, শিক্ষাদীক্ষায় বড় হবে-এই প্রত্যাশা করি।
এ ব্যাপারে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের ময়মনসিংহের উপ-পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম জানান, নিজের অসামর্থের কথা উল্লেখ করে দত্তকের বিষয়ে শিশুটির মামা রবিন মিয়া বোর্ডের কাছে একটি অনাপত্তিপত্র প্রদান করেন। এরপর রবিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় যাচাই-বাছাই শেষে এক নিঃসন্তান ধনাঢ্য পরিবারের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। শিশুটির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সেই পরিবারটি সম্পর্কে তিনি কিছু জানাতে চাননি।
উল্লেখ্য, গত ১০ মে রাত ৩টার দিকে স্কয়ার মাস্টার বাড়ি এলাকায় ওই শিশু ও তার মা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। তবে কীভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা এখনও জানা যায়নি। পরে এক নারী ও তিন পুরুষ ওই শিশু ও তার মাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। পর দিন সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মা জায়েদা খাতুন মারা যান। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, সমাজসেবা অধিদপ্তর এবং পুলিশ প্রশাসনের যৌথ তদারকিতে আহত শিশুটি চিকিৎসাধীন ছিল। সড়ক দুর্ঘটনায় মাথা ও শরীরে আঘাত পেয়েছিল শিশুটি।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে