Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

মাদক নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সততা চাই

Editorial  Desk

সম্পাদকীয় ডেস্ক

সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

মাদক একটি দেশজাতি নষ্টের প্রধান হাতিয়ার। দেশের তরুণসমাজকে ধ্বংসের দিকে যায় মাদকদ্রব্য। মাদক ব্যবহারের ফলে শুধু যে স্বাস্থ্য হুমকির মধ্যে পড়ে, তা নয়। অনেক আইনশৃঙ্খলারও বিঘ্ন ঘটে। সমাজে নানা ধরনের অপরাধ বাড়ে। দেশকে মাদকমুক্ত রাখতে সরকার তাই জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৫ জানুয়ারি এক সরকারি আদেশের মাধ্যমে মদ, জুয়া, হাউজি, ঘোড়দৌড় নিষিদ্ধ করেছিলেন। এমনকি তিনি সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদে উল্লেখ করেছেন, ‘জনগণের পুষ্টির স্তর -উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনকে রাষ্ট্র অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য বলিয়া গণ্য করিবেন এবং বিশেষত আরোগ্যের প্রয়োজন কিংবা আইনের দ্বারা নির্দিষ্ট অন্যবিধ প্রয়োজন ব্যতীত মদ্য ও অন্যান্য মাদকপানীয় এবং জনস্বাস্থ্য হানিকর ভেষজের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’

জাতির পিতা শেখ মুজিবের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার মাদকের আগ্রাসন থেকে দেশের জনগণ তথা যুবসমাজকে অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য নানা ধরনের বাস্তবমুখী এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে আধুনিকায়ন করে প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেছেন। এই ধারাবাহিকতায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ সংশোধন করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন, ২০২০ প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই আইনের আওতায় বিভিন্ন বিধিমালা ও নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলায় অধিদপ্তরের নিজস্ব প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, মাদক নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই অসাধুতা ও অসততার পচিয় দিচ্ছে। গতকাল রোববার (৭ জুলাই) পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, রাজধানীর মিরপুরের একটি আবাসিক হোটেলে মাদক কারবারিকে আটকে রেখে ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা আদায় করে ছেড়ে দিয়েছেন বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কয়েকজন সদস্য। গত ১২ মে ঘটনাটি ঘটেছে মিরপুর-২ নম্বরের বড়বাগ এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যদি নিজেরাই আইন ভঙ্গ করে তাহলে সেই আইন রক্ষা করা কঠিন। বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই মাদক কারবারির কাছ থেকে আদায় করা টাকার পুরোটাই ফেরত দিয়েছেন ডিবি পুলিশের সদস্যরা। তবে ঘটনার দেড় মাস পরও জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

আরও উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, টাকা আদায় করে মাদক কারবারিকে ছেড়ে দেয়ার ঘটনাকে ‘সামান্য অপরাধ’ বলছেন ডিবির কর্মকর্তারা। এটা যদি সামান্য অপরাধ হয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতি কীভাবে রক্ষা হবে? কীভাবে গড়ে উঠবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন দেখা মাদকমুক্ত সোনার বাংলাদেশ?

ডিবি কর্মকর্তাদের এই অপরাধকে বড় অপরাধ হিসেবে দেখে তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি আমরা। তা না-হলে এ ধরনের অপরাধ বাড়তেই থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সততা ও পেশাদারিত্ব ছাড়া দেশকে মাদকমুক্ত করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ