Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল

District Correspondent

জেলা প্রতিনিধি

শনিবার, ৪ মে ২০২৪

তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো। গত কয়েকদিনে এসব জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড ৪৩ থেকে ৪৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাম্প্রতিক সময়ে এটাই দেশের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রার রেকর্ড।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। আগামী দিনগুলোয় সারাদেশে আরও গরম পড়তে পারে। বাড়তে পারে তাপমাত্রার পারদ।

গত শুক্রবার যশোরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। দাবদাহের কারণে স্থানীয় প্রশাসন মানুষকে দিনের উষ্ণতম সময়ে বাড়ির বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়।

এ ছাড়াও খুলনা, সাতীরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে খরতাপে মারাত্মক ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ মানুষের। তীব্র গরমে গত সোমবার নড়াইলের লোহাগড়ার ইতনা হাই স্কুলের ১৫ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়ভাবে তাদেরকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়।
এদিকে তীব্র তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে যশোরসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে মাছের রেনু পোনার উৎপাদন। অন্যদিকে অত্যাধিক তাপমাত্রার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার দিনমজুর শ্রমিক রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইকচালক।

এ পরিস্থিতিতে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল এবং নওয়াপাড়ায় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

বৈশাখের তীব্র গরমে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে রোগী সংখ্যা বেড়ে বর্তমানে ১ হাজার ১৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছে।

এ ছাড়াও চলমান তাপপ্রবাহে সবজি জাতীয় ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। আম, কাঠাল, লিচু এবং ড্রাগন ফলের ফুল-ফল ঝরে যাচ্ছে।
এমতাবস্থায় তীব্র পানির সংকট বিরাজ করছে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারণে যশোরসহ গোটা দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলে পানির সংকট দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব জেলার অধিকাংশ অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না। ডিপ টিউবওয়েল ও সাব মার্সিবলে পানি ওঠার মাত্রাও কমে গেছে বহুগুনে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৈশাখের শুরু থেকেই সারাদেশে তাপদাহ শুরু হয়। এখন গরম তীব্র থেকে অতি-তীব্র আকার ধারণ করছে। গত শুক্রবার যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

অতিরিক্ত গরমে সড়ক-মহাসড়কের বিটুমিন (পিচ) গলে যেতে দেখা গেছে। গরমে পিচ গলে যাওয়ায় ঝুঁকি বাড়ছে দুর্ঘটনার। যশোর-নড়াইল, যশোর-ঝিনাইদহ ও যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের কিছু কিছু স্থানে তাপপ্রবাহের কারণে বিটুমিন গলে যাওয়ায় সড়কের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাস্তায় যানবাহনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত সড়কে যে পিচ ব্যবহার করা হয় তা ৬০-৭০ গ্রেডের। এর গলনাঙ্ক ৪৮ থেকে ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অর্থাৎ তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে পিচ গলার কথা। কিন্তু তার অনেক আগেই পিচ গলে যাচ্ছে।

বিসিক ঝুমঝুমপুর এলাকা ব্যবসায়ী কাউসার আলী জানান, রাস্তায় হাঁটতে গেলে জুতা-স্যান্ডেল পিচে আটকে যাচ্ছে। দু-একজন পিচ থেকে তুলতে না পেরে স্যান্ডেল রেখেই চলে যাচ্ছেন। গাড়ির চাকার চাপায় তা রাস্তার পিচের সঙ্গেই আটকে থাকছে।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, যশোর-নড়াইল ও যশোর-খুলনা সড়কের যেসব স্থানে বিটুমিনের পরিমাণ বেশি পড়েছে, প্রচণ্ড গরমে সেসব জায়গার রাস্তা গলে যাচ্ছে। এজন্য সড়কের গলে যাওয়া স্থানে বালি ও নুড়ি পাথর দেয়া হচ্ছে। যেন গলে যাওয়া পিচ আগের অবস্থায় থাকে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ