প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভয় দেখাচ্ছেন, নাকি সত্যি?
সবেমাত্র ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এরই মধ্যে তিনি তার ক্ষমতাবলে বহু আদেশ দিয়ে এবং আগামীতে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ইচ্ছা ব্যক্ত করে বিশ্বব্যাপী অনেকের পিলে চমকে দিয়েছেন। রীতিমতো হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। ইতোমধ্যেই তিনি এতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা অনেকের কাছেই স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে না। বিগত দিনে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব গ্রহণ করেই এভাবে এতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি; অন্য দেশকে হুমকি দেননি। সমালোচকরা কেউ কেউ তাকে উগ্র জাতীয়তাবাদী হিসেবে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তার অতি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেয়া এবং গাজার অধিবাসীদের অন্যত্র স্থানান্তরিত করা, কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্যে পরিণত করা, যার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে একাধিকবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘গভর্নর’ বলে উল্লেখ করেছেন; পরবর্তীতে কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের ওপর উচ্চহারে ট্যারিফ ধার্য করা, ইউএসএইড বন্ধ করে দেয়া, অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডিপোর্ট করা, ডেনমার্কের কাছ থেকে গ্রিনল্যান্ড নিয়ে নেয়া, পানামা ক্যানেলের দখল পুনরুদ্ধার করা, ইউক্রেনের খনিজসম্পদের বিনিময়ে সামরিক সাহায্য দেয়া এবং সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের গোয়েন্দা তথ্যে প্রবেশের অধিকার বন্ধ করাসহ আরও অনেকগুলো বিষয়।
কোনো কোনো বিষয়ে ট্রাম্প তার বিবৃতি বা অভিপ্রায় থেকে সরে এলেও কয়েকটি বিষয়ে তিনি যে সরে আসবেন তার কোনো নিশ্চয়তা নেই এবং সেটা বিশ্ব রাজনীতিকে কোথায় নিয়ে যাবে তাও এখন অনিশ্চিত। বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ এবং কয়েকটি দেশের স্বার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকির শামিল। অন্যদিকে বিষয়গুলো বাকি বিশ্বের কাছে বিস্ময়কর এবং অগ্রহণযোগ্য মনে হলেও যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষের কাছে সেটা নাও হতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এসব দৃষ্টিভঙ্গি জেনেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা তাকে, তার দলকে (কংগ্রেস ও সিনেটে) সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে ভোট দিয়ে হোয়াইট হাউসে পাঠিয়েছে। ট্রাম্প যে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ বলে বহুদিন ধরে সোচ্চার রয়েছেন, তা বাস্তবায়ন করতে হলে তাকে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিতে হবে যা বাকি বিশ্বের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত মনে হতে পারে।
তার নেয়া গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিষয়গুলোর মধ্যে প্রথমেই গাজা উপত্যকার বিষয়টির দিকে নজর দেয়া যাক। গাজা নিয়ে তিনি এমন একটি ভয়ানক সিদ্ধান্ত কেন নিলেন? একটা বিষয় ট্রাম্পের সমর্থক-সমালোচক সবার কাছে পরিষ্কার। তিনি যা ভাবেন এবং ইচ্ছা করেন তা নিয়ে কোনো ভনিতা করেন না। অকপট। বহু আগে থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে ইসরায়েল তথা প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সমর্থক। অবশ্য রাষ্ট্রীয়ভাবে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের অস্তিত্ব ও সামরিক বিজয়ের সমর্থক; কিন্তু ডেমোক্র্যাটরা ইসরায়েলকে মুক্তভাবে সবকিছু করার লাইসেন্স দেয়নি। তারা ইসরায়েলকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে এবং ইরান ব্যতীত গোটা মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে একটি ভারসাম্য রাখতে চেয়েছে। এ নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে ডেমোক্র্যাট প্রশাসনের অনেকবার শীতল সম্পর্কও দেখা গেছে; কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান ইসরায়েল ও প্যালেস্টাইন প্রশ্নে যথেষ্টই খোলামেলা। তিনি প্রথম দফায় ক্ষমতায় এসে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। এটি ডেমোক্র্যাটরা দেয়নি। এমনকি তার দলের পূর্বসূরিরাও না।
এবার তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেয়ার যে পরিকল্পনার কথা বলছেন, তা থেকে সরে আসবেন বলে মনে হয় না। যদিও মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে ইউরোপের বড় দেশগুলো এমনকি জাতিসংঘও ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে; কিন্তু কে কতটা নিজেদের সিদ্ধান্তে টিকে থাকতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে। আরব বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোর মধ্যে মিসর, জর্দান এবং সৌদি আরব বিশেষভাবে যুক্তরাষ্ট্রঘেঁষা। মিসরের সেনাবাহিনীকে বড় দরের সাহায্য দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট আল সিসি টিকেই আছেন যুক্তরাষ্ট্রের বদৌলতে। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করা মিসরের পক্ষে সম্ভব নয়। সৌদি আরবের সামরিক নিরাপত্তা বিশেষভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। দ্বিতীয়ত, সৌদি আরবের সর্বময় ক্ষমতার কেন্দ্রে রয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তার সঙ্গে রয়েছে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। সুতরাং ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ তার দ্বারা কতটা রক্ষা হবে সেটা এখনই বলা যায় না। অন্যদিকে জর্দানে রয়েছে বিশালসংখ্যক ফিলিস্তিনি এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থক। তাদের অধিকাংশই জর্দানের বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহবিরোধী। অন্যদিকে রাষ্ট্র হিসেবে জর্দান সামরিক সহায়তায় এবং আর্থিক সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের মুখাপেক্ষী। গাজাকে যুক্তরাষ্ট্রের করায়ত্ব করার ব্যাপারে জর্দান ‘না’ বললেও সেটা কতটা কার্যকর হবে তা নিশ্চিত না।
জর্দান জেরুজালেমকে রাজধানী করার সময়ও প্রতিবাদ জানিয়েছিল; কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সেটা খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি। ২০১৬ থেকে ২০ সাল পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক কিছুটা অবনতি হলেও আবার বাইডেন ক্ষমতায় এলে তা ঠিক হয়ে যায়। বাইডেন প্রশাসন কিন্তু ক্ষমতায় এসে জেরুজালেমকে রাজধানী করার স্বীকৃতি তুলে নেননি। সেটা জর্দানকে মেনে নিতে হয়েছে। এখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজার জনগণকে স্থানান্তরের ব্যাপারে বিভিন্ন স্থানের নামোল্লেখ করলেও এটা পরিষ্কার যে তিনি একটি উপযুক্ত জায়গা সন্ধান করছেন, কোথায় তাদের স্থানান্তর করা যায়। ট্রাম্প নেতানিয়াহুর এতটাই সমর্থক যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসির ওপর নির্বাহী আদেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। তিনি এই সংগঠনকে অবৈধ ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ্য, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আইসিসি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এখন এই সংগঠনটিই হুমকির মধ্যে পড়েছে।
আরেকটি বিষয় হলো গ্রিনল্যান্ড। গ্রিনল্যান্ড পূর্বে সরাসরি ডেনমার্কের অধীনে থাকলেও এখন তা ডেনমার্কের অটোনোমাস টেরিটরি। প্রথম দফা প্রেসিডেন্ট থাকতেই ২০১৯ সালে ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডকে অ্যাকুয়ার করে নেয়ার কথা বলেছিলেন। অর্থাৎ ডেনমার্কের কাছ থেকে কিনে নেবেন; কিন্তু ততদিনে তার নির্বাচন চলে আসে এবং তা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরেন। এবার হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেই তার পুরোনো ইচ্ছাকে জোরালো করেছেন। প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করারও হুমকি দিয়েছেন। এটি অস্বাভাবিক না কয়েকটি কারণে। যুক্তরাষ্ট্রের এই কিনে নেয়ার প্রচলন আছে দীর্ঘকাল ধরেই। ১৮০৩ সালে তারা লউসিয়ানা অঙ্গরাজ্য কিনে নেয় ফ্রান্সের কাছ থেকে, ১৮৬৭ সালে আলাস্কা কিনে নেয় রাশিয়ার কাছ থেকে। এমনকি ক্যালিফোর্নিয়া, উটাহ, নেভাদা এবং অ্যারিজোনাও তারা কিনে নেয় মেক্সিকোর কাছ থেকে। প্রায় নির্জন গ্রিনল্যান্ডের খনিজসম্পদ বা জায়গাই নয়, ট্রাম্প মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থেই গ্রিনল্যান্ড তাদের প্রয়োজন। গ্রিনল্যান্ডের উপকূলে অর্থাৎ আর্কটিক অঞ্চলে রাশিয়া এবং চীনের বাণিজ্যিক উপস্থিতি বাড়ছেই। অ্যামেরিকা ফার্স্ট প্রবক্তা ট্রাম্প এ ব্যাপারে আপস করবেন বলে মনে হয় না। ডেনমার্ককে অদূর ভবিষ্যতে এমন চাপ দেবেন যা হজম করা ডেনমার্ক তথা ইউরোপের জন্য মুশকিল হয়ে যাবে। এমনিতেই ডোনাল্ড ট্রাম্প ন্যাটো ভেঙে দেয়ার অথবা ন্যাটোতে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান কমিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। অন্যদিকে বিশাল এই ভূখণ্ডে মাত্র ৫৭ হাজার বরফাচ্ছাদিত মানুষের বসবাস। তাদের একটি অংশ কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত হওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানাচ্ছে না। এখন দেখার বিষয় ট্রাম্প কি সত্যিই গ্রিনল্যান্ড পুরো দখলে নিতে চান, নাকি ডেনমার্ককে বাধ্য করতে চান বিশেষ করে চীনের জাহাজগুলোর চলাচল ও বাণিজ্য কমিয়ে দিতে?
ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি বহু দেশকে অসন্তোষ্ট করেছে। তিনি ক্ষমতাগ্রহণ করেই এই কয়েকদিনের মধ্যে দেশব্যাপী অবৈধ অভিবাসীদের ধড়পাকড়ের নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিমানে করে বিভিন্ন দেশে পাঠাতে শুরু করেছেন। এমনকি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও কাগজপত্র পরীক্ষা করে বিভিন্ন দেশের মানুষকে স্ব-স্ব দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায় একের পর এক প্রতিবাদ মিছিল চলছে। মানবাধিকার কর্মী ও অভিবাসন আইনজীবীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন; কিন্তু ট্রাম্প অনড়। বাইডেন প্রশাসনের সময় মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে রেকর্ডসংখ্যক মানুষ প্রবেশ করেছে বলে তার দাবি।
যুক্তরাষ্ট্র একটি অভিবাসনের দেশ। এমনকি বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের প্রায় সবার শেকড় ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা এবং এশিয়া-আফ্রিকা। তাই বহু দেশ বিষয়টিকে মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে নেতিবাচক বলে মনে করছে; কিন্তু সত্য হলো, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে খুব অযৌক্তিক বলে বিবেচনা করা যায় না। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশে অবৈধভাবে থাকার সুযোগ থাকা কি উচিত? যাদের ৫, ১০ বা ২০ বছর পার হয়ে গিয়েছে তারা বৈধ হননি কেন? যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ হতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনেক পয়সা খরচ করতে হয়। সেটা করতে না চেয়ে অসংখ্য লোক অবৈধ হয়ে গিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপত্তা বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। আর সেই নিরাপত্তার নিশ্চিতে বৈধ কাগজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টি অভিবাসন প্রত্যাশীদের মাথায় থাকা দরকার ছিল।
ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর শুল্কহার বসিয়েছেন। বিশেষ করে চীন, কানাডা, মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতে শুল্ক বসানো বড় ধরনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তগুলো বিশেষ করে অর্থনীতিতে ব্যাকফায়ার করতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ট্রাম্প সিদ্ধান্তগুলো অতি দ্রুত নিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। যে কারণে তিনি কানাডাসহ কয়েকটি দেশের ওপর ট্যারিফ ধার্য করার সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। কানাডার ওপর ট্যারিফ ৪ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত হয়েছে; কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো যুক্তরাষ্ট্রের থেকে অশনিসংকেত পেয়ে ইউরোপ ভ্রমণে গিয়েছেন। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রান্স-আটলান্টিক সহযোগিতা এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই বিষয়ে সফর করলেও, এই সফরের পেছনে আছে ট্রাম্পকে কানাডা ও ইউরোপের একসঙ্গে মোকাবিলার আলোচনা। কারণ ইউরোপ ভীষণভাবে আতঙ্কিত হয়ে আছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হিসাব হলো, অধিক অর্থ খরচ করে যুক্তরাষ্ট্র কেন ইউরোপীয় দেশগুলোর নিরাপত্তা প্রহরী হবে। তিনি ন্যাটোর বাজেট বৃদ্ধি করতে ইউরোপীয় দেশগুলোকে চাপ দিয়েছেন। এমনকি একাধিকবার ন্যাটো ভেঙে দেয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন যা ইউরোপকে আশঙ্কার মধ্যে ফেলেছে। আতঙ্কের আরেক কারণ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত মিত্রতা। তাই কানাডা এবং ইউরোপের একটি কমন ইন্টারেস্ট তৈরি হয়েছে।
সামনের দিনগুলোতে পরিণতি যাই হোক, ট্রাম্পের কয়েকটি কঠোর নীতি চালু থাকবে এটা নিশ্চিত। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চেষ্টা করবেন। পরবর্তীতে তার পছন্দের প্রার্থী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে পারেন সে দিকে লক্ষ্য রাখবেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে সর্বোচ্চ সামর্থ্য ব্যয় করবেন এবং বিভিন্ন দেশ নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের গৃহীত নীতি থেকে সরে যাবেন। চার বছর যথেষ্ট সময়, তাই সবকিছু এখনই দেখা যাবে না। তবে যাই হোক না কেন, ট্রাম্পের এই চার বছর যুক্তরাষ্ট্রসহ গোটা বিশ্বের ভিন্নরকম পরিবেশের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এমনকি নতুন বিশ্বব্যাবস্থা তৈরি হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
মহসীন হাবিব: আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশ্লেষক
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে