রাফার আরও কিছু অংশ খালি করার নির্দেশ ইসরায়েলের
ইসরায়েলি বাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় নগরী রাফার আরও কিছু অংশ খালি করে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। শনিবার ওই নির্দেশ দিয়ে তারা ফিলিস্তিনিদের আল-মাওয়াসির বর্ধিত মানবিক এলাকায় চলে যেতে বলেছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স এ এক পোস্টে গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া এবং আশেপাশের আরও ১১টি এলাকার বাসিন্দা এবং আশ্রয় গ্রহণকারীদের দ্রুত গাজা সিটির পশ্চিম দিকে চলে যাওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন।
সাত মাসের বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধে ছোট্ট এই ভূখণ্ডটির নানা প্রান্ত থেকে প্রাণ বাঁচাতে ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি রাফায় আশ্রয় নিয়েছে। ইসরায়েলের নির্দেশে গত সোমবার থেকে তাদের এখন রাফাও ছাড়তে হচ্ছে।
এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েলি বাহিনী হয়তো রাফায় স্থল অভিযান শুরু করার পরিকল্পনা করছে।
সোমবার থেকে গাজার মিশর সীমান্তবর্তী নগরী রাফায় আকাশ হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
গাজার মধ্যাঞ্চলের ছোট্ট শহর আল-জাওয়াইদা। যেখানে গত কয়েক দিনে গাজার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ফিলিস্তিনিদের ঢল নেমেছে।
রাফার বাসিন্দারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী নতুন করে রাফার যেসব এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বলেছে তার মধ্যে নগরীর কেন্দ্রস্থলও রয়েছে। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ইসরায়েল সেখানে তাদের স্থল অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে।
“সেখানে খুবই কঠিন পরিস্থিতি বিরাজ করছে, আতঙ্কিত লোকজন নিজেদের বাড়িঘর ছাড়ছে”, বলেন শাবুরার বাসিন্দা ৩৫ বছরের খালেদ। ইসরায়েল নতুন করে যেসব এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বলেছে শাবুরা তার একটি।
রাফা অভিযানের বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী থেকে বলা হয়েছে, তারা রাফার পূর্বাঞ্চলে এবং রাফা ক্রসিংয়ের গাজা অংশে হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তাদের সক্রিয় অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
সাত মাসের যুদ্ধে চরম মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে গাজায় বসবাস করা প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির উপর। ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি এরই মধ্যে যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে। নিহতদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
রাফায় ইসরায়েল সর্বাত্মক অভিযান শুরু করলে সেখানে দুর্দশাগ্রস্ত ওই মানুষগুলোর উপর আরও বড় বিপর্যয় নেমে আসবে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। এমনকি ইসরায়েলের সবচেয়ে প্রভাবশালী মিত্র যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারকে রাফায় অভিযান না চালাতে চাপ দিচ্ছে।
জো বাইডেন বলেছেন, যদি ইসরায়েল ওয়াশিংটনের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে রাফায় স্থল অভিযান চালায় তবে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে অস্ত্রের চালান স্থগিত করবে।
কিন্তু ইসরায়েল কোনো চাপ বা হুঁশিয়ারিতে দমতে রাজি নয়। তারা রাফায় সর্বাত্মক অভিযানের বিষয়ে এখনও নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। তারা বলেছে, হাজারো হামাস যোদ্ধা রাফায় অবস্থান নিয়েছে। তাই রাফা অভিযান ছাড়া গাজায় তাদের লক্ষ্য পূরণ অসম্ভব।
ইসরায়েলি বাহিনী শনিবার যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তাতে গাজার প্রায় তিন লাখ ফিলিস্তিনি আল-মাওয়াসিতে আশ্রয় নিয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে