Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

যা করা হয় সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে

Senior  reporter

সিনিয়র রিপোর্টার

রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আপিল বিভাগে চূড়ান্তভাবে বাতিল (রিভিউ খারিজ) হওয়ার পর বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা পেলো সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল। এখন থেকে বিচারপতিদের বিরুদ্ধে আসা যেকোনো অভিযোগ প্রাথমিক তদন্ত করে তার রিপোর্ট রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে। রাষ্ট্রপতি তা বিচার-বিবেচনা করে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে পেরত পাঠালে কাউন্সিল পূর্ণাঙ্গ তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের নিষ্পত্তি করবেন। অর্থাৎ বিচারপতিদের অপসারণ থেকে শুরু করে তাদের যেকোনো ধরণের শাস্তি দেওয়ার এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে।

সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের বিষয়ে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ২. অনুচ্ছেদের নিম্নরূপ বিধানাবলী অনুযায়ী ব্যতীত কোনো বিচারককে তাঁহার পদ হইতে অপসারিত করা যাইবে না। ৩. একটি সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল থাকিবে যাহা এই অনুচ্ছেদে ‘কাউন্সিল’ বলিয়া উল্লেখিত হইবে এবং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারকের মধ্যে পরবর্তী যে দুইজন কর্মে প্রবীণ তাঁহাদের লইয়া গঠিত হইবে: তবে শর্ত থাকে যে, কাউন্সিল যদি কোনো সময়ে কাউন্সিলের সদস্য এইরূপ কোনো বিচারকের সামর্থ্য বা আচরণ সম্পর্কে তদন্ত করেন, অথবা কাউন্সিলের কোনো সদস্য যদি অনুপস্থিত থাকেন অথবা অসুস্থতা কিংবা অন্য কোনো কারণে কার্য করিতে অসমর্থ্য হন তাহা হইলে কাউন্সিলের যাহারা সদস্য আছেন তাঁহাদের পরবর্তী যে বিচারক কর্মে প্রবীণ তিনিই অনুরূপ সদস্য হিসাবে কার্য করিবেন। ৪. কাউন্সিলের দায়িত্ব হইবে- কে) বিচারকগণের জন্য পালনীয় আচরণবিধি নির্ধারণ করা; এবং (খ) কোনো বিচারকের অথবা কোনো বিচারক যেরূপ পদ্ধতিতে অপসারিত হইতে পারেন সেইরূপ পদ্ধতি ব্যতীত তাঁহার পদ হইতে অপসারণযোগ্য নহেন এইরূপ অন্য কোনো পদে আসীন ব্যক্তির সামর্থ্য বা আচরণ সম্পর্কে তদন্ত করা। ৫. যে ক্ষেত্রে কাউন্সিল অথবা অন্য কোনো সূত্র হইতে প্রাপ্ত তথ্যে রাষ্ট্রপতির এইরূপ বুঝিবার কারণ থাকে যে কোনো বিচারক- (ক) শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে তাঁহার পদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করিতে অযোগ্য হইয়া পড়িতে পারেন, অথবা (খ) গুরুতর অসদাচরণের জন্য দোষী হইতে পারেন, সেইক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি কাউন্সিলকে বিষয়টি সম্পর্কে তদন্ত করিতে ও উহার তদন্ত ফল জ্ঞাপন করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারেন। ৬. কাউন্সিল তদন্ত করিবার পর রাষ্ট্রপতির নিকট যদি এইরূপ রিপোর্ট করেন যে, উহার মতে উক্ত বিচারক তাঁহার পদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে অযোগ্য হইয়া পড়িয়াছেন অথবা গুরুতর অসদাচরণের জন্য দোষী হইয়াছেন তাহা হইলে রাষ্ট্রপতি আদেশের দ্বারা উক্ত বিচারককে তাঁহার পদ হইতে অপসারিত করিবেন। এবং ৭. এই অনুচ্ছেদের অধীনে তদন্তের উদ্দেশ্যে কাউন্সিল স্বীয় কার্য-পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করিবেন এবং পরওয়ানা জারি ও নির্বাহের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের ন্যায় উহার একই ক্ষমতা থাকিবে।

এ ব্যপারে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এ পর্যন্ত সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে একজন বিচারপতিকে অপসারণ করা হয়। তাও ২০০৪ সালের ২০ এপ্রিল।’ তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে কোনো অভিযোগ করলে বা পেলেই সরাসরি অভিযুক্ত বিচারপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। বরং এর প্রক্রিয়াটা বেশ দীর্ঘ। যেমন, অভিযোগে আসলেই একটা প্রাথমিক একটি অনুসন্ধান করা হয়। সেখানে অভিযুক্ত বিচারকের অসদাচরণ বা দুর্নীতি বিষয়ে অনুসন্ধান করা হয়। সেই অনুসন্ধানের রিপোর্ট পাঠানো হয় রাষ্ট্রপতির কাছে। রাষ্ট্রপতির দপ্তর তা যাচাই-বাছাই করে ফেরত পাঠান সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে। তবে এখানে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত মেকানিক্যাল। এরপর সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে রিপোর্ট দেন এবং এর ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ