Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোটা সংস্কারের পরিপত্র জারি বেআইনি: আইনজ্ঞদের অভিমত

Hira  Talukder

হিরা তালুকদার

বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই ২০২৪

রকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গত ১০ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, চার সপ্তাহ পর এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে। এ সময়কালে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে সরকারের দেয়া পরিপত্র বহাল থাকবে।

এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

অন্যদিকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বহাল রাখতে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। গত মঙ্গলবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়।

এদিকে কোটা পুনঃবহাল করে এর বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, “হাইকোর্টের রায় বাতিল চাইতে হলে আইন অনুযায়ী লিভ টু আপিল ফাইল করতে হয়। তাই লিভ টু আপিল ফাইল করা হয়েছে। আদালত শুনানির পর সিদ্ধান্ত দেবেন, আমাদের আপিলের অনুমতি দেবেন কি না। আমরা আবেদনে দেখিয়েছি কী কী কারণে হাইকোর্টের রায়টি সঠিক হয়নি। আদালতের কাছে আমাদের প্রার্থনা হচ্ছে, লিভ (আপিলের অনুমতি) দিয়ে হাইকোর্টের রায়টি যেন বাতিল করা হয়।”

কেন আবেদন করেছেন জানতে চাইলে, অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, :আমাদের মূল যুক্তিটা হচ্ছে এটা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। ফলে এতে আদালতের বিচারের কিছু নেই।”

নিয়োগের ক্ষেত্রে নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট করা হয়েছিল। যার চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত ৫ জুন হাইকোর্ট পরিপত্রটি ‘অবৈধ’ মর্মে রায় ঘোষণা করেন। গত ৯ জুন হাইকোর্টের ওই রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

কোটা নিয়ে চলমান আন্দোলনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, “আপিল বিভাগে মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আছে। আগামী মাসে রায় হবে। এ অবস্থায় সরকারের কোটা নিয়ে কোনো পরিপত্র জারি করা হবে বেআইনি।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'রাস্তায় যত আন্দোলনই হোক সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী আদেশ ছাড়া কোটা নিয়ে সরকারের কিছু করার নেই।”

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, “সরকারও তো কোটা সংস্কার চায়। এজন্য আপিল বিভাগে আপিলও করেছে। কিন্তু আদালতে বিচারাধীন কোনো বিষয় আদালতেই সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সরকার নির্বাহী কোনো আদেশ দিতে পারে না। আবাক বিষয়, এটা না বুঝেই ছাত্ররা রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।”

এদিকে, কোটা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

আদালতে শিক্ষার্থীরা ন্যায় বিচার পাবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার সময় যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তাতে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি বলেন, “কিছু মহল কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। এর ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক।”

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ