Views Bangladesh Logo

বিচারকদের বদলি ও পদায়ন নীতিমালা চূড়ান্ত

বিচারক আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়ন নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এই নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে। নীতিমালায় দেশের বিচারিক আদালতে কর্মরত কোনো বিচারক তিন বছরের বেশি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জানা গেছে, চলতি জানুয়ারি মাসেই এই নীতিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হবে।


সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়ন নীতিমালার চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগির এই নীতিমালা প্রকাশ করা হবে। আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা শেষে নীতিমালাটি চূড়ান্ত হয়েছে। নীতিমালায় সুপ্রিম কোর্ট অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়ন নীতিমালার খসড়া প্রস্তাব করে। পরে তা পাঠানো হয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এ-সংক্রান্ত খসড়া সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এই নীতিমালার বিষয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসে কর্মরত সব জেলা ও দায়রা জজ/সমপর্যায়ের বিচারকদের মতামত লিখিত আকারে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের দপ্তরে গত ৭ নভেম্বরের মধ্যে পাঠানো হয়েছিল।

গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেন। সেখানে তিনি বিচার বিভাগ সংস্কারে রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। সেদিন প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘বিচারকদের পদায়ন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো ঘোষিত নীতিমালা নেই। ফলে পদায়ন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে অনেক সময়ই বিচারকেরা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। এ বিষয়ে একটি যথোপযুক্ত নীতিমালা দ্রুত প্রণয়ন করবেন।’

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন. ‘বিচারকদের পদায়নের সাধারণ মেয়াদ বিষয়ে এই নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিচারিক আদালতে কর্মরত কোনো বিচারক প্রতিটি কর্মস্থলে অনধিক তিন বছর দায়িত্ব পালন করবেন। তবে যদি প্রধান বিচারপতির কাছে প্রতীয়মান হয় যে কোনো বিচারক কোনো বিশেষ দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন বা কোনো বিচারক বদলি হলে বিচার প্রশাসনে ব্যাঘাত সৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে, সে ক্ষেত্রে ওই বিচারক অনধিক আরও এক বছর ওই কর্মস্থলে নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। আর চৌকি আদালতে কর্মরত বিচারকের পদায়নের মেয়াদকাল হবে সর্বোচ্চ এক বছর।

কোনো ধরনের ব্যতিক্রম ছাড়া অধস্তন আদালতের বিচারকদের দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতে পালাক্রমে বদলি করতে হবে বলে খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। একই কর্মস্থলে পুনঃ বদলি করার বিষয়ে বলা হয়, কোনো কর্মস্থলে একজন বিচারককে দুবার বদলি বা পদায়ন করা যাবে না। তবে শর্ত থাকে যে কোনো বিচারক বদলিসূত্রে কোনো কর্মস্থলে যোগদান করার ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার আগে ওই বিচারক পদোন্নতিপ্রাপ্ত হলে তার বর্তমান কর্মস্থলে পদশূন্য থাকা সাপেক্ষে তাকে পদায়ন করা যাবে। পুরো চাকরিজীবনে একজন বিচারককে একই কর্মস্থলে, অর্থাৎ নির্দিষ্ট জেলায় তিনবারের অধিক বদলি বা পদায়ন করা যাবে না বলেও নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে।

বিচারকদের বদলির ক্ষেত্রে অনুসরণীয় সাধারণ নীতি সম্পর্কে নীতিমালায় বলা হয়, ‘শূন্য পদ ছাড়া কোনো বিচারককে বদলি করা যাবে না। কোনো বিচারককে এমন কোনো কর্মস্থলে বদলি করা যাবে না, যেখানে তার পরিবারের (স্বামী/ স্ত্রী, পিতা, মাতা, শ্বশুর, শাশুড়ি, ভাই, বোন, পিতামহ, মাতামহ) আইনজীবী পেশায় নিযুক্ত রয়েছেন। কোনো বিচারক যে জেলায় ক্রয়সূত্রে ১০ শতাংশের বেশি কৃষি বা অকৃষি ভূমির মালিক, সে জেলায় পদায়ন লাভ করতে পারবেন না। এ ছাড়া স্বামী-স্ত্রী বিচারক হলে একই কর্মস্থলে বদলির অগ্রাধিকার পাবেন, বছরের নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বদলি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে এবং অধস্তন আদালতের কোনো বিচারকের প্রেষণের মেয়াদ অনধিক তিন বছর হবে বলে খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে।’

সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানায়, ‘প্রধান বিচারপতির দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ যথাযথভাবে পালনের ক্ষেত্রে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়ন নীতিমালা, ২০২৪ প্রস্তুত করা হয়েছে। নীতিমালার বিষয়ে মতামত লিখিত আকারে গত ডিসেম্বরে ১৫ তারিখের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন শুধু অপেক্ষা প্রজ্ঞাপনের।’

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ