Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

কবি নজরুল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

 VB  Desk

ভিবি ডেস্ক

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

ঢাকার ডেমরায় কবি নজরুল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।

এমনি প্রেক্ষাপটে কবি নজরুল কলেজকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কলেজের নোটিশ বোর্ডে এ-সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়েছে।

এর আগে  রোববার ডেমরার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে কবি নজরুল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এদিন সকালে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে শুরু করে এবং বেলা ১২টার দিকে ভাঙচুর চালায়। তারা কলেজ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্রও লুট করে নিয়ে যায়।

দুপুর ১টার দিকে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা সেখানে উপস্থিত হলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

পরে তারা একে অপরের ওপর হামলা চালালে অর্ধশতাধিক আহত হয়। সংঘর্ষের জেরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা।

আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদের মধ্যে ৩০ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ ফারুক।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ছাড়া সংঘর্ষের পর যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় ছয় প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রবিবারের সংঘর্ষের পর সকাল ৭টা থেকে সূত্রাপুর থেকে ডেমরা পর্যন্ত অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে এমন আশঙ্কায় পুলিশ শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এরপরও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, হামলা ও লুটপাটে জড়িয়ে পড়ে।

এতে ওই এলাকায় কয়েক দফার সংঘর্ষে অন্তত ২৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন, খবর ইউএনবি। 

এদিকে এ ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ ধরনের অপপ্রচার থেকে সবাইকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ডিএমপি।

হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসায়’ এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রবিবার রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশীবাজারের ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছে ৩৫টি কলেজের শিক্ষার্থীরা।

গত ১৬ নভেম্বর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ডেমরার ডাক্তার মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের এইচএসসির ছাত্র অভিজিৎ হালদার হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন। ১৮ নভেম্বর তিনি মারা যান।

এরপরই রবিবার হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ভাঙচুর চালায় শিক্ষার্থীরা।

তাদের অভিযোগ, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের সমর্থন জানিয়ে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্ররা তাদের ওপর হামলা চালায়।

পরে রবিবার কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ৩৫টি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও দুই কলেজের সম্পত্তি ভাঙচুরের ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হন।

কলেজগুলো হলো- ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা আইডিয়াল কলেজ, সিটি কলেজ, গিয়াসউদ্দিন কলেজ, সরকারি তোলারাম কলেজ, ইম্পেরিয়াল কলেজ, বোরহানউদ্দিন কলেজ, বিজ্ঞান কলেজ, দনিয়া কলেজ, লালবাগ সরকারি কলেজ, উদয়ন কলেজ, আদমজী, নটরডেম, রাজারবাগ কলেজ, নূর মোহাম্মদ, মুন্সী আব্দুর রউফ কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী কলেজ, গ্রিন লাইন পলিটেকনিক, ঢাকা পলিটেকনিক, মাহবুবুর রহমান সাইন্স অ্যান্ড টিকনোলজি ইনস্টিটিউট, সহ রাজধানীর অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

তবে কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা ছাত্র, এবং আমরা ছাত্রদের সমর্থন করি। আমরা কাউকে আক্রমণ করিনি।’

ভাঙচুরের বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক তরিকুল ইসলাম বলেন, 'আমি প্রথমে তাদের ফেরত পাঠাই। পরে তারা দলবল নিয়ে আসে। তারা অনেক কম্পিউটার লুট করে ধ্বংস করেছে, এমনকি এনসিসির কাছ থেকে রাইফেলও নিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘তারা ১৭টি বিভাগ ভাঙচুর করে এবং শিক্ষকদের ব্যক্তিগত চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।’

সোহরাওয়ার্দী কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, 'অধ্যক্ষ আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে কিছুই হবে না, কিন্তু হামলা হয়েছে। পুরো কলেজে হামলা হয়েছে, এমনকি আমার কক্ষও ভাঙচুর করা হয়েছে।’

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ