Views Bangladesh Logo

প্রেমের ফাঁদ’ থেকে কিশোরীদের মুক্ত রাখুন

জ ১৪ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ভিউজ বাংলাদেশের সব পাঠককে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা। যদিও ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের নানা অভিমত রয়েছে। অনেকে দিবসটি আড়ম্ভরতার সঙ্গে পালন করতে চাইলেও অনেকের আছে আপত্তি; তারা এতে কোনো সাড়াশব্দ দিতে চান না, অনেক তরুণ-তরুণী আবার তা মানতে চান না; সব সামাজিক বাধা-নিষেধ তারা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে চান। ভালোবাসা দিবসটি ভালোবাসার চেয়ে প্রেমের দিবস হিসেবেই বেশি উদযাপিত হয়। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে প্রেম এখন হাতের মুঠোয়। প্রেমের এই সাংস্কৃতিক বিবর্তন নিয়ে অন্যরকম অনেক প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখা যেতে পারে; কিন্তু আজ আমরা অন্য একটি দিকে দৃষ্টি দিতে চাই।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংবাদামাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিশোরীদের জন্য ‘প্রেমের ফাঁদ’, উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। কিশোরী সন্তান আছে- এমন মা-বাবার জন্য পরপর দুটি ঘটনা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। কী করলে সন্তান সুরক্ষিত থাকবে, কী বললে সন্তান নিজেকে নিরাপদ রাখার বিষয়টি বুঝতে পারবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা। সাম্প্রতিক দুটি ঘটনার একটি হলো নিখোঁজের ১৭ দিন পর ২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার। অন্যটি হলো রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে ১১ বছর বয়সী এক কিশোরীর ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ঘটনা।

এরকম আরও অনেক ঘটনাই সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে, যার সব খবরে আসে না। এর জন্য বহু বাবা-মা প্রচণ্ডরকম উদ্বিগ্ন। সন্তানের কথা ভেবে অনেক বাবা-মা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন; যেসব মোবাইল সেটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা যায়, সেগুলো চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। এমন কি ছেলেমেয়েদের মেলামেশাতেও এখন অনেক বাবা-মা অতিরিক্ত কঠোরতা আরোপ করেছেন। অতিরিক্ত সচেতন মা-বাবারা নিরাপত্তার নামে তাদের সন্তানদের এক কঠোর বন্দিশালার মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলেছেন।

অন্যদিকে একটু অসচেতন হলে সন্তানের কী ক্ষতি হয় তার কিছু নজির আমরা সম্প্রতি দেখেছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় থেকে কিশোরীদের বাড়ি পালানোর ঘটনা সত্যিই আতঙ্কজনক। এসব ঘটনা বেশি ঘটছে সব পরিবারে যেসব পরিবারে মা-বাবার মধ্যে মিল নেই, সন্তানের নিরাপত্তা নেই, বা পরিবারে কোনো কারণে অশান্তি বিরাজ করছে। তার মানে কিশোরীদের এসব ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে দূরে রাখার প্রথম শর্ত পরিবারে যেন তার নিরাপদ আশ্রয় থাকে, মানসিক শান্তির জায়গাটি নিশ্চিত থাকে।

দ্বিতীয়ত, সুরক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার না করলে কী কী বিপদ হতে পারে, সে সম্পর্কেও ব্যাপকভাবে প্রচার দরকার। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। অনেক অভিভাবক নিজেও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, সন্তানদেরও সেভাবে ব্যবহার করতে দিচ্ছেন। কোন বয়সে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা যাবে, তা নিয়ে নীতিমালা করা প্রয়োজন। উন্নত দেশগুলো এখন এদিকে নজর দিচ্ছে। আমাদেরও এ মুহূর্তেই এসব দিকে নজর দিতে হবে। প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে কোনো কিশোরীর জীবন যেন ঝুঁকিপূর্ণ না হয়- আমরা সেটাই চাই।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ