Views Bangladesh Logo

বাংলাদেশে লাক্ষা রপ্তানি কমায় ক্ষতির মুখে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা

শ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে লাক্ষা (গালা) রপ্তানি করে আসছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে রপ্তানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে ব্যবসায়ীদের মাঝে।

পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় লাক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প, যেখানে ৩০টিরও বেশি কারখানায় কাঁচা লাক্ষা প্রক্রিয়াজাত করে ‘লাক্ষা চাকতি’তে পরিণত করা হয়। যদিও ভারতে অভ্যন্তরীণ বাজার এখনো স্থিতিশীল, বাংলাদেশে রপ্তানির ধীরগতির কারণে উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

গত বছর বাংলাদেশে প্রায় ১০০ টন লাক্ষা রপ্তানি করেছিল ভারতীয়রা। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কিছু সময়ের জন্য রপ্তানি সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর মাসিক গড়ে ১২ টন করে লাক্ষা রপ্তানি শুরু হয়।

লাক্ষা ব্যবসায়ী শিবরাম মাহাতো বলেন, ‘ভারতে বছরে প্রায় ২২ হাজার মেট্রিক টন লাক্ষা উৎপাদিত হয়, যার একটি বড় অংশ বিদেশে রপ্তানি করা হয়। এক সময় বাংলাদেশে বছরে ৬০০ টনের বেশি লাক্ষা রপ্তানি হতো, যা এখন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।’

পশ্চিমবঙ্গের লাক্ষা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘রপ্তানি কমে যাওয়ার ফলে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশে প্রচুর নদী, খাল ও পুকুর থাকায় কাঠের নৌকা ব্যবহার ব্যাপক। এসব নৌকার নিচের অংশে লাক্ষার প্রলেপ দেয়া হয়, যা পানির ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।’

নৌকা ছাড়াও লাক্ষার বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। কাঠের আসবাবের পালিশ, বিভিন্ন ধরনের রঙ, অস্ত্র কারখানা, রেলওয়ে শিল্প ও বৈদ্যুতিক শিল্পে ইনসুলেটিং ভার্নিশ হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। ডাকবিভাগে চিঠিপত্র ও পার্সেল সিল করার কাজে, চামড়া রঙ করার ক্ষেত্রে, গয়নার ফাঁপা অংশ পূরণে এবং সুগন্ধি শিল্পে লাক্ষার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক পুরোপুরি স্থিতিশীল না হওয়ায় এই ব্যবসায়ীরা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন, যা উভয় দেশের জন্যই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ