বাজেটে সিগারেটে কার্যকর করারোপে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান
২০৪০ সালের মধ্যে 'তামাকমুক্ত বাংলাদেশ' গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে দেশে সিগারেটের সহজলভ্যতা কমাতে হবে। মূল্যস্ফীতি এবং আয়ের প্রবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ, ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটের খুচরা মূল্য যথাক্রমে ৩৩ শতাংশ, ১৯ শতাংশ, ১৫ শতাংশ, এবং ১৩ শতাংশ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (২ মে) ঢাকায় বিয়াম মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে তারা এ আহ্বান জানিয়েছেন। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।
সংলাপে মোট ছয়জন সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও রিসার্চ ডিরেক্টর ড. এসএম জুলফিকার আলী এবং বিইইটিসি ফোরামের সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন অধ্যাপক- ড. নাজমুল ইসলাম, বুয়েট এবং অধ্যাপক গোলাম আহমেদ ফারুকী।
তামাক-বিরোধী সংগঠনের পক্ষে উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী সিগারেটে কার্যকর করারোপের বিষয়ে প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম এ মান্নান বলেন, সিগারেটের ওপর কার্যকর করারোপের বিষয়ে যে ঐক্যমত আমাদের সংসদ সদস্যদের মধ্যে রয়েছে তা এবারের বাজেট আলোচনায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।
বক্তারা বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষ এবং কিশোর-তরুণদের সিগারেট ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হলে এই বাজেটে বেশি বেশি করারোপের মাধ্যমে সিগারেটের খুচরা মূল্য বাড়ানো প্রয়োজন এবং উপজেলা পর্যায়ে এর চাষ নিরুৎসাহিত করতে সরকারের ইনসেনটিভ মেকানিজম তৈরি করা জরুরি। জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি, আর সে জন্য সিগারেট ব্যবহার কমাতে বাজেটে যথাযথ উদ্যোগ থাকা বাঞ্ছনীয়।
বক্তারা আরও বলেন, সিগারেটের দাম ২০০ থেকে ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরো শক্তিশালী করা প্রয়োজন। এছাড়া, মো. আবদুর রশিদ, এমপি তাঁদের বক্তব্যে সিগারেট বিক্রি থেকে আসা করের পরিমাণের চেয়ে সিগারেটের কারণে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতির দিকে বেশি নীতি-মনোযোগ কাম্য বলে মন্তব্য করেন।
ড. আতিউর রহমান বলেন, সিগারেটে কার্যকর করারোপই এই ক্ষতিকারক পণ্যের ব্যবহার কমিয়ে আনার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এ কারণেই দেশের তামাক-বিরোধী নাগরিক সংগঠনগুলো সিগারেটে কার্যকর করারোপের পক্ষ অবস্থান নিয়েছে। তবে সিগারেট ব্যবহার কমলেও যেন সরকারের রাজস্ব আয়ে বড় চাপ না পড়ে-সে বিষয়টি মাথায় রেখেই কার্যকর করারোপের প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। এই প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে একদিকে সিগারেট ব্যবহারের হার ৯ শতাংশ কমবে, অন্যদিকে সিগারেট বিক্রি থেকে আসা করের পরিমাণ ২৮ শতাংশ বাড়বে বলে জানান তিনি।
ড. জুলফিকার আলী বলেন, ট্যোবাকো কোম্পানিগুলোর রাজস্ব আয় যেভাবে বাড়ছে, তাতে তামাক বিরোধী আন্দোলন সফল করতে হলে কার্যকর করারোপের ওপরই গুরুত্ব দিতে হবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে