Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

বিশ্বে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিক ডোনাল্ড ট্রাম্প

Editorial  Desk

সম্পাদকীয় ডেস্ক

বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪

বিপক্ষ দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে বেশ পেছনে ফেলে দিয়ে ইলেকটোরাল ভোটে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২৭৭ ইলেকটোরাল ভোট, আর কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ২২৪ ইলেকটোরাল ভোট। অফিসিয়াল ঘোষণা না এলেও বিশ্বের মানুষের আর জানতে বাকি নেই আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পই।

ডোনাল্ড ট্রাম্পও দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বিজয়ী ভাষণ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমেরিকাকে বাঁচানোর জন্যই ইশ্বর তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘এই জয় ঐতিহাসিক। সর্বকালের সেরা রাজনৈতিক লড়াই দেখল আমেরিকা। আমেরিকাবাসীকে ধন্যবাদ। আপনাদের ভবিষ্যতের জন্য আমি লড়াই করব। ফের আমেরিকাকে সোনার দেশে পরিণত করব।’

বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পকে শুধু আমেরিকাকে সোনার দেশে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দিলে হবে না, সারা পৃথিবীকেই সোনার পৃথিবীতে পরিণত করার কথা বলতে হবে। কারণ আমেরিকার নীতি-নির্ধারণের ওপর বিশ্বের অর্থনীতি-রাজনীতি অনেক কিছুই নির্ভর করে।

ট্রাম্প যখন প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন (২০১৭-২১) তখন অনেকেই তার অদ্ভুত কথাবার্তা ও আচরণের জন্য সমালোচনা করেছিলেন; কিন্তু সবাইকে অবাক হয়ে দেখল দেশে দেশে তখন যুদ্ধ অনেক কমে গেছে। আশা করা যাচ্ছে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্প বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় আরও মনোযোগী হবেন। অন্তত ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সমাপ্তি হবে আশা করা যাচ্ছে। তাতেও পূর্ব-ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক সমস্যার সমাধান হবে।

কিন্তু ট্রাম্প কি ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান অন্তহীন যুদ্ধের কোনো সমাধান করবেন? মনে হয় না। তিনি প্রচণ্ডভাবেই ইহুদিপন্থি। যদি তা করতে পারেন তাহলে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এটাই বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সংকট, এই সংকট দূর করা গেলে মধ্যপ্রাচ্যের আশি ভাগ সংকট এমনিতেই সমাধান হয়ে যাবে।

বাংলাদেশের মানুষের জন্যও চিন্তার বিষয় আছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তার উৎকণ্ঠার কথা প্রকাশ করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো, আর গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে ভারতের একটু দ্বিধাদ্বন্দ্বের সম্পর্ক চলমান, সেই প্রেক্ষাপটে নতুন মার্কি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কী হবে, তা এখনই নির্ধারণ করতে হবে। বাংলাদেশকে এখনই এই বার্তা দিতে হবে যে, বাংলাদেশ আমেরিকার বন্ধু। কোনোরকম উগ্রপন্থা এই দেশে নেই। বাংলাদেশও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, এবং অতিশিগগিরই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এ কথা সত্য, যে-ই প্রেসিডেন্ট হোক, তাতে বৈশ্বিক নীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো হেরফের ঘটে না; কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন ব্যতিক্রমী মানুষ। তিনি সব সময়ই যুদ্ধের চেয়ে ব্যবসা পছন্দ করেন। তিনি মনে করেন যুদ্ধ না করেও ব্যবসার একশ উপায় আছে। ব্যবসার জন্য প্রয়োজন দেশে দেশে সুসম্পর্ক। ব্যবসার জন্য সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইলেও ট্রাম্প যে শত্রু-মিত্র বাছাই করে চলবেন না, তা না।

হয়তো রাশিয়া ও ভারতকে আরেকটু কাছে টেনে নেবেন, চীন ও উত্তর কোরিয়াকে ঠেকানোর জন্য। ভূ-রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশের জন্য পরিস্থিতি একটু জটিল। তারপরও বাংলাদেশকে আশাবাদী হতে হবে, বন্ধুত্বমূলক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে এগিয়ে যেতে হবে। বিশ্ববাসীর সঙ্গে বাংলাদেশকেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানাতে হবে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। আমরা চাই বিশ্বে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিক ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ