ভারত-বাংলাদেশ ট্রেন চলাচল বন্ধ ১২৩ দিন, বিপাকে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তরা
ভারত-বাংলাদেশ ট্রেন চলাচল টানা ১২৩ দিন ধরে বন্ধ থাকায় চরম সমস্যায় দুই দেশের সাধারণ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ, বিশেষত রোগীরা।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে ওঠায় গত ১৯ জুলাই বন্ধ হয়ে যায় কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে চলা মৈত্রী এক্সপ্রেস। ২০ জুলাই থেকে বন্ধ কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেসও। বাংলাদেশ রেলওয়ের অনুরোধেই ট্রেন বন্ধ হয়েছিল।
অস্থিরতা কাটিয়ে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে বাংলাদেশ। চালু হয়েছে সাময়িক বন্ধ থাকা দুদেশের বাস পরিষেবা এবং বিমান যোগযোগ। রাজনৈতিক চাপা উত্তেজনা থাকলেও মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার দুর্গাপূজার আগে ইলিশও পাঠিয়েছে কলকাতায়।
কিন্তু নভেম্বরের মাঝামাঝি গড়িয়ে গেলেও রেল যোগাযোগ পরিষেবা ফের চালু হয়নি। নতুন কোনো সংকেত পাওয়া যাচ্ছে না দুদেশের পক্ষেই।
রাজনৈতিক টানাপড়েন আর বৈদেশিক নীতির এ গ্যাঁড়াকলে সমস্যায় পড়েছেন নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্তেরা। বিমানে ভ্রমণের অর্থনৈতিক সামর্থ্য নেই তাদের। আর বাসযাত্রা রোগীদের জন্য খুবই কষ্টকর।
পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক ছিল, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ ট্রেনে কলকাতায় আসতেন চিকিৎসাসহ নানা কাজে। এখন সে পথ বন্ধে বিপাকে তারাও।
কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস সপ্তাহে পাঁচদিন পরিষেবা দেয়, সোম, মঙ্গল, বুধ, শুক্র এবং শনিবার। কলকাতা-খুলনা বন্ধন সপ্তাহে দুদিন পরিষেবা দেয়, রবি এবং বৃহস্পতিবার।
ফলে এ পর্যন্ত হাজারো ট্রেনযাত্রা বাতিলে হচ্ছে দুদেশেরই রেলওয়ের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিও। কলকাতা রেলস্টেশনের ইমিগ্রেশন কাউন্টার মাসের পর মাস নিস্তব্ধ। অগ্রিম বুকিং করে রাখা টিকিটের মূল্য ফেরত দিয়ে চলেছে রেলওয়ে কতৃপক্ষ।
ভারতের পূর্ব রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা কৌশিক মিত্র জানান, ভারতীয় রেল বোর্ড ইচ্ছা করলেই ট্রেন দুটি চালাতে পারে না। প্রথমত, ট্রেন দুটি আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে। দ্বিতীয়ত, ট্রেনের রেক দুটি ভারতীয় রেলের সম্পত্তি হলেও খুলনা বা ঢাকা থেকে ট্রেন যখন সীমান্ত পর্যন্ত আসে, তখন তাতে দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মীরা। ফলে যৌথ সম্মতি ছাড়া ট্রেন চালানো সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তান সমঝোতা এক্সপ্রেস চালানো হয়েছে অনেকবারই। বহুবার সেই রেল পরিষেবা দুই প্রতিবেশীর সম্পর্কের টানাপড়েনে বন্ধ হলেও পরে আবার চালু হয়েছে। কিন্তু প্রতিবার চালু হওয়া বা বন্ধ হওয়ার আগাম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছিল। তবে ভারত-বাংলাদেশ বন্ধন এবং মৈত্রী এক্সপ্রেসের বিষয়টা অন্যরকম। সরকারি খাতা-কলমে ট্রেন দুটি এখনও চালু থাকলেও বাস্তবে বন্ধ।
কৌশিক মিত্র আরও জানান, এ পর্যন্ত শতাধিক ট্রেনযাত্রার সব যাত্রীর টিকিটের টাকা ফেরত দিয়ে বিপুল ক্ষতির মুখেও পড়েছে দুই বাংলার রেল সার্ভিস।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে