Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

কর্মসংস্থানের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের রাষ্ট্রের অংশী করা হোক

Editorial  Desk

সম্পাদকীয় ডেস্ক

রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ব মানুষের সক্ষমতা সমান না। সব কাজে সব মানুষ সমান পারদর্শীও নয়। শারীরিক-মানসিক নানা কারণেই কিছু কিছু মানুষ পিছিয়ে থাকতে পারে। তাদের পিছিয়ে রাখা হবে সমাজ-রাষ্ট্রেরই ক্ষতি। এতে ব্যক্তির বিকাশ যেমন ক্ষুণ্ন হয়, তেমনি তার ব্যক্তিত্বেরও অপমান হয়। সমাজ-রাষ্ট্রের উচিত এই অক্ষম মানুষদের যার যার সক্ষমতা অনুযায়ী নানা কাজে লাগানো। তাদের জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। তারা যেন পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্রের বোঝা না হয়ে সম্পদে পরিণত হয়।

আজ রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কর্মসংস্থান: সমস্যা ও সমাধানের পথ’ শীর্ষক এ বৈঠকের আয়োজন করেছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানসহ মানবাধিকার নিয়ে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ বিজনেস অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি নেটওয়ার্ক (বিবিডিএন)। উক্ত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকারের বিষয়টি সরকার বা নীতিনির্ধারকদের অগ্রাধিকারের তালিকায় পিছিয়ে থাকে। কর্মসংস্থানসহ নানা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তির উন্নয়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। প্রতিবন্ধীবিষয়ক কার্যক্রমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও সংগঠনকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সমস্যা হচ্ছে, বাংলাদেশে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মানবিক দৃষ্টিতে দেখা হলেও মানসিক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে তেমন গুরুত্ব নেই। তাদের কর্মসংস্থান তো দূরের কথা সুচিকিৎসার ব্যবস্থাই নেই। অথচ নির্দিষ্ট ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে অনেক শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের বিশেষ কিছু কাজে লাগানো যায়। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল নামের যে ব্যক্তিকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো, অনেকের ধারণা তিনি ছিলেন একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। সুচিকিৎসা হলে তিনি নিশ্চয় সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারতেন।

তা ছাড়া শারীরিক প্রতিবন্ধী ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধীর রকমফের রয়েছে। তারা অনেকে পিছিয়ে পড়া এবং বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অংশ। তাদের জন্য বিশেষ কোটা আছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে ‘শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ মাত্র কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদা অনুযায়ী ১ শতাংশ কোটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সঙ্গে হিজড়া জনগোষ্ঠী (প্রজ্ঞাপনে তৃতীয় লিঙ্গ) যোগ থাকায় সংখ্যাটি এমনিতেই কমে যাচ্ছে। এ বিষয়টিতেও সংস্কার করার সুপারিশ করেন তারা।

আমরা চাই, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কোটা আরও বাড়ানো হোক। শুধু কোটা বাড়ালেই হবে না, তাদের কর্মক্ষম করে গড়ে তুলতে হবে। তাদের জন্য বিশেষ কর্মশালা ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এমন কী তাদের জন্য খেলাধুলা, বিনোদনেরও ব্যবস্থা করতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সমাজ-রাষ্ট্রের অংশী হবেন। সমাজ-রাষ্ট্রের সহযোগিতা পেলেই এটা সম্ভব।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ