ফুলে ফুলে ঢেকেছে শহীদ বেদী, ভিন্ন চিত্র স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে
আজ ৫৫তম স্বাধীনতা দিবস, ফুল দিয়ে দেশবাসী শ্রদ্ধা জানিয়েছে ৭১’র বীর শহীদদের। ভালোবাসায় স্মরণ করেছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আত্মত্যাগ।
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, রাজনৈতিক দল, সংগঠনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে। তবে বিগত বছরের তুলনায় এবারের উদযাপনে ছিল ভিন্ন রূপ। আসন্ন ঈদের ছুটি ও রমজান থাকায় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে তুলনামূলক উপস্থিতি কম ছিলো।
বুধবার ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে রক্ত দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনা বীর সেনানীদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি। এরপরই স্মৃতির মিনারে ভালোবাসার ফুল দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূস। পিনপতন নীরবতায় স্মরণ করেন জাতির সূর্য সন্তানদের। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর চৌকস দল জানায় রাষ্ট্রীয় সালাম। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। এরপর শ্রদ্ধা জানান বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা। শ্রদ্ধা জানান উপদেষ্টামণ্ডলী ও কূটনীতিকরাও।
৬টা ১০ মিনিটে শ্রদ্ধা জানাতে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। শিশু-ছেলে-বুড়োসহ সব বয়সী মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় স্মৃতিসৌধ এলাকা। ব্যানার, ফেস্টু নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি, আধা-সরকারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ। ধীরে ধীরে শ্রদ্ধা ও ভালবাসার ফুলে ভরে ওঠে শহীদ বেদি।
তবে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কম থাকায় ভিন্ন আবহ তৈরি হয় স্মৃতিসৌধ এলাকা জুড়ে। অন্যান্য বছরের তুলনায় লোক সমাগম কম ছিল। রমজান মাস ও অধিকাংশ শিল্প কারখানা গতকাল মঙ্গলবার ছুটি হয়ে যাওয়ায় আশেপাশের এলাকার মানুষ ছিল ঘরমুখী। এতে কমে মানুষের চাপ।
শিশু সিন্তানকে নিয়ে ধামরাই থেকে স্মৃতিসৌধে আসা বাবা রিংকু পাল বলেন, সন্তানকে স্বাধীনতা দিবস ও স্মৃতিসৌধ দেখাতে নিয়ে এসেছি। ব্যাস্ততার জন্য মেয়েকে সময় দেয়া হয় না। আজকে যেহেতু সময় পেয়েছি তাই শ্রদ্ধা জানাতে আসলাম। মেয়ে খুব খুশি হয়েছে। শ্রদ্ধা জানানো শিখতে পেরেছে।
শ্যামলী থেকে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী শাকিব হাসনাত বলেন, এবার রোজার কারণে স্মৃতিসৌধে লোকজন তুলনামূলক অনেক কম দেখতে পাচ্ছি। পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে ভোরবেলায় এসেছিলাম আমার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানাতে। অফিসের অনেক সহকর্মী সেহরির পর পরই ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছেন। সকালে স্মৃতিসৌধে সবাইকে নিয়ে ফুল দিতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। পরিবার নিয়ে একটু সময় কাটানো হলো।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের গণপূর্তের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সকালে জনসাধারণের জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করার পর দলে দলে মানুষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। গতকাল থেকে কারখানা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছুটি হয়ে যাওয়ায় আজকে একটু কম মানুষ দেখা যাচ্ছে। তবু শ্রদ্ধার ফুলে ধীরে ধীরে বেদি ভরে যাচ্ছে। তবে শ্রদ্ধা নিবেদনের সুবিধার্থে বেদি থেকে ফুল অপসারণ করা হচ্ছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে