দ্রব্যমূল্য
মন্ত্রণালয় বলছে কমেছে পণ্যের দাম, বাজারে উল্টো চিত্র
কিছুদিন ধরে দামের ঊর্ধগতিতে বাজারে ডিম, পেঁয়াজ, আলু যেন সোনার হরিণ। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে এসব পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে, তবে বাস্তবে বাজারে গিয়ে উল্টো চিত্র দেখা গেছে। গত সপ্তাহে যে দাম ছিলো তার থেকেও বেশি এখন। এসব পণ্যের পাশাপাশি অন্যান্য নিত্যপণ্যতেও দাম কমতে দেখা যায়নি, বরং বেড়েই চলছে।
সরকার বারবার দাম কমার কথা বললেও সিন্ডিকেটসহ নানান জটিলতা দূর করে কোনভাবেই বাজার নিয়ন্ত্রণে নিতে পারছে না বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাজার থেকে এসব সমস্যা দূর করতে না পারার কারণ হিসাবে বর্তমান সরকারের অনভিজ্ঞতাকেই দূষছেন সাধারণ মানুষ। সরকারকে ব্যর্থ ও অকার্যকর প্রমাণের জন্য একটি গোষ্ঠী বাজার নিয়ন্ত্রণে রেখে সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে বলে মনে করেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
সরকার থেকে বিভিন্ন পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও কোনভাবেই বাজারে এর প্রভাব পড়ছে না। সোমবার (১৪ অক্টোবর) সরকার ডিমের দাম খুচরা বাজারে প্রতিটি ১১ টাকা এবং ডজন ১৪০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু রাজধানীর রামপুরা, মিরপুর, বাড্ডা এলাকার বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে ডজনপ্রতি ডিম ১৮০-১৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর কারওয়ান বাজারের বেশিরভাগ ডিমের আড়ৎ ছিল বন্ধ।
অন্যদিকে আলু-পেঁয়াজের দামও খুচরা বাজারে বেড়েছে কেজিতে ২ টাকা। গত সপ্তাহে কারওয়ান বাজারে ৫ কেজি পেঁয়াজ (এক পাল্লা) ৫১০ টাকা থাকলেও তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫২০ থেকে ৫৩০ টাকায়।
গত সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ডিম, পেঁয়াজ ও আলুর দাম কিছুটা কমার কথা বলা হয়েছে। তবে কোন পণ্যটির দাম কী পরিমাণ কমেছে এবং কোন পণ্যটি কী দামে বিক্রি হচ্ছে সেই তথ্য জানানো হয়নি। তবে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ না থাকায় ডিমের দাম বেড়েছে বলে সোমবার জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
এদিকে মঙ্গলবার ডিম উৎপাদক এবং সরবরাহকারীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান জানান, উৎপাদক পর্যায়ে ডিম প্রতি পিস ১০ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা। খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সায় ডিম বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে হিসেবে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি ডজন কিনতে খরচ হবে ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা। সেটাও কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বুধবার থেকে।
এদিকে ডিমের নির্ধারিত দাম বাস্তবায়ন করতে বাজারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সে কারণে তেজগাঁও আড়তের ব্যবসায়ীরা ডিম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে- ডিম, পেঁয়াজ, রসুন কিংবা আলু, কাচাঁ মরিচ আমাদানিকারকরা যে দামে বিক্রি করে তার মধ্যসত্তভোগীর মাধ্যমে পাইকারি বাজারে আসতে কেজিপ্রতি বাড়ে ২০ টাকা, আবার সে পণ্য পাইকার থেকে খুচরা বাজারে যেতে বাড়ে কেজি প্রতি ২ থেকে ৩০ টাকা। সে হিসাবে আমদানি পর্যায়ে কোন পণ্যের দাম ৬০ টাকা হলে তা খুচরা বাজরে বিক্রি হয় ১১০ থেকে ১২০ টাকা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কারওয়ার বাজরের কয়েকজন আড়তদার ভিউজ বাংলাদশকে বলেন, বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারে। এদিকে শ্যামবাজারের আড়ৎদাররা বলছেন, হাতে গোনা কয়েকজন ব্যক্তির সিন্ডিকেটের কাছে ব্যর্থ হতে যাচ্ছে সরকারের সব অর্জন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে