নিয়মবহির্ভূতভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ
রাজশাহীতে প্রতিবাদ করায় সপরিবারে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ
রাজশাহী নগরীতে আরডিএ’র নিয়মবহির্ভূতভাবে বাড়ি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় প্রতিবেশীর বাড়িতে আগুন দিয়ে স্বপরিবারে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এতে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে নির্মাণাধীন ভবন মালিক তাকে স্বপরিবারে হ্ত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ বিষয়ে পুলিশ তাদের অভিযোগ নিচ্ছে না বলেও জানান তারা।
রবিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী দম্পতি মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী শিল্পী বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান বলেন, “রাজশাহী নগরীর মধ্য নওদাপাড়া এলাকায় পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরিরত শহিদুল ইসলাম। তাকে নিয়ম মাফিক তার নির্মাণাধীন ভবন থেকে নির্ধারিত জায়গা ছেড়ে দিয়ে করতে বলা হয়। তিনি আমাদের কথার কর্ণপাত করেননি। বাধ্য হয়ে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) এ লিখিত অভিযোগ দেই। আরডিএ এর সত্যতা পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। চ্যালেঞ্জ করে নির্মাণাধীন ভবন মালিক শহিদুল বলেন, ‘এক ইঞ্চিও জায়গা ছাড়ব না, যত টাকা লাগে খরচ করব’।”
তিনি আরও বলেন, “আরডিএ থেকে শহিদুল বারবার অভিযোগ উঠানোর জন্য হুমকি দেয়। অভিযোগ না উঠানোয় স্থানীয় সন্ত্রাসী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা মনিকে ভাড়া করেন শহিদুল। মনির হুমকির জন্য আমি প্রায় মাসখানেক ধরে বাড়িতে থাকতে পারছি না। এ সুযোগে তারা গত শুক্রবার রাতে মনি এসে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। আর বলে ‘অভিযোগ না উঠালে তোর বাড়িঘর পুড়িয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা শেষ করে দেব’। সেদিন রাতেই বাইরে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আমার বাড়িতে আগুন দেয় মনি ও তার অনুসারীরা। আগুনের লেলিহান শিখায় আমার স্ত্রী ও সন্তান অজ্ঞান হয়ে পরে। স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে তাদেরকে বাধা প্রদান করে সন্ত্রাসীরা। স্থানীয়রা কোনোমতে আমার স্ত্রী ও সন্তানকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে পাঠায়।”
মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘এসব ঘটনার পর থানায় মামলা করতে গেলে মামলা তো দূরের কথা কোনো অভিযোগ নেয়নি। তারা উল্টা থানা থেকে বের করে দেয় আমাকে।’
শিল্পী বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী বা আমার পরিবারের কেউ কিংবা আমি যদি খুন হই তবে এর জন্য দায়ী থাকবে মনি ও শাহিদুল।’
এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান মনি বলেন, সেদিন আমি আমাদের দলের একটি প্রোগ্রামে ছিলাম। কখন কি হয়েছে না হয়েছে এসব বিষয়ে কিছুই জানি না। তিনি শুধু শুধু আমাকে জড়িয়েছেন। শহিদুল ইসলামের সাথে তার সমস্যা চলছে বলে জেনেছি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত শহিদুল ইসলামের মোবাইলে কল করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে শাহমখদুম থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, তারা মামলা করতে এসেছিল কিন্তু কোনো সন্দেহজনক কাউকে বলতে পারেনি এবং তাদের কথাতে অনেক অসঙ্গতিও পাওয়া গেছে। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম কথা বলছেন। তাদের অভিযোগ দিতে বলা হয়েছিল কিন্তু তারা না দিয়ে চলে গেছেন। তারপরও আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে