Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

মাঠপর্যায়ে সিরিঞ্জ পাঠানোর আগে আরও সতর্কতা প্রয়োজন

Editorial  Desk

সম্পাদকীয় ডেস্ক

শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মেডিকেল সিরিঞ্জ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র, যা চিকিৎসাসেবায় খুবই স্পর্শকাতরতার সঙ্গে ব্যবহৃত হয়। সামান্য ভুলে বা সিরিঞ্জ নষ্ট থাকলে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর তা যদি হয় জন্মনিরোধক ব্যবহারে সিরিঞ্জ, তা আরও বেশি যত্নের দাবি রাখে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় গুদাম থেকে মাঠপর্যায়ে নষ্ট সিরিঞ্জ পাঠানো হয়েছিল। এমনকি ঘটনাটি চেপে যাওয়ার চেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে, এমন খবর দেশের স্বাস্থ্য খাতের জন্য সুখকর নয়।

রাজধানীর মহাখালীতে পরিবার-পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় গুদাম অবস্থিত। এই গুদামে বিভিন্ন ধরনের বড়ি, কনডম, ইমপ্লান্ট, ইনজেকশন, সিরিঞ্জসহ নানা ধরনের কিট মজুত থাকে। মূলত এই গুদাম থেকেই ঢাকা বিভাগের সব জেলা-উপজেলা পর্যায়ের স্টোরে পরিবার-পরিকল্পনা সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়।

অধিদপ্তরের একটি সূত্র বলছে, গত ২১ আগস্ট মানিকগঞ্জ জেলার একাধিক উপজেলায় কেন্দ্রীয় গুদাম থেকে পরিবার-পরিকল্পনা সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়। বিভিন্ন উপজেলার সংশ্লিষ্ট স্টোরকিপার তা বুঝে নেন। উপজেলার কর্মকর্তারা পরে জানতে পারেন, কিছু পরিবার-পরিকল্পনা সামগ্রী নষ্ট। জেলার অন্তত হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেয়া নষ্ট সামগ্রী সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। একাধিক সূত্র এই তথ্য সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলার কর্মকর্তারা প্রয়োজনের সময় কার্টন খুলে দেখেন, অটো ডিসপোজিবল সিরিঞ্জের প্যাকেটগুলো নষ্ট। প্রতিটি সিরিঞ্জের প্যাকেটের ওপরের প্লাস্টিক ছেঁড়া। দেখে মনে হয়, সেগুলো অনেক পুরোনো। এগুলো কীভাবে নষ্ট হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।

প্রশ্ন হচ্ছে, অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় গুদামের অন্যান্য সামগ্রী এভাবে নষ্ট হচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উঠেছে। একই সঙ্গে অবহেলা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার কারণে এমনটি হলো কি না, তা খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে।

ইনজেকশনের মাধ্যমে জন্মনিরোধক ব্যবহারে এই সিরিঞ্জ ব্যবহার করা হয়। মূলত পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মীরা এসব সিরিঞ্জ ব্যবহার করেন। যদি এমন নষ্ট সিরিঞ্জ তারা মানবদেহে ব্যবহার করতেন, তাহলে ভুক্তভোগী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তেন। তাই ঘটনাক্রমে দুর্ঘটনা থেকে এবার বেঁচে গেলেও পরবর্তীতে যে এরকম কোনো ঘটনা ঘটবে না, তার নিশ্চয়তা কে দিতে পারে? যে কোনো চিকিৎসামগ্রীই অতিরিক্ত যত্নের সাথে রাখতে হয়। পাঠপর্যায়ে তা পাঠানোর আগে অবশ্যই ভালো করে দেখেশুনে কোনো ত্রুটি আছে কি না দেখে পাঠানো উচিত। এরকম স্পর্শকাতর সরঞ্জাম কেন দীর্ঘদিন গুদামে পড়েছিল তাও দেখার বিষয়। মেয়াদ না দেখে কেন এগুলো পাঠানো হয়েছিল? তদন্ত করে এগুলোই অবশ্য বের করতে হবে।

তাই কেনার সময় সিরিঞ্জ দেখে কেনা হয়েছিল কি না, তা নিশ্চিত হতে হবে। কত সিরিঞ্জ নষ্ট হয়েছে, নষ্ট সিরিঞ্জ কেন মাঠপর্যায়ে পাঠানো হলো, তা জানা দরকার। এভাবে অন্যান্য সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা দরকার। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। আমরাও চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। এবং এ ধরনের কাজে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা হোক।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ