উগান্ডায় রহস্যময় ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’ ভাইরাস: সংক্রমণে শুরু হয় ‘নাচ’
উগান্ডায় অদ্ভুত এক রোগের উদ্ভব হয়েছে, যার নাম ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’। এই রহস্যময় রোগটি স্থানীয় এবং চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের হতবাক করে দিয়েছে। ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’ শব্দটি স্থানীয় ভাষায় ‘নাচের মতো কাঁপা’ বোঝায়। এর সবচেয়ে লক্ষণীয় উপসর্গ হল– অনিয়ন্ত্রিত শরীর কাঁপা, যা নাচের মতো মনে হয়। বলা হচ্ছে ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’ নামক এক নতুন ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এরকমটা হচ্ছে।
ডিঙ্গা ডিঙ্গার প্রধান উপসর্গ:-
অবিরাম শরীর কাঁপা: রোগীদের দেহ এমনভাবে কাঁপে, যা অনেক সময় নাচের মতো দেখায়।
জ্বর ও ক্লান্তি: উচ্চ জ্বর এবং অস্বাভাবিক দুর্বলতা দেখা দেয়।
অচলতার মতো অবস্থা: কিছু ক্ষেত্রে রোগীরা এতটাই অসাড় হয়ে পড়েন যে হাঁটা বা দৈনন্দিন কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
এ পর্যন্ত বুন্ডিবুগিওতে প্রায় ৩০০টি ডিঙ্গা ডিঙ্গা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে বেশিরভাগ রোগী এক সপ্তাহের মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠছেন।
উগান্ডার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিশেষজ্ঞরা এই রোগের কারণ খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছেন। আক্রান্তদের কাছ থেকে সংগৃহীত নমুনাগুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে চিকিৎসকেরা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে রোগীদের চিকিৎসা করছেন, যা ইতিবাচক ফল দিচ্ছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. কিয়িটা ক্রিস্টোফার স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, সঠিক চিকিৎসা পেলে বেশিরভাগ রোগী এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন। আমি মানুষকে অনুরোধ করছি, যাচাইকৃত চিকিৎসার জন্য জেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে যোগাযোগ করুন এবং ভেষজ চিকিৎসা থেকে বিরত থাকুন।’
ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের সঠিক কারণ এখনও অজানা। বিশেষজ্ঞরা ভাইরাল সংক্রমণ থেকে শুরু করে পরিবেশগত কারণ পর্যন্ত বিবেচনা করছেন। এই রোগকে ১৫১৮ সালে ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক ‘ডান্সিং প্লেগ’-এর সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে, যেখানে লোকেরা অনিয়ন্ত্রিতভাবে দিনরাত নাচতেন।
ডিঙ্গা ডিঙ্গার উৎপত্তি এখনও অজানা থাকলেও, স্থানীয় জনগণ এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা এর বিস্তার রোধে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রাথমিক লক্ষণ যেমন জ্বর ও শরীর কাঁপার মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে দ্রুত সেরে ওঠার সম্ভাবনা কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে