নায়করাজের ৮৩তম জন্মদিন আজ

বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাকের ৮৩তম জন্মদিন আজ। ১৯৪২ সালের এই দিনে (২৩ জানুয়ারি) ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন এই মহান অভিনেতা, যার আসল নাম ছিল আব্দুর রাজ্জাক। কলকাতার থিয়েটারে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু। পরবর্তীতে মুম্বাইয়ের ফিল্মালয়ে সিনেমার ওপর ডিপ্লোমা অর্জনের পর কলকাতায় ফিরে ‘শিলালিপি’সহ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি।

১৯৬৪ সালে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন রাজ্জাক। ঢাকায় এসে কামাল আহমেদের ‘উজালা’ সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর সালাউদ্দিন পরিচালিত ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ঢাকাই চলচ্চিত্রে তার যাত্রা শুরু হয়। তবে নায়ক হিসেবে তার পথচলার সূচনা হয় জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ ছবিতে সুচন্দার বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমে।

‘বেহুলা’ ছবিতে সফলতা পাওয়ার পর একের পর এক জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকের হৃদয় জয় করেন রাজ্জাক। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি ঢালিউডে সেরা নায়কের আসন ধরে রাখেন। তার সর্বশেষ সিনেমা ‘মালামতি’, যেখানে তিনি নূতনের বিপরীতে অভিনয় করেন।

রাজ্জাক অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার তালিকায় রয়েছে ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘ময়নামতি’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘পিচ ঢালা পথ’, ‘রংবাজ’, ‘অবুঝ মন’, ‘বেঈমান’, ‘আলোর মিছিল’ ‘ওরা ১১জন’ প্রভৃতি। প্রায় ৩০০ সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা এই মহান শিল্পী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের শুভেচ্ছাদূত হিসেবেও কাজ করেছেন।

নায়ক রাজ্জাক শুধু অভিনয়েই সীমাবদ্ধ ছিলেন না, তিনি প্রযোজনাতেও যুক্ত হন। তার প্রযোজনায় প্রথম সিনেমা ছিল ‘রংবাজ’। এ ছাড়া, ‘অনন্ত প্রেম’ চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি পরিচালনায় আসেন। তার পরিচালিত ও অভিনীত এই ছবি বাংলা চলচ্চিত্রে একটি মাইলফলক হয়ে রয়েছে।

নায়ক রাজ্জাকের অবদান বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে চিরস্মরণীয়। তার সর্বশেষ অভিনীত চলচ্চিত্র ছিল বড় ছেলে বাপ্পারাজের নির্দেশনায় ‘কার্তুজ’। কিংবদন্তি এই অভিনেতা ঢালিউডে নায়করাজ খেতাব পেয়েছিলেন চলচ্চিত্র পত্রিকা চিত্রালীর সম্পাদক আহমদ জামান চৌধুরীর কাছ থেকে। নায়কের রাজা হিসেবে নায়করাজ বলে তাকে সম্বোধন করা হতো।