আদালতের রায়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল
পশ্চিমবঙ্গে আবারও অস্থিরতা। কেউই এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কথা কল্পনাও করতে পারেনি। ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করেছেন সুপ্রিম কোর্ট।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটিই অনিয়মে ভরা ছিল। এই নিয়োগের কোনো বিশ্বাসযোগ্যতাই নেই। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ প্রায় ২৬ হজার (সঠিক সংখ্যা ২৫,৭৫২) চাকরি বাতিল করে জানিয়েছে যে, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে, যারা ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার মাধ্যমে স্কুলের চাকরিতে যোগ দিয়ে অন্য সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন তারা চাইলে আগের চাকরিতে ফিরে যেতে পারবেন।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, যে নিয়োগপ্রাপ্তরা যোগ্য ছিলেন বা অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন সেটা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। যাদের নিয়োগ ২০১৬ সালের এসএসসির মাধ্যমে হয়েছিল, তারা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ্যতা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।
এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মামলার শুনানি শেষ হওয়ার পর আদালত রায়ের ঘোষণা স্থগিত রেখেছিল। বুধবার জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এই মামলার রায় ঘোষণা করবে। নির্ধারিত সময়েই রায় ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। বিষয়টি আদালতে গেলে কলকাতা হাইকোর্ট পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। এর ফলে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি চলে যায়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিল। সর্বোচ্চ আদালতে এই মামলার শুনানি শেষ হয় ১০ ফেব্রুয়ারি। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের তালিকায় জানানো হয় যে, বৃহস্পতিবার সকালেই ২৬,০০০ চাকরি বাতিলের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে, যা নির্ধারিত সময়েই জানানো হয়।
অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে জরুরি বৈঠক করছে। সূত্রের খবর, রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের এক বছর আগে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার বড় ধাক্কা খেল।
অন্যদিকে, যারা প্রকৃত যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছিলেন, তারাও এই রায়ের শিকার হলেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে