ময়নামতিতে বৌদ্ধ সভ্যতার নতুন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কারে চাঞ্চল্য
কুমিল্লার ময়নামতিতে আরো একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কার হয়েছে। আবিষ্কৃত পুরোনো ঘরের দেয়াল ও প্রাচীন কাঠামোর অংশটিকে শালবন বিহারের প্রত্ননিদর্শন বলে ধারণা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের, যা ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শতাব্দীতে স্থাপিত হয়েছিল।
এটি ময়নামতির বৌদ্ধ সভ্যতার নিদর্শন একটি বৌদ্ধ মন্দির বলে সুস্পষ্ট অনুমান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টডিয়ান মো. শাহিন আলম।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের চারাবাড়িতে বসতঘর নির্মাণে মাটি খননের সময় কয়েকদিন আগে বের হয়ে আসে নিদর্শনটির উপরিভাগ। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। কৌতূহলী মানুষ প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছেন প্রত্নস্থলটিতে।
খবর পেয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত ও খনন শুরু করেছে। তাদের তত্ত্বাবধানে চলছে নিদর্শনটি পুরোপুরি উদ্ধারের কাজ।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি কমপক্ষে আট শতাব্দী পুরোনো স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ। তবে চূড়ান্ত তথ্য নিশ্চিত হতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের বিশ্লেষণ ও গবেষণা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের আশা, এই আবিষ্কার ধর্মপুর গ্রামের ইতিহাসের গৌরবময় অধ্যায় উন্মোচন করবে। ভবিষ্যতে এটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র হিসেবেও পরিচিতি পেতে পারে।
ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টডিয়ান মো. শাহিন আলম বলেন, 'আমরা মাত্র খনন শুরু করেছি। প্রত্নস্থাপনাটি এখনো পুরো উন্মোচিত হয়নি। তাই অতীতে এটি কী ছিল তা এখনো নিধারণ করা যায়নি। তবে শালবন বিহারসহ ওই সময়ের অন্য স্থাপনাগুলোর সাথে এর মিল রয়েছে। তাই এটি কুমিল্লার প্রত্নতত্ত্বের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে আশা করা যায়'।
কুমিল্লার ময়নামতি এলাকায় এখন পর্যন্ত ৫৩টি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন উন্মোচিত হয়েছে। এটির খনন পুরোপুরি শেষ হলে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৫৪ এ।
কুমিল্লা ছাড়া বিশ্বের অন্য কোথাও একসাথে এতো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়ার ইতিহাস নেই বলেও জানান প্রত্নতত্ত্ববিদরা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে