রাজস্ব আয় বাড়াতে অটোমেশনের বিকল্প নেই-অর্থ প্রতিমন্ত্রী
রাজস্ব আয় বাড়াতে অটোমেশনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। তিনি বলেন, বর্তমানে সবাই অনলাইনে রিটার্ন সাবমিট করতে পারে। বাংলাদেশের ইনফরমাল সেক্টর অনেক বড় বিধায় এই সেক্টর থেকে কর আদায় গুরত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে, বেসরকারি খাত আমাদের সাথে থেকে সহায়তা করতে পারে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকার একটি হোটেললে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) আয়োজিত 'বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বাড়ানোর প্রয়োজনীয় রূপরেখা' শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা রাহমাতুল মুনিম ও এফবিসিসিআই'র প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই'র নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পিআরআই'র চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, মানি মার্কেট, বেসরকারি ও সরকারি ঋণ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ক্যাপিটাল মার্কেট নিয়ে আরো আলোচনা করা দরকার। কিভাবে আরো বেশি ভালো কোম্পানি মার্কেটে আসে, সে বিষয়ে সকলকে সচেষ্ট হতে হবে। তাহলে মানি মার্কেটের ওপর চাপ কমবে। ক্যাপিটাল মার্কেট, ইক্যুইটি মার্কেট ও বন্ড মার্কেট বৃদ্ধি করা জরুরি।
অনুষ্ঠানে মেইড ইন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জোড় দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, দেশের বাজারে বিভিন্ন দেশের পণ্য দেখলে আমার কাছে খারাপ লাগে। শিল্পকে সাপোর্ট করতে গিয়ে অনেক টাকা অব্যাহতি দেয় এনবিআর। এতে রাজস্ব হারালেও দেশের কর্মসংস্থান, শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। এখনও মেইড ইন বাংলাদেশ কনসেপ্টকে এগিয়ে নিতে উৎপাদনমুখী খাত খুঁজে খুঁজে সাপোর্ট দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, করপোরেট করহার বছরের পর বছর ধরে কমিয়ে আনা হয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের স্বার্থে। তবে অনেকেই কর দিতে চায় না। করছাড় পেতে তদবির করে। সব সমস্যা ব্যবসায়ীরা সহ্য করতে পারলেও কর দেয়াকে তারা বোঝা মনে করে। এ মানসিকতা থেকে সরে আসতে হবে। এছাড়া অটোমেশন চলছে এবং এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এসময় এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ব্যবসায়ীরা কর দিতে চায়, তবে কোন ভোগান্তি চায় না। ইনফরমাল সেক্টরকে ফরমাল সেক্টরে আনতে হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্য এখন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিস্তৃত। তাদেরকে করের আওতায় আনতে হবে। যারা কর দেয় তাদের উপর বেশি চাপ না দিয়ে নতুন করদাতা সনাক্ত করার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া অটোমেশনের কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
মূল প্রবন্ধে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, স্বল্প মেয়াদে আর্থিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য কর রাজস্ব বৃদ্ধি করা অপরিহার্য। আরো ব্যাপক সংস্কার বাস্তবায়ন না করলে ২০৪১ সালের শেষ হওয়া অর্থবছরের মধ্যে প্রায় ৫০ ট্রিলিয়ন টাকার রাজস্ব ক্ষতি হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন পিআরআই'র ভাইস চেয়ারম্যান ড. সাদিক আহমেদ, এমসিসিআই'র প্রেসিডেন্ট কামরান টি রহমান, সিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, ডিসিসিআই'র প্রেসিডেন্ট আশরাফ আহমেদসহ প্যানেল আলোচকরা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে