কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে থাকছে না বাংলাদেশের ছবি
কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ৩০ বছরে পদার্পণ করল। প্রতি বছর চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য মুখিয়ে থাকেন সিনেপ্রেমীরা। এবারও যে কলকাতা শহরে উন্মাদনা তুঙ্গে তা বলাই বাহুল্য। তবে এবার কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের কোনো ছবি নেই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও ধারাবাহিক অস্থিরতার জেরে উত্তাল হয়েছে রাজনীতি। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেশ কয়েক মাস পার করে ফেললেও স্বাভাবিক হয়নি ভারত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক।
নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেশ কয়েক মাস পার করে ফেললেও স্বাভাবিক হয়নি ভারত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক। এই পরিস্থিতে বাংলাদেশের ছবি না থাকায় কলকাতার একাংশের বাঙালি মনে করছেন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বাংলা ছবির প্রতিনিধিত্ব কমল এবং ওপার বাংলার সঙ্গে যে সিনেমার মাফরত সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের ধারাবাহিকতা ছিল তাতে ছেদ পড়ল।
উল্লেখ্য, প্রত্যেক বছরই কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের ছবির জনপ্রিয়তা নজরে পড়ে। বাংলাদেশের স্বনামধন্য পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের উপস্থিতি কলকাতার অন্য মাত্রা যোগ করে। জয়া আহসান, চঞ্চল চৌধুরী, মোশারফ করিমদের মতো পদ্মাপারের দক্ষ শিল্পীদের নিয়ে উন্মাদনা কম থাকে না কলকাতার নন্দন চত্বরে; কিন্তু এবার যে সেই চিত্রটা বদলাচ্ছে তা চলচ্চিত্র উৎসবের সংবাদ সম্মেলনের পর থেকেই স্পষ্ট হয়েছে।
গত শুক্রবার সাংবাদিকদের বৈঠকেই উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে জাঁকজমকের এক ঝলক ফুটে ওঠে। স্বনামধন্য চিত্রপরিচালক তপন সিংহকে শ্রদ্ধা জানিয়েই এবারের উৎসবের সূচনা হবে। ৩০তম চলচ্চিত্র উৎসবের প্রথম ছবি তপন সিংহের ‘গল্প হলেও সত্যি’। ২ হাজার ৪৫৯টি ছবির মনোনয়ন জমা পড়েছে এবার প্রতিযোগিতা বিভাগে। মনোনীত হয়েছে ৩০টি শর্ট ফিল্ম। তথ্যচিত্রসহ ৪২টি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ফিচার ছবি। এ ছাড়াও ১০৩টি ছবি প্রদর্শিত হবে, যা কোনো প্রতিযোগিতার অংশ নয়।
এবারে ফোকাস দেশ হিসেবে থাকছে ফ্রান্স। তবে ৩০তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণকারী ২৯টি দেশের মধ্যে নেই বাংলাদেশের নাম। ৩০তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব চলবে ৪ থেকে ১১ ডিসেম্বর অবধি। এ বছর চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারপারসন পরিচালক গৌতম ঘোষকে এবং অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় থাকছেন কো-চেয়ারম্যান হিসেবে। উৎসবের থিম সংয়ের ভাবনা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবং গানের কথা লিখেছেন ও গেয়েছেন নচিকেতা চক্রবর্তী। গত বছর থিম সং শোনা গিয়েছিল অরিজিৎ সিংয়ের কণ্ঠে। ৪ ডিসেম্বর জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে।
বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির জন্যই কি বাংলাদেশের ছবি থাকছে না এবারের উৎসবে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি কেউই। কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার পর চলচ্চিত্র উৎসবেও নেই বাংলাদেশ। কলকাতার বিদ্বজ্জনদের একাংশ মনে করছে এই দূরত্ব বাঙালির সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ও ধারাবাহিক সুসম্পর্কে অনেকটাই প্রভাব ফেলতে পারে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে