Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

উপর থেকে ‘কমিশন’ বসিয়ে কোনো সংবিধান লেখা যায় না

Farhad  Mazhar

ফরহাদ মজহার

মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

ণঅভ্যুত্থানের পর থেকে রাষ্ট্রপতির অপসারণ ও সংবিধান পুনর্লিখন নিয়ে সবচেয়ে সোচ্চার ছিলেন কবি ও ভাবুক ফরহাদ মজহার। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘পদত্যাগপত্র’ সবার আগে দেখতে চেয়েছিলেন তিনি; কিন্তু তখন তাকে কেউ সেই ‘পদত্যাগপত্র’ দেখাতে পারেনি। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রীর ‘পদত্যাগপত্র’ তাঁর কাছে নেই। এ নিয়ে নতুন করে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হচ্ছে, এবং ছাত্ররা রাষ্ট্রপতির ‘পদত্যাগ’ দাবি করেছেন। রাষ্ট্রপতির অপসারণ, গঠনতন্ত্র প্রণয়ন, ছাত্র ও তরুণদের চিন্তার জগত এবং বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কীরকম হতে পারে তা নিয়ে ‘ভিউজ বাংলাদেশ’ এর সঙ্গে কথা বলেছেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গিরীশ গৈরিককামরুল আহসান

ভিউজ বাংলাদেশ: সম্প্রতি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর ‘পদত্যাগপত্র’ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে আপনিই প্রথম এ নিয়ে কথা বলেছেন। এ নিয়ে এখন রাষ্ট্রপতির ‘পদত্যাগ’ দাবি করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতির ‘পদত্যাগ’ কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

ফরহাদ মজহার: আমি তো প্রথম দিন থেকেই বলছি রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে সরিয়ে দিতে হবে। এই রাষ্ট্রপতি ফ্যাসিস্ট সংবিধানের রাষ্ট্রপতি এবং শেখ হাসিনা দ্বারা নিয়োজিত। শেখ হাসিনার সবচেয়ে শক্তিশালী খুঁটি। সুতরাং শেখ হাসিনার অধীনে পুরো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নেয়ার জন্য এই রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ গ্রহণ করা হয়েছে। খেয়াল করেন, কতগুলো অপরাধ হয়েছে। যারা এই কাজ করেছেন, তারা মারাত্মকভাবে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।

৫ আগস্টের পর এই ঘটনা ঘটালেন যারা, একটি নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা না দিয়ে তারা ফ্যাসিস্ট সংবিধানের অধীনে, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ গ্রহণ করলেন, যারা এ কাজটা করেছেন, জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হবেই। এখন যে জটিলতাটা সৃষ্টি হয়েছে, সংবিধানের মধ্যে ঢোকানোর পরেও এর কোনো সাংবিধানিক সমাধান তারা দিতে পারেননি এবং দেয়া ইমপসিবল। কেন ইমপসিবল? প্রথম কথা হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারজাতীয় কোনো সরকার বাংলাদেশের সংবিধানে নেই। ফলে প্রথম অবৈধ কাজ এটা করেছেন। দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী যাওয়ার পরে আপনি সংসদ বাদ দিয়ে দিয়েছেন। ফলে সংসদও নেই যে, আপনি সংসদে গিয়ে নতুন কোনো প্রধানমন্ত্রী তৈরি করবেন।

এই যে জগাখিচুড়ি তৈরি করলেন, এই জগাখিচুড়ি সমাধানের তো কোনো পথ নেই। শুরু থেকে আমি যে প্রশ্নটা করেছিলাম, আপনারা দাবি করছেন বা এই সরকার দাবি করছে যে, শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র দিয়েছে। তো আমি বলেছি পদত্যাগপত্র কই? আমার ভিডিও আছে। তখন কেউ দেখাতে পারেননি। তখন মতিউর রহমান চৌধুরীরও কোনো হাকডাক আমরা শুনিনি। এখন রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎকার নিয়ে তিনি বলছেন পদত্যাগপত্র কোথাও নেই। তাহলে আমি মতিউর রহমান ভাইকে জিজ্ঞেস করব, তিনি এতদিন কোথায় ছিলেন? শুরু থেকেই তো তার এ কথা বলা উচিত ছিল। আমি তাকে পছন্দ করি, তিনি বিচক্ষণ সাংবাদিক; কিন্তু তার সাক্ষাৎকার পড়ে আমার মনে হয়েছে তিনি প্রেসিডেন্টের পক্ষে উকালতি করছেন। একটু আগে আমাকে একজন ফোন করে জানালেন, তিনি নাকি আরেকটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, যেখানে দাবি করছেন তিনি প্রেসিডেন্ট থাকবেন।

এটা যদি তিনি দাবি করে থাকেন, আমি তাকে জিজ্ঞেস করব, প্রেসিডেন্ট কীসের ভিত্তিতে থাকবেন? কোন যুক্তিতে থাকবেন? আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘তিনি মিথ্যা কথা বলেছেন এবং তিনি সংবিধানের শপথ ভঙ্গ করেছেন’। তাহলে উনি কী করে থাকেন! তাহলে আমি মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রশ্ন করতে চাই, তাহলে কি আপনি এই ফ্যাসিস্ট প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতায় রাখতে চান? কেন? যুক্তিটা কী? আপনাদের তো একটি যুক্তি থাকতে হবে। ফলে আমরা পরিস্থিতিটা জটিল করে ফেলছি। এখন ইতিবাচক দিকটি হলো, শুরুতে ছাত্ররা বুঝতে না পারলেও এখন ছাত্ররা পরিষ্কার যে, চুপ্পুকে যেতে হবে। বাংলাদেশে একটি নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করতে হবে। জনগণ করবে। ওপর থেকে কোনো কমিশন বানিয়ে এটা হবে না। তারই প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু করতে হবে। এই জায়গায় আমরা আছি।

ভিউজ বাংলাদেশ: মতিউর রহমান চৌধুরীর যে কথা নিয়ে এখন তর্ক-বিতর্ক চলছে, তার সমাধান কি আমাদের সংবিধানে আছে?

ফরহাদ মজহার: সংবিধানে সমাধান থাকবে কেন? সংবিধান মেনে কি গণঅভ্যুত্থান হয়েছে? সংবিধান মেনে যদি গণঅভ্যুত্থান না হয়, তাহলে তার সমাধান সংবিধানে থাকবে কেন? সমস্যা তো সংবিধান না, সমস্যা রাজনৈতিক। বাংলাদেশের সমস্যা রাজনৈতিক, সংবিধানের সঙ্গে কোনো সমস্যা নেই। ফলে এই সংবিধান ফেলে দিতে হবে। গণঅভ্যুত্থান মানেই হলো এই গণঅভ্যুত্থান এই সংবিধানকে বাতিল করে দিয়েছে। ফলে এটাকে জোর করে ঢোকানোর কোনো যুক্তি নেই। অন্তবর্তীকালীন সরকারের এখন একটিই কাজ- নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা।

ভিউজ বাংলাদেশ: আমরা দেখেছি, সংবিধান সংস্কারের জন্য কমিশন গঠন করা হয়েছে। তার প্রধান করা হয়েছে অধ্যাপক আলী রিয়াজকে। আলী রিয়াজ একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, তিনি সংবিধান-বিশেষজ্ঞ নন, তার পক্ষে কি সংবিধান সংস্কার সম্ভব?

ফরহাদ মজহার: প্রথম কথা হচ্ছে, আলী রিয়াজ সংবিধান-বিশেষজ্ঞ না বিশেষজ্ঞ নয় এটা অযৌক্তিক কথা। তিনি বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা করেন, তার সঙ্গে আমার অনেক অমিল থাকতে পারে, সেটা অন্য তর্ক। তাকে রাষ্ট্র দায়িত্ব দিয়েছে; কিন্তু এই যে ওপর থেকে কমিশন বানিয়ে সংবিধান লেখা, এটাই তো গণবিরোধী কাজ। শব্দটা কিন্তু সংবিধান না, গঠনতন্ত্র- গঠনতন্ত্র প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় জনগণকে অংশগ্রহণ করতে হয়। ওপর থেকে কমিশন বসিয়ে কোনো সংবিধান লেখা যায় না। সংবিধান পুনর্লিখনের কোনো চিন্তা বা ধারণা অযৌক্তিক। জনগণের অভিপ্রায়কেই গঠনতন্ত্র বলে।

জনগণ যেমন করে নিজেকে গড়ে নিতে চায় সেই অভিপ্রায়কে ধারণ করাটাই কনস্টিটিউশন। ফলে আপনি জনগণের কাছে যাবেন। জনগণকে জিজ্ঞাসা করেন- জনগণ কী চায়? নিচু স্তর থেকে ওপর স্তর পর্যন্ত আপনি জনগণকে যুক্ত করেন। তার কাছে শুনেন, সে কী চায়? তাদের কথার সারমর্ম করেন। সারমর্ম করে আপনি কী করবেন? একটি খসড়া গঠনতন্ত্র তৈরি করবেন। সেই খসড়া গঠনতন্ত্র আপনি কী করবেন? একটি গণপরিষদ নির্বাচনের পরে সেই গণপরিষদকে দেবেন। গণপরিষদ সেটা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করবে। তর্ক-বিতর্কের পরে সেই গঠনতন্ত্র তারা পাশ করবে। তারপরে রেফারেন্ডাম করবেন। রেফারেন্ডামে যখন যাবে, জনগণ যখন দেখবে এটা তাদের অভিপ্রায়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ, তখন তারা এই গঠনতন্ত্র গ্রহণ করবে। তারপরে সরকার নির্বাচন হবে। তাহলে প্রথমে হবে কি গণপরিষদ নির্বাচন। তারপরে হবে সরকার নির্বাচন।

ভিউজ বাংলাদেশ: আপনার দর্শন অনুযায়ী ’৭২ সংবিধান থেকেই আমাদের সাংবিধানিক ঝামেলা শুরু হয়েছে। এবং আপনার কথা মানলে গত ৫২ বছর ধরেই আমরা একটি অবৈধ সংবিধানের মধ্যে ছিলাম। এখন সামনে এগোতে হলে গোড়া থেকেই এর সমাধান প্রয়োজন। মানে ১৯৭২-এর সংবিধানই পরিবর্তন প্রয়োজন। তো এই ব্যাপক পরিবর্তন কীভাবে সম্ভব?

ফরহাদ মজহার: জনগণকে যুক্ত করাতে হবে। জনগণকে বোঝাতে হবে। জনগণকে কথা বলতে দিতে হবে। আমি অনেক দিন এ নিয়ে কথা বলছি; কিন্তু আমার কথা কারও কাছে পৌঁছাতে দেয়া হয়নি। সংবিধান তো কেউ লিখে না, জনগণের অভিপ্রায়ই সংবিধান। তো জনগণের কাছে তো যেতে হবে। আমি বা রিয়াজ কেউ তো সংবিধান লিখব না। জনগণ লিখবে। সুতরাং জনগণের কাছে যেতে হবে। উপজেলা স্তর থেকে জেলা স্তর, জেলা স্তর থেকে বিভাগীয় স্তর, বিভাগীয় স্তর থেকে শহর- সবক্ষেত্রের জনগণের কথা শুনতে হবে। জনগণ কী বলে সব শুনতে হবে। ওপর থেকে সংবিধান লিখবেন, এটা পৃথিবীর কোথাও হয় না। এটা শুনলে হাসে লোকে। ঘোড়াও হাসবে এটা শুনলে।

এটা সাহিত্য নাকি যে, আপনি এখানে বসে সাহিত্য করবেন। এই যে ধারণা হয়েছে, ড. কামাল হোসেন সংবিধান লিখে দিচ্ছেন, এটা হতে পারে? আমি কি পারি না একটি সংবিধান লিখে দিতে? আমি লিখে দিলে হবে? এর জন্য জনগণের কাছে যেতে হবে। বস্তিতে যেতে হবে। কৃষক-শ্রমিকের কাছে যেতে হবে। ছাত্র-জনতার কাছে যেতে হবে। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ যা অভিপ্রায় প্রকাশ করে, সেটা খসড়া আকারে লিখে গণপরিষদে পাস করতে হবে। এটা তো আলী রিয়াজ বা ফরহাদ মজহারের লেখার ব্যাপার না। কোনো কমিশনের ব্যাপার না। কমিশন দিয়ে কী করবেন আপনি? কমিশনের তো কোনো মূল্য নেই। এটা জনগণের অন্তর্বর্তীকালীন বিষয়। আমরা বড়জোর জনগণকে অন্তর্ভুক্ত করাতে পারি। এর বাইরে আর কোনো কাজ নেই। এখানে জনগণকে অংশগ্রহণ করাতে হবে।

ভিউজ বাংলাদেশ: আপনার কি মনে হয় আমরা জনগণকে এই ব্যাপক অলাপে আনতে পারছি?

ফরহাদ মজহার: অবশ্যই, আমি যদি পারি অন্যরা কেন পারবে না? আমি তো এক হাতে লড়াই করছি। এখন বলা হচ্ছে, ছেলেরা নাকি আমার কথা শুনে। আপনি যদি সঠিক কথা বলেন যে, কোনো বুদ্ধিমান-জ্ঞানী মানুষ আপনার কথা শুনবে। আপনি তাহলে সে কথা বলেন। ছেলেরা যে আমার কথা শোনে এ জন্য না যে আমি তাদের চিনি। কথা বলা ছাড়া তো আমার কোনো ক্ষমতা নেই। তরুণরা যদি আমার কথায় অনুপ্রাণিত বোধ করে, এটা তো তাদের গুণ, আমার কোনো গুণ না। সুতরাং আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে, সঠিক বুদ্ধিদীপ্ত ভূমিকা পালন করা। তরুণরা আমাদের সমালোচনা করেন। করছে না? করে তো। তো সমালোচনা করলেই কি আমরা হতাশ হয়ে যাচ্ছি? আমি কথা বলি, বোঝানোর চেষ্টা করি। এটা আমার কাজ। সত্যিকার, সঠিকভাবে চিন্তা করলে তার প্রভাব সমাজে পড়ে। পৃথিবীতে বড় বড় বিপ্লব হয়েছে অল্প কিছু লোকের চিন্তার ভিত্তিতে। সেটা ফরাসি বিপ্লবে ভলতেয়ার হতে পারে, রুশ বিপ্লবে লেনিন হতে পারে, মাও সেতুংয়ের চিন্তায় বিপ্লব হয়েছে চীনে। বড় কোনো মানুষের চিন্তা ছাড়া কখনোই বড় কোনো বিপ্লব হয়নি। ফলে আমার চিন্তার যদি ক্ষুদ্র কোনো অবদান থেকে থাকে, সেটা হয়তো থাকতে পারে। সেটা আপনারা বিচার করবেন। আমি তো জানি না। আমি তো আমার কথা বলে যাব।

ভিউজ বাংলাদেশ: গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর আগে আপনি একটি বই লিখেছিলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান ও গঠন’ যেটা অনেকটা প্রফেসি বলা যেতে পারে। আপনি যেভাবে বলেছেন ঘটনাগুলো সেভাবে ঘটেছে।

ফরহাদ মজহার: আমি জাস্ট সিম্পলি চিন্তা করেছি আমাদের দেশে ঘটনাগুলো কী ঘটছে, সেখান থেকে উত্তরণের পথ কী, সেভাবে লিখেছি। এখন আমাদের দেশে যা ঘটছে, তা নিয়ে একটি বই লিখছি, তার নাম হচ্ছে ‘গঠন’। কারণ, আমরা সংবিধান সংবিধান বলে বিরক্ত হয়ে গেছি। শব্দটা কিন্তু সংবিধান না, শব্দটা হচ্ছে গঠনতন্ত্র। ফলে সেটা নিয়ে আমি এখন লিখছি। আরও অনেক বই লেখার পরিকল্পনা আছে, ইনশাল্লাহ। যদি সুযোগ পাই। জানি না কতদিন সময় পাব।

ভিউজ বাংলাদেশ: সবাই সংবিধান নিয়ে আলাপ করছেন; কিন্তু আপনি শব্দটি ব্যবহার করতে চাচ্ছেন গঠন। সংবিধানের চেয়ে রাষ্ট্রগঠন নিয়ে আপনার আলাপ বেশি; কিন্তু কেউ তো গঠন নিয়ে কথা বলছেন না।

ফরহাদ মজহার: না, কেউ করছেন না। অতএব, আসুন আমরা আলাপ করি না। আমি তো শিখতে চাই। আমরা কেউ মহাপণ্ডিত হয়ে জন্মগ্রহণ করিনি। যদি শেখার সুযোগ পাই, আমি শিখব। প্রত্যেকের কাছ থেকে শিখব। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের মানুষ আছে। তাদের সবার কাছে শেখার আছে। এটা তো আমাদের দেশ, সবাইকে নিয়েই দেশটি বানাতে হবে। কাউকে বাদ দিয়ে তো আমরা দেশ বানাতে পারব না। চিন্তার ক্ষেত্রে প্রত্যেকের অবদান আছে। প্রত্যেকেই নানা ক্ষেত্রে তার অবদান রাখছে। আনন্দের বিষয় হলো আমাদের একটি তরুণ সমাজ গড়ে উঠেছে, যারা আমাদের লেখাপত্র পড়ে, চিন্তা করে, ওদের নিজেদের মত প্রকাশ করে। তারা নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আমরা বললেই যে তারা আমাদের মাথায় তুলে নাচে তা নয়। এই যে একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে, এতে আমি সাংঘাতিক আশাবাদী। আশা করি, আমরা খুব ভালো একটি জায়গায় পৌঁছাব। এর আগে তো তরুণরা রাজনীতিতে আগ্রহী ছিল না। এখন তো দেখছি আগ্রহী। এবং খুবই সুন্দর সুন্দর কথা বলে। তারা যে চিন্তা করছে, আমরা তো তা পারতাম না।

ভিউজ বাংলাদেশ: আমাদের তরুণদের নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

ফরহাদ মজহার: তারা আমাদের চাইতে এগিয়ে আছে। আমরা চিন্তার জগতের যেসব দেয়াল ভেঙে দিয়েছি, যেসব দ্বার খুলে দিয়েছি, এতে তো তারা উপকৃত হয়েছে। আমরা যেসব বড় বড় চিন্তকদের চিন্তা তাদের সামনে হাজির করেছি তারা তো অল্প বয়সে তা পড়ে ফেলেছে। ফলে তারা তো আমাদের চেয়ে এগিয়ে যাবেই। এটাই স্বাভাবিক। এবং দ্রুত বেগে যাবে। আমাদের চেয়ে দ্রুত বেগে এগিয়ে যাবে। আমরা যখন দেখব আমাদের তরুণরা আমাদের অতিক্রম করে গেছে এর চাইতে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না। যে কোনো বুদ্ধিজীবীর স্বপ্ন এটাই যে তরুণরা তাদের অতিক্রম করে যাবে। আমি নিশ্চিত, বাংলাদেশের চিন্তার জগতে একটি বড় ধরনের বিপ্লব আসছে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ