Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

কারখানা বন্ধ করে বিক্ষোভ নয়

Editorial  Desk

সম্পাদকীয় ডেস্ক

বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ষুধ একটি জীবনরক্ষাকারী সফিস্টিকেটেড পণ্য। ওষুধ এমন জরুরি এক পণ্যদ্রব্য, যা বাণিজ্যের চেয়ে সেবার ওপরই নির্ভরশীল বেশি; কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ওষুধ এক পণ্যই বটে, এবং তা কারখানায় উৎপাদন হয়, তার জন্য শ্রমিক দরকার হয়। কিছু জরুরি ওষুধ আছে যা জীবন-মরণের বিষয়। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, প্রসূতি নারী, শিশু ও ক্যান্সার রোগীদের ওষুধ নিয়মিতই পেতে হয়, তা না হলে যে কোনো সময়ই যে কেনো বিপদ ঘটতে পারে।

গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, বর্তমানে সারা দেশে ১৯টির বেশি ওষুধ কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভ চলছে। এর জেরে কার্যত বন্ধ রয়েছে ওষুধ উৎপাদন কার্যক্রম। এ অবস্থাকে জাতীয় সংকট উল্লেখ করে সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা চেয়েছেন ওষুধশিল্প মালিকরা।

ওষুধশিল্প মালিকরা বলছেন, বর্তমানে মজুত থাকা ওষুধ দিয়ে সরবরাহ কাজ চলছে। এ অচলাবস্থা বেশি সময় থাকলে দেশে ওষুধ সরবরাহে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে। তাতে বিপুলসংখ্যক মানুষের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হবে। এ কারণে অবিলম্বে সব কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম পুরোদমে চালুর দাবি জানিয়েছেন তারা। ওষুধশিল্প কারখানার নিরাপত্তা বিষয়ে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওষুধশিল্প মালিকরা।

গত মাসের চতুর্থ সপ্তাহ থেকে বিক্ষোভ করছেন ওষুধশিল্পের বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিক। তারা ২১ দফা দাবি আদায়ের জন্য এই বিক্ষোভ করছেন। তাদের অন্যতম দাবি হলো বেতন বৃদ্ধি, চাকরি নিয়মিতকরণ ও দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি। শ্রমিকদের দাবি যুক্তিযুক্ত কি না, তা অবশ্যই ওষুধশিল্প মালিকদের ভেবে দেখতে হবে, পাশাপাশি বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকেও (এফবিসিসিআই) এই বিষয় জরুরি বিবেচনা করতে হবে।

দীর্ঘদিন ওষুধ কারখানা বন্ধ রেখে কোনোভাবেই বিক্ষোভ চলতে পারে না। তাহলে তা নানাভাবেই এই ওষুধশিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সবচেয়ে বড় কথা, এতে রোগীরাই ভুগবে বেশি। তাই শ্রমিকদের সব ধরনের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান ওষুধশিল্প মালিকরা। তারা বলেন, দাবি আদায়ের নামে মিছিল, ঘেরাও বা ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি আইনসিদ্ধ ও যথাযথ প্রক্রিয়া নয়।

বর্তমানে বাংলাদেশে ওষুধ শিল্পের অভ্যন্তরীণ বাজার প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে এবং আন্তর্জাতিক বাজার ৬৫০ কোটি টাকারও বেশি। এ খাতে প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৯ শতাংশের ওপরে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বর্তমানে সরকারি তালিকাভুক্ত ৮৫০টি ছোট-বড় ওষুধ কারখানা ও ২৬৯টি অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্ততকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা দেশের চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করে বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশে ওষুধ রপ্তানি করে আসছে।

আমরা চাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে এই দিকে নজর দিক। এমন একটি জরুরি ইস্যুতে দেরি করা ঠিক হবে না।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ