অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের অর্জিত মুনাফা বা সুদ করমুক্ত
অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের অর্জিত মুনাফা বা সুদের ওপর কোন কর দিতে হবে না। সোমবার (২২ এপ্রিল) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ বিষয়টি জানা গেছে। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
আয়কর আইন ২০২৩-এর ধারা ৭৬ এর উপ-ধারার (২) ক্ষমতাবলে এই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সেখানে উল্লেখ আছে, অন্য কোন আইনে কোন প্রকার কর অব্যাহতি প্রদান করা হলে সেই কর অব্যাহতি ততক্ষণ পর্যন্ত কার্যকর হবেনা, যতক্ষণ পর্যন্ত না এনবিআর সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অব্যাহতি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এরআগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের তৈরি করা অফশোর ব্যাংকিং আইন ২০২৪ এর খসড়া প্রস্তুত করে। তবে খসড়া বিধানে স্টেকহোল্ডার হিসেবে এনবিআরের মতামত অগ্রাহ্য করা হয়েছিল।
জানা গেছে, অফশোর ব্যাংক আইন ২০২৪-এর খসড়া অনুমোদনের আগে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত যৌথ পরামর্শ সভায় আয়কর সংক্রান্ত প্রস্তাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রতিনিধি আপত্তি জানিয়েছিলেন। সেই আপত্তি শুধুমাত্র মতামত হিসেবেই গ্রহণ করে হয়েছিল, আমলে নেওয়া হয়নি।
পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পক্ষ থেকে এনবিআরের কাছে খসড়া আইনের ‘কর ও শুল্ক হইতে অব্যাহতি’ সংক্রান্ত ধারার বিষয়ে মতামত জানতে চায়। এরপর এনবিআরের আয়কর অনুবিভাগের পক্ষ থেকে মতামত পাঠানো হয়েছে।
মতামতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি সাপেক্ষে অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসায় অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট কর্তৃক আমানতকারী বা বৈদেশিক ঋণদাতাদের প্রদেয় সুদ বা মুনাফা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ করমুক্ত থাকবে প্রতিস্থাপনের অনুরোধ করা হয়েছে।
অফশোর ব্যাংকিংয়ের খসড়া আইনের দফা ১৩(ক)-তে বলা হয়েছে, অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসায় অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট কর্তৃক অর্জিত সুদ বা মুনাফার উপর আয়কর বা অন্য কোন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কর আরোপ করা যাবে না।
এর আগে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু হওয়ার পর কর অব্যাহতি নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল। পেনশন স্কিমের আইন অনুযায়ী, স্কিমের টাকা কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত। তবে আয়কর আইনের ক্ষমতাবলে যে সকল খাত অব্যাহতিপ্রাপ্ত, সেই তালিকায় ছিল না সর্বজনীন পেনশন স্কিম। পরে এনবিআর এসআরও জারি করে সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে অব্যাহতি প্রদান করে।
উল্লেখ্য, অফশোর ব্যাংকিং হলো ব্যাংকের অভ্যন্তরে পৃথক ব্যাংকিং সেবা। বিদেশি কোম্পানিকে ঋণ প্রদান ও বিদেশি উৎস থেকে আমানত সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে অফশোর ব্যাংকিংয়ে। স্থানীয় মুদ্রার পরিবর্তে বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব হয় অফশোর ব্যাংকিংয়ে। ব্যাংকের কোনো নিয়ম-নীতিমালা অফশোর ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হয় না। কেবল মুনাফা ও লোকসানের হিসাব যোগ হয় ব্যাংকের মূল মুনাফায়।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে