গত ৫ মাসে সবুজ জ্বালানি নিয়ে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই: টিআইবি
গত পাঁচ মাসে সবুজ জ্বালানি নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি আরও বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির আধিপত্য থেকে সরে আসার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি, যা উদ্বেগজনক।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক পরিষ্কার জ্বালানি দিবস ২০২৫ উপলক্ষে জাতীয় সংসদের সামনে টিআইবির আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। টিআইবির এই মানববন্ধন দিবসটি উপলক্ষে সারা দেশে আয়োজিত কর্মসূচির অংশ।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গত ১৫ বছর ধরে পুরো জ্বালানি খাতটি জীবাশ্ম জ্বালানির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারা নীতিমালা ও আইনকানুনে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। এ খাতে প্রণীত জ্বালানি মাস্টারপ্ল্যানেও জীবাশ্ম জ্বালানিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এই মাস্টারপ্ল্যান বাতিল করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার ২০৫০ সালের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার জ্বালানিতে যাওয়ার স্থানান্তরিত হওয়ার পরিকল্পনা করেছে। আমাদের সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতি নেয়া জরুরি। এটা শুধু একটি দিন কথা বললে হবে না, সারা বছরই পরিষ্কার জ্বালানির জন্য কথা বলতে এবং কাজ করতে হবে।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক অভিযোগ করে বলেন, ‘গত পাঁচ মাসে সবুজ ও পরিষ্কার জ্বালানি নিয়ে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ আমরা দেখিনি। এ বিষয়ে কোনো আলোচনাও হয়নি।’
তবে প্রশংসা করে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং চালিয়ে যাওয়া উচিত।
টিআইবির তথ্যমতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এখনো আমদানি করা জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়লেও দেশের জ্বালানি মিশ্রণে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ মাত্র ৪.৬৫%। অর্থাৎ বাকি ৯৫% জ্বালানিই জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল।
মানববন্ধনে ১২ দফা দাবি তুলে ধরে টিআইবি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিদ্যমান জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর 'ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টারপ্ল্যান (আইইপিএমপি-২০২৩)' বাতিল করা এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অনুপাত বাড়ানোর ভিত্তিতে একটি নতুন মাস্টারপ্ল্যান তৈরি ও বাস্তবায়ন করা।
এ ছাড়াও জ্বালানি খাতে নীতিগত একচেটিয়া প্রভাব বন্ধ করা, স্বার্থের সংঘাত রোধ করা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে