স্বজনের নির্মমতায় শিকলবন্দি হবিগঞ্জের বাবুল
স্ত্রী, ছেলে, কাকা ও ভাইয়ের নির্মমতার শিকার হয়ে তিন সপ্তাহ ধরে পরিত্যক্ত বাসায় শিকলবন্দি হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বাবুল বৈষ্ণব। এই দীর্ঘ সময়ে তার ভাগ্যে একবেলাও খাবার জোটেনি ঠিকমতো। গোসল করানো হয়েছে মাত্র তিন-চারবার।
ভুক্তভোগীসহ গ্রামবাসীর অভিযোগ, ছোট একটি ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটির পর স্ত্রীর গায়ে হাত তুলেছিলেন বাবুল। পরে তার স্ত্রী অন্যদের নিয়ে তাকে মারধর করে ‘পাগল’ সাজিয়ে শিকলে বেঁধে রেখেছেন। অতি সাধারণ মানুষ বাবুল বৈষ্ণব উপজেলার ঝিলুয়া গ্রামের বাসিন্দা। আচার-আচরণেও তিনি শান্ত স্বভাবের বলে জানিয়েছেন এক প্রতিবেশী।
তিনি বলেন, ‘যতটুকু জানি, বাবুলের কোনো মানসিক সমস্যা নেই। শুধু পারিবারিক ঝগড়ার কারণে ছেলে, স্ত্রী, ভাই আর কাকা মিলে তাকে এভাবে বেঁধে রেখেছে। ঠিকমতো খাবারও দেন না তারা। বাবুলের বৃদ্ধা মা মাঝে মধ্যে কিছু খাবার দিলে তাকেও গালাগালি করা হয়। মাঝে মধ্যে খাবারের থালা মায়ের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ফেলে দেন বলেও জেনেছি। আধা বালতি পানি দিয়ে গত ২১ দিনে বাবুলের মা ৩-৪ দিন গোসল করিয়েছেন।’
সরেজমিন গেলে বাবুল বৈষ্ণব জানান, তিনি অনেক কষ্ট করে সংসার চালিয়েছেন। ছেলে-মেয়েকে বড় করেছেন। আটকে রাখার আগেও তিনি কৃষিকাজের বাইরে গ্রামে গ্রামে ঘুরে সবজি, বীজ বিক্রি করেছেন। বাবুলের কাকা রথিন্দ্র চৌধুরী বলেন, ‘বাবুল প্রায়ই পরিবারের লোকজনকে মারধর করে। দা নিয়ে হামলা করতে আসে। যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই তাকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন বদলপুরের ইউপি সদস্য দিলীপ কুমার চৌধুরী বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। তবে এখন যেহেতু আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আমি খোঁজ নেব। তবে আমার জানামতে, তার আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক হলেও পাগল বলা যাবে না। এমনকি তিনি কখনো কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন বলেও আমার জানা নেই।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে