Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

ভারত-বাংলাদেশের রেল চালু নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না, অপেক্ষা

Tanmay Mondal, Kolkata

তন্ময় মণ্ডল, কলকাতা

সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধ থাকা রেল যোগাযোগ ফের কবে চালু হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না। ফলে দুই দেশের যাত্রীদের দুশ্চিন্তা আরও দীর্ঘ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, প্রতিবেশী দুই দেশের রেল পরিষেবা বন্ধ থাকায় উভয় দেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। ওই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আগস্টের ৫ তারিখের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা মহামারির সময় দুই দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিলো। সে সময় বড় ক্ষতির মুখে পড়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। তবে ধীরেধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ছন্দে ফেরে রেল যোগাযোগ। কিন্তু জুলাই-আগস্টের আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের জেরে গত এক মাসেরও বেশি সময় রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
এতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। হয়রানির শিকারও হচ্ছেন অনেকে।

দুই প্রতিবেশী দেশের রেল পরিষেবা বন্ধ হওয়ার ফলে দুই দেশের অর্থনীতিতেই একটা বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানিকৃত মোট পণ্যের প্রায় অর্ধেক রেলপথে পরিবহন করা হয়। অধিকাংশই বেনাপোল বর্ডার দিয়ে আসে। রাসায়নিক, সার, সিমেন্ট এবং কৃষি পণ্যের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পণ্য পরিবহন করে রেল। রেল পরিষেবা বন্ধের কারণে বাংলাদেশে এসব পণ্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে এবং এতে দেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মানুষ চিকিৎসার জন্যেও ভারতে আসেন। অনেক বাংলাদেশি পর্যটক ভারতের কলকাতা, দার্জিলিংসহ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণে আসেন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেক যাত্রী আগেই টিকিট বুক করে রেখেছিলেন, যা এখন বাতিল করতে হচ্ছে।

বাংলাদেশের বেনাপোল ও চিলাহাটী স্থলবন্দর দিয়ে তিনটি আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস যায় বেনাপোল দিয়ে এবং মিতালী এক্সপ্রেস চিলাহাটী রুটে। এই তিনটি ট্রেন বন্ধ থাকায় যাত্রীদের সুষ্ঠু যাতায়াত ব্যহত হচ্ছে। যা দুশ্চিন্তায় ফেলেছে দু’পারের মানুষকে। তবে এই ট্রেনগুলো কতদিন বন্ধ থাকবে এবং আবার কবে চালু হবে সেটা নিয়ে এখনও কিছু জানা যাচ্ছে না।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরে ৮ আগস্ট বাংলাদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠন করা হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অস্থিরতা কাটিয়ে এরপর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সকল কার্যক্র।

ভারতের পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র দেশটির একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমরা প্রস্তুত আছি। বাংলাদেশ সবুজ সংকেত দিলেই দু’দেশের মধ্যে আবার ট্রেন চলাচল শুরু হবে।’’

অবশ্য এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ভারতের এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স থেকে এখন পর্যন্ত ট্রেন চালানোর বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’

ভারতীয় রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, ভারত থেকে বাংলাদেশে পৌঁছনো মিতালি এক্সপ্রেসের রেক ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে রাখা আছে। এছাড়া আরও যেসব ভারতীয় পণ্যবাহী ওয়াগন বাংলাদেশে এসেছিলো, পণ্য খালাস করে সেগুলো বাংলাদেশেই আছে। অন্যদিকে আমদানিকারকদের পণ্যবোঝাই ওয়াগন আটকে আছে ভারত সীমান্তে। এর মধ্যে থাকা কাঁচাপণ্যগুলো যে ইতিমধ্যেই পচে গেছে তাতে সন্দেহ নেই।

ভারতীয় রেলের একটি সূত্র জানিয়েছে, ট্রেন চালুর বিষয়ে খুব শিগগিরই দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আলোচনায় বসবেন।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ