রানা প্লাজা ট্রাজেডির ১১ বছর: সাভারে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
রানা প্লাজা ট্রাজেডির ১১ বছর পূর্তি উপলক্ষে সাভারে দুদিনব্যাপী এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে সাভারে রানা প্লাজার ধ্বংসস্তুপের সামনে এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে দুই দিন আটকে থাকা আহত শ্রমিক জেসমিন আক্তার।
গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেনের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জি. রুহুল আমিন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সদস্য শামীম হোসেনসহ আরও অনেকে।
উদ্বোধকের বক্তব্যে জেসমিন আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মর্মান্তিক দুর্ঘটনার ১১ বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনো অপরাধীদের বিচার হয়নি। আমরা অপরাধীদের সর্বোচ্চ বিচার চাই। একইসঙ্গে আমরা যথাযথ ক্ষতিপূরণ চাই। আর কেউ যেন এভাবে হাজারো মানুষের মৃত্যুর ফাঁদ তৈরি করতে না পারে সেই দাবি জানাই।”
নিহত শ্রমিক ফজলে রাব্বির মা রাহেলা বেগম বলেন, “নিয়ম না মেনে রানা প্লাজা তৈরি করা হয়েছিল। নিয়ম মেনে এই ভবন তৈরি করলে এত মানুষ মারা যেত না। আমাদের সন্তানদের যে কেড়ে নিয়েছে তার সর্বোচ্চ বিচার চাই। এখনো যারা শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন কল-কারখানায় কাজ করছেন তাদের যেন এমন পরিণতি আর না হয়।”
এ সময় গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আক্তার বলেন, “১১ বছরেও ১,১৭৫ জন মানুষকে হত্যার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়নি। কারখানার ভবন মালিক সোহেল রানা ছাড়া অন্যান্য মালিক, সরকারি কর্মকর্তারা জামিনে জেলের বাইরে আছে। সোহেল রানাও গত বছর জামিন পায়, তবে পরবর্তীতে তার জামিন উচ্চ আদালত স্থগিত করেন। বিচারের এই ধীর গতি সরকার ও রাষ্ট্রের মালিকপক্ষ ও দোষীদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান এবং তাদের সুরক্ষা দেবার প্রচেষ্টারই সামিল। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোন পথ খোলা নাই।”
এদিকে রানা প্লাজা, তাজরীনের পরে আর কোনো বড় দুর্ঘটনা না ঘটলেও শ্রমিকদের ভগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। যেকোনো দুর্ঘটনায় অল্প টাকা দিয়ে শ্রমিকদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তাসলিমা আক্তার।
প্রদর্শনীতে মোট ৪ জন আলোকচিত্রী ও পোশাক শ্রমিকদের সন্তানদের মধ্যে সাত জন আঁকিয়ের চিত্রকর্ম এবং জীবিত থাকা অবস্থায় স্টুডিওতে ২০ জন শ্রমিকের তোলা ছবি স্থান পেয়েছে। শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, আলোকচিত্রী এন্ড্রু বিরাজ, রাহুল তালুকদার ও শুভ্রকান্তি দাসের তোলা ছবি সেখানে রয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে