রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে চীনের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) চীনা কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিংয়ের নেতৃত্বে চীনা পার্টির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শাখা চীনা পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটির সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এই আহ্বান জানান।

বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে সহায়তা করুন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাড়ে ছয় বছর ধরে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের কোনো উদ্যোগ এখনো নেয়া হয়নি।

হাছান মাহমুদ বলেন, বৈঠকে এই ইস্যুটি সবচেয়ে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হয়।

সিপিপিসিসি চেয়ারম্যান বলেন, তারা বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে এই ব্যাপারে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন।

তিনি বলেন, আমরা মিয়ানমারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নেব।

এ সময় বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন থেকে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি করেছে। অথচ রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা খুবই কম।

তিনি অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চীনকে বাংলাদেশ থেকে আমদানি বাড়াতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, শাকসবজি ও আম আমদানি করতে পারে।

অন্যদিকে সিপিপিসিসি নেতারা বলেছেন, তারা বাংলাদেশ থেকে মানসম্পন্ন পণ্য আমদানির ব্যবস্থা নেবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং সম্পর্ক আরও বাড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রচেষ্টাতেই এটি গভীরে প্রোথিত হয়েছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে চীন সফর করেন এবং তিনি নিজে ষষ্ঠবারের মতো চীন সফর করছেন।

পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল এবং বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি) সহ বেশ কিছু আইকনিক প্রকল্প নির্মাণে সহায়তা করার জন্য চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

এ ছাড়াও বৈঠকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, তিনি তাঁর দল থেকে চীনে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠাবেন। তিনি চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকেও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান।