অপরিবর্তিত নীতি সুদহার, প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ
বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে, যেখানে নীতি সুদহার ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ডিসেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঘোষিত মুদ্রানীতিতে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। একই সঙ্গে নীতি সুদহার ও বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধির হার অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানা গেছে। এছাড়া, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি অপরিবর্তিত থাকবে এবং ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতি আরও কমতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে ৭-৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হতে পারে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘যদি মূল্যস্ফীতি কমে, তাহলে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে নীতি সুদহার কমানো হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিশোধ ভারসাম্য এখন উদ্বৃত্ত রয়েছে এবং আর্থিক হিসাব সন্তোষজনক। গত বছর এটি ঋণাত্মক ছিল। বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি স্থিতিশীল না থাকলে মূল্যস্ফীতির চাপ তৈরি হবে। তাই বিষয়টি নজরদারিতে রাখা হবে।’
গভর্নর আরও বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে মৌসুমী চাহিদা কমবে, তবে বিদ্যুতের খরচ বাড়বে। নিষ্পত্তির ক্ষেত্রের কারণে মূল্যস্ফীতি আরও কমবে। খাদ্য আমদানির কারণে আনুমানিক ৬০০ মিলিয়ন ব্যয় হয়েছে। রমজানে (মার্চ মাসে) রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে। মূল্যস্ফীতির কারণে আমরা পণ্যের দাম কমাতে পারব না, তবে মূল্যস্ফীতি কমানো সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে তারল্য সহায়তা দেয়া হয়েছে এবং আরও সহায়তা দেয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চিত করবে যে আমানতকারীরা খালি হাতে ফিরে যাবেন না। ইসলামী ব্যাংকগুলো কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে এবং আমানতের ওপর ইতিবাচক হার রয়েছে। তবে কিছু অবলোপিত ঋণ রয়েছে, যা ধীরে ধীরে কমবে। নতুন যে ঋণ অবলোপিত ঋণে পরিণত হবে, তা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এতে প্রায় দেড় থেকে দুই বছর সময় লাগবে।’
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশে নেমেছে, যা তার আগের মাসের ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশের তুলনায় কিছুটা কম। তবে এটি পরপর দ্বিতীয় মাসের মতো ১০ শতাংশের ওপরে রয়ে গেছে। ২০২৪ সালের বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৩২ শতাংশ।
২০২৩ সালের মার্চ থেকে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়াকড়ি মুদ্রানীতির পরও ভোক্তা পর্যায়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিগত সুদহার কয়েকবার বাড়িয়ে ১০ শতাংশে এনেছে।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারি ৬ তারিখে ‘মুদ্রানীতি: বাড়ছে না নীতি সুদের হার’ শিরোনামে ভিউস বাংলাদেশ'এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে বিষয়টি বিস্তারিত আলোচিত হয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে