৩৮ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত
আগামী অর্থবছরের বাজেটে (২০২৪-২৫) ৩৮ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত।
আগামী ৫ জুন থেকে জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশন বসতে যাচ্ছে। ঘোষণা হতে যাওয়া বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির মোট বরাদ্দের ১৫ দশমিক ৩৮ ভাগ পাচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। আসন্ন বাজেটে মোট বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে মোট বরাদ্দ থাকছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ খাত এবার বরাদ্দ পাচ্ছে ৩৪ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। বরাদ্দের মধ্যে সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে ৯ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা, বিভিন্ন প্রকল্পের ঋণ সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ১৮ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা, বিভিন্ন বিদ্যুৎ কোম্পানির নিজস্ব অর্থায়ন থেকে আসবে ৫ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা, এর বাইরে বাজেটে থোক বরাদ্দ থাকছে আরো ৬১৮ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) বিদ্যুৎ খাতে মোট বরাদ্দ ছিল ৩০ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। তবে ডলারের দাম বিবেচনা করলে বিদ্যুৎ খাতের বরাদ্দ চলতি বছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরে বৃদ্ধি পাচ্ছে না। গত জুনের তুলনায় এখন ডলারের দাম সরকারি হিসাবে অন্তত ১৭ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি ইতোমধ্যে অর্থ বিভাগের নজরে আনা হয়েছে। ডলারের দামের সঙ্গে সমন্বয় করার বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলাচনা হলেও সেটি ফলপ্রসূ হয়নি। নানা কারণে ডলারের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়াতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগকে। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এক্ষেত্রে ডলারের দাম বৃদ্ধিতে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে। অর্থবিভাগ যা সমন্বয় করছে না বলে জানান তিনি।
চলতি অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিভাগের অগ্রগতি গত এপ্রিল পর্যন্ত ৬৮ দশমিক ২৯ ভাগ। ১০ মাসে ৬৮ ভাগ বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকি ৩২ ভাগ বাজেট বাস্তবায়ন দুই মাসে সম্ভব কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
চলতি বছর বাজেট বাস্তবায়নের মধ্যে জিওবি বরাদ্দর ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন সব চাইতে কম হয়েছে। চলতি বছর জিওবি’তে বিদ্যুৎখাতে বরাদ্দ ছিল ৮ হাজার ৭৬ কোটি টাকা। এরমধ্যে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৪ হাজার ১২৫ কোটি টাকা, অর্থাৎ বরাদ্দের ৫১ দশমিক ৮ ভাগ। বাজেটে প্রকল্প ঋণ সহায়তা ছিল ১৯ হাজার ৫০ কোটি টাকা, এরমধ্যে ৭৫ দশমিক ৯৪ ভাগ অর্থাৎ ১৪ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিজস্ব ব্যয়খাতে ২ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা অর্থাৎ ৬৬ ভাগ ব্যয় হয়েছে।
অন্যদিকে জ্বালানি খাতে আগামী অর্থবছর ৪ হাজার ৪৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। মোট বরাদ্দের মধ্যে জিওবি খাত থেকে ২ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর বাইরে গ্যাস উন্নয়ন তহবিল (জিডিএফ) থেকে আরো ৬৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎ বিভাগের তুলনায় জ্বালানি বিভাগ এডিবি বাস্তবায়নে এগিয়ে রয়েছে। গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জ্বালানি বিভাগে মোট ৮৩ ভাগ এডিবি বাস্তবায়ন হয়েছে। চলতি অর্থবছরে জ্বালানি খাতে ৩ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এরমধ্যে জিওবি খাতে ১ হাজার ৪০৩ কোটি টাকার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে এডিবি বাস্তবায়নের পরিমাণ ৭৩ দশমিক ৬৭ ভাগ। প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে ১ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা অর্থাৎ ৯২ দশমিক ১৫ ভাগ ব্যয় হয়েছে। জিডিএফ-এর বরাদ্দ ৮৭৩ কোটি টাকার মধ্যে ৭১৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, অর্থাৎ ৮৩ দশমিক ১৪ ভাগ ব্যয় হয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে