গ্রীষ্মের শুরুতেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট: চরম ভোগান্তির শঙ্কায় গ্রাহক
চলতি মৌসুমে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। বিদ্যুৎ সরবরাহের সামান্য ঘাটতি গ্রীষ্মের শুরুতেই বড় রকমের ভোগান্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে। আবহাওয়া এখনো সম্পূর্ণরূপে প্রখর না হলেও লোডশেডিং শুরু হয়ে গেছে দেশজুড়ে, বিশেষ করে পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা রীতিমতো ভীতিকর। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা যখন চূড়ান্তে পৌঁছায় তখনই বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা। এমনকি কৃষিকাজেও এর প্রভাব পড়ছে। মৌসুমের শুরুতেই এই অবস্থা থাকলে গ্রাহকদের মনে শঙ্কা, তীব্র গরমে এই সংকট আরও বাড়বে।
চাহিদা ও সরবরাহের ফারাক
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের গ্রীষ্ম মৌসুমে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা সর্বোচ্চ দাঁড়াতে পারে দৈনিক প্রায় ১৮,০০০ মেগাওয়াট। বর্তমানে সচল ১৪০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র, যেগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে প্রায় ৩০,৯৯৯ মেগাওয়াট। তবে বাস্তবে বেশিরভাগ কেন্দ্রই পুরো ক্ষমতা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না। এখন অব্দি দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল ১৬,৪৭৭ মেগাওয়াট।
অবস্থা বিবেচনায় আমদানিনির্ভর এই খাতে চাহিদামতো সরবরাহ নিয়ে শঙ্কায় বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এবার ৩ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি, রক্ষণাবেক্ষণ সমস্যা, কয়লা আমদানির সীমাবদ্ধতা এবং তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর খরচ বেশি হওয়ায় একযোগে সব কেন্দ্র চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এতে প্রকৃত উৎপাদন সামর্থ্য দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১৪,০০০ থেকে ১৬,০০০ মেগাওয়াটের মধ্যে যা চাহিদার তুলনায় ৭০০ থেকে ১৪০০ মেগাওয়াট কম।
বিপিডিবির সদস্য (উৎপাদন) মো. জহুরুল ইসলাম সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ বছর ফুল সামারে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ ১৮ হাজার মেগাওয়াট ফোরকাস্ট করা হয়েছে। তবে অল্প কিছু লোডশেডিং হবে।’
তিনি জানান, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর মাস পর্যন্ত গ্রীষ্মকালে বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেশিনগুলো একটানা চালানো যায় না। ফলে এক বা দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার ব্যয়বহুল জ্বালানি খরচ করে যেমন পার ইউনিট ৪০ বা ৪৫ টাকা খরচ করে উৎপাদন কেন্দ্রগুলো সচল রাখতে পার সেক্ষেত্রে সাবসিডি বেড়ে যাবে।
লোডশেডিংয়ের বাস্তবতা
গত এক সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তীব্র লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে। রাজশাহী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফরিদপুর, এবং ঢাকা শহরের কয়েকটি আবাসিক এলাকায়ও প্রতিদিন ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। তবে শহরের তুলনায় গ্রামে তুলনামূলক লোডশেডিং বেশি হচ্ছে বলে জানা গেছে। এখনো গরমের তীব্রতা না বাড়লেও সামনের দিনগুলোতে লোডশেডিং আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সুমাইয়া বলেন, দুপুরে যখন গরম চরমে, তখনই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। আবার রাতেও চলে যাচ্ছে। হঠাৎ ফ্যান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাচ্চাদের ঘুম ভেঙে যায়, আবার বিদ্যুৎ না থাকলে পড়াশোনাও ব্যাহত হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতিক্রিয়া
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘এবারের গ্রীষ্মে আমরা লোডশেডিংকে সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করছি। গ্রাম এবং শহরের মধ্যে কোনো বৈষম্য থাকবে না, সবাই সমানভাবে বিদ্যুৎ পাবে।’
তবে বাস্তব চিত্র বলছে, এখনো পর্যন্ত শহরাঞ্চলে তুলনামূলকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ কিছুটা ভালো থাকলেও গ্রামীণ এলাকায় দিনে তিন থেকে চারবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। কৃষিপ্রধান এলাকাগুলোয় সেচ পাম্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ধান কাটার মৌসুমে বিপাকে পড়ছেন কৃষকরা।
ঢাকাসহ দক্ষিণের দুই বিভাগে বিদ্যুৎ বিভ্রাট
ঢাকার মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নারায়ণগঞ্জ, বরিশালের উজিরপুর, খুলনার বটিয়াঘাটা ও পাইকগাছাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে গত কয়েকদিনে হঠাৎ করে ব্ল্যাকআউট হয়ে যায়। বিভ্রাটের সময় কোনো পূর্বঘোষণা না থাকায় জনমনে ক্ষোভ দেখা দেয়। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ঢাকা, বরিশাল ও খুলনার বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পেছনের কারণ অনুসন্ধানে আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। গত ২৭ এপ্রিল (রোববার) মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের এ ঘটনায় সাধারণ জনগণের পাশাপাশি শিল্প ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। সাম্প্রতিক এই অঘটনের প্রকৃত কারণ নির্ধারণ ও ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাসিব চৌধুরীকে।
কমিটির কাজ হবে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রকৃত কারণ নির্ধারণ করা, সেই সঙ্গে যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী হয়ে থাকে তবে তাদের দায় নির্ধারণ করা। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের বিভ্রাট না ঘটে সে লক্ষ্যে কার্যকর সুপারিশ প্রদান করা হবে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশ দাখিল করতে হবে।
ঘাটতির কারণ
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিদ্যুৎ খাতে মূল সমস্যা নির্ভরযোগ্য জ্বালানি উৎস না থাকা। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৫৫ শতাংশ আসে গ্যাস থেকে; কিন্তু গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন কমে আসায় ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। অপরদিকে এলএনজি আমদানিও জ্বালানি বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।
এছাড়া যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র কয়লাভিত্তিক, সেখানে কয়লার সরবরাহে দেরি কিংবা খরচ বেশি হওয়ায় এগুলোর পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
বিদ্যুৎ গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরিকল্পনায় একাধিক ঘাটতি রয়েছে। একদিকে রিজার্ভ ক্যাপাসিটি বেশি রাখা হচ্ছে অন্যদিকে কার্যকর ব্যবস্থাপনা না থাকায় ভোগান্তি বাড়ছে।
শিল্প খাতেও ধাক্কা
দেশের শিল্পাঞ্চল গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার এবং চট্টগ্রামের কিছু এলাকায় দিনেরবেলা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার মালিকরা বলছেন, প্রতিদিন ১ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকলেও কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি গুনতে হয়।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) এক কর্মকর্তা জানান, ‘আমরা বিকল্প হিসেবে জেনারেটর চালাতে বাধ্য হচ্ছি। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা করার ক্ষেত্রে এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।’
বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত বাস্তবতা কি ভুল
বছর দুয়েক আগে সরকার জানিয়েছিল, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ‘উদ্বৃত্ত’ রয়েছে। তাহলে এখন কেন ঘাটতি? প্রকৃতপক্ষে, ‘Installed Capacity’ মানে সব বিদ্যুৎকেন্দ্র একসঙ্গে সর্বোচ্চ উৎপাদন করলেও যা পাওয়া যাবে; কিন্তু এটি প্রায় কখনোই হয় না। জ্বালানি সরবরাহ, যন্ত্রপাতির মান এবং কেন্দ্রগুলোর দক্ষতা- এই সবকিছুর কারণে কার্যকর উৎপাদন ক্ষমতা অনেক কমে যায়।
বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টি আকর্ষণ
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম. শামসুল আলম ভিউজ বাংলাদেশ কে বলেন, ‘বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণ মূল বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে যে পরিমাণ জ্বালানি দরকার সেই পরিমাণ জ্বালানি নেই। জ্বালানি সরবরাহ না করলে সে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে না। আবার জ্বালানি সরবরাহ করলে আর্থিক ঘাটতি বাড়ে।’
বিদ্যুৎ উদ্বৃত্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত নিয়ে সরকার যে কথা বলে এটা পুরোপুরি ঠিক নয়। আমাদের আসলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেশি, তবে বিদ্যুৎ নয়।’
গ্রাম-শহরের বিদ্যুৎ বৈষম্য সম্পর্কে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ভোগান্তি যদি হয় সেটা সমতাভিত্তিক হতে হবে। সেটাই জ্বালানি সুবিচারের মৌলিক ব্যাপার। সবার মধ্যে সমতাভিত্তিক বণ্টন হতে হবে। বিদ্যুৎ না পাওয়া গেলে লোডশেডিং সবার মধ্যে সমতাভিত্তিক হতে হবে।
আমাদের দেশে অনেক কিছুই আর্বিটারি চলে, জেনারেটরগুলোর অটোমেশন নেই। এগুলো সবই হুকুমে চলে, মানুষের নিয়ন্ত্রণে। যেটা আধুনিক পাওয়ার সিস্টেম বা বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় কোনো নিয়মই হতে পারে না। যার জন্য বৈষম্য দেখা যায়।
লোডশেডিং ডিস্ট্রিবিউশনের ব্যাপারে তিনি বলেন, লোডশেডিং একই সময় বা পিক আওয়ারে দিতে হবে এটা যৌক্তিক না। অন্যান্য সময় লোডশেডিং ডিস্ট্রিবিউট করে সেই সাশ্রয়ী জ্বালানি দিয়ে পিক আওয়ারে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জ্বালানি সরবরাহের মধ্যে সমতা রক্ষা করলে লোডশেডিং থেকে জনগণকে কিছুটা সুরক্ষা দেয়া যাবে।
বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ ও সাবেক এক সচিব বলেন, এ ধরনের বিভ্রাট হলে তাৎক্ষণিক কারণ চিহ্নিত করা জরুরি। তবে শুধু তদন্ত নয়, তার ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গ্রিড ব্যবস্থাপনায় এখনো দুর্বলতা রয়ে গেছে। নজরদারি এবং রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতি থাকলে ভবিষ্যতেও বড় বিপর্যয় হতে পারে।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিশেষ করে সৌরবিদ্যুৎ এই পরিকল্পনার একটি বড় অংশ। তবে এখনো পর্যন্ত নবায়নযোগ্য উৎস থেকে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন মাত্র ৩ শতাংশের মতো।
বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক এক সচিব বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে আমাদের জোর দেয়া উচিত। সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎকে উৎসাহ দিলে দীর্ঘমেয়াদে এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এবং এই খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করেন- গ্যাস ও কয়লার নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, এলাকাভিত্তিক বৈষম্য দূর করতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, বিদ্যুৎ অপচয় রোধে সচেতনতা বাড়ানো দরকার।
গ্রীষ্মের শুরুতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে এমন সংকট ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত হয়ে উঠছে। সামান্য চাহিদা বাড়লেই যখন বিপর্যয় ঘনিয়ে আসে তখন ভাবতে হয় আমাদের পরিকল্পনায় কোথায় ঘাটতি রয়ে গেছে। বিদ্যুৎ শুধু একটি সেবা নয়, এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি। তাই আগামী দিনের জন্য টেকসই ও বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা এখন সময়ের দাবি।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে