Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

মাদক পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস

অনলাইনে মাদকের বিস্তার রোধ করুন

Editorial  Desk

সম্পাদকীয় ডেস্ক

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

মাদকাসক্তি একটি বহুমাত্রিক জটিল সমস্যা। বিশ্বের মধ্যে মাদকাসক্তের সংখ্যা বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। বাংলাদেশ মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হলেও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে মাদকের আগ্রাসনের শিকারে পরিণত হচ্ছে, যার কারণে দেশে মাদক আমদানির জন্য বিরাট অঙ্কের অর্থ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। আবার মাদক কারবারিরা এই অবৈধ অর্থ নিরাপদ রাখতে দেশের বাইরে পাচার করছে। ফলে দেশের অর্থনীতি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে সরকারও দেশ থেকে মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে; কিন্তু এই জিরো টলারেন্সের ফল এখনো সন্তোষজনক নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আশার কথা হচ্ছে, সরকারের এই জিরো টলারেন্সের ফলে আমরা কমবেশি মাদক সম্রাটসহ মাদক কারবারিদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হতে দেখি। এমন পরিস্থিতিতে আজ বুধবার সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত হচ্ছে।

এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘মাদকের আগ্রাসন দৃশ্যমান, প্রতিরোধেই সমাধান।’ কিন্তু দুঃখজনক হলে সত্য, দেশে এখন মাদকের বিস্তার ঘটছে অনলাইনে। যেহেতু অনলাইনে নজদারি প্রচলিত ধারার চেয়ে কঠিন, তাই বিভিন্ন ধরনের মাদক এখন অনলাইনে বেচাকেনা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন মাদক কারবারি ও মাদকসেবীরা। লেনদেন হচ্ছে অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও। এ ছাড়া ডার্কওয়েবে মাদক বেচাকেনা হচ্ছে ও বিটকয়েনে মাদকের লেনদেন করছেন কারবারিরা।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২৩-এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটির পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, মূলত প্রযুক্তির কল্যাণে সারা বিশ্বের মধ্যে যোগাযোগ অনেক সহজ হয়ে গেছে। ফলে সারা বিশ্বেই মাদকের বাজার যেমন বড় হচ্ছে, তেমনি নতুন নতুন মাদক বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে। আর বাংলাদেশের সীমান্তপথে মাদক চোরাচালান তো মাদক কারবারিদের স্বর্গরাজ্য।

পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে অনলাইনে মাদক বেচাকেনা। দেশের যুবসমাজের বেশ বড় একটা অংশ এই আত্মঘাতী মাদকাসক্তির শিকার। তবে মাদকাসক্তি শুধু এই বয়সীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, পূর্ণবয়স্ক, এমনকি শিশু-কিশোরদের মধ্যেও মাদকাসক্তি ছড়িয়ে পড়েছে প্রবলভাবে। তাই সীমান্তপথে মাদক চোরাচালান ও দেশের ভেতরে মাদকদ্রব্যের কেনাবেচা কঠোর হাতে বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে অনলাইনে মাদকের বিস্তার।

এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জবাবদিহি নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি। সুতরাং সমাজ থেকে মাদকদ্রব্য উৎখাত এবং মাদকাসক্তি নির্মূল করতে হলে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি দরকার মানুষের মূল্যবোধের জাগরণ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক আন্দোলন।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ