প্রিয় মালতী দেখার মতো এক ছবি!
আজ বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্সে দেখলাম তরুণ নির্মাতা শঙ্খ দাশগুপ্ত পরিচালিত 'প্রিয় মালতী'। অনেকদিন পর, আরও সুস্পষ্ট করে বললে বলব, পান্থ প্রসাদের 'সাবিত্রী' ছবি দেখার পর, আরও একটা ভালো বাংলা ছবি আজ দেখলাম। এই ছবি দেখে আমি সত্যি সত্যিই মেহজাবিনের প্রেমে পড়ে গেছি! এত সুন্দর সাবলীল অভিনয়!
শঙ্খ গল্পটা যেভাবে বুনট করেছেন, এক কথায় অসাধারণ লেগেছে আমার। ছবিতে শঙ্খ সাম্প্রতিক নাগরিক জীবনের যে সমস্যা অত্যন্ত মুন্সিয়ানায় তুলে ধরেছেন, তা এক কথায় দুর্দান্ত। গল্পটা সুন্দর, নির্মাণে দারুণ দারুণ সব এক্সপেরিমেন্ট, দারুণ দারুণ বাঁক আছে বুনটে। গল্পের ব্লেন্ডিং আমার দারুণ পছন্দ হয়েছে। এসব নিয়ে আমি শঙ্খর সঙ্গে দারুণ একটা আড্ডা দিতে চাই।
ক্যামেরার চলাফেরা চমৎকার। অভিনেতাদের গল্পের প্রয়োজনে চরিত্রের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেয়ার দক্ষতা সুন্দর। ছবিতে শঙ্খ এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত নারীর নাগরিক সেবার জটিলতাজনিত ঘটনায় সৃষ্ট বিড়ম্বনার ঘটনাবলি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে চিত্রায়িত করেছেন। বরকত হোসেন পলাশের চৌকস ক্যামেরার কাজ আমার পছন্দ হয়েছে। ছবির কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ করেছেন শঙ্খ দাশগুপ্ত এবং কো রাইটার হিসেবে ছিলেন আবু সাঈদ।
এ ছাড়া নাদের চৌধুরী, শহীদুল আলম সাচ্চু, আনিসুল হক বরুণ, রিজভী রিজু, মোমেনা চৌধুরী চরিত্রের সঙ্গে যথেষ্ট সাবলীল ছিলেন। এদের সবার অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করেছে। রুসলান রেহমানের সুর বেশ মন কেড়ে নেয়ার মতো। ছবির দৃশ্যায়ন, কাহিনি এবং পাত্র-পাত্রীদের অভিনয় আমাকে সত্যি মুগ্ধ করেছে। সিনেমা দেখার সময় বারবার আমার পুরান ঢাকার নিমতলীর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সেই দুঃসহ স্মৃতির কথা মনে পড়েছে।
ছবিতে পলাশ ও মালতীর জীবনের ঘটনা পরম্পরা আমাকে সেই দুঃসহ যন্ত্রণায় বারংবার বিদ্ধ করেছে! সাধারণ একটা সিনেমা একবার দেখেই কিছু লেখা ঠিক না। 'প্রিয় মালতী' দেখার পর এই লেখা আমার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। ছবিটি আমি আরও কয়েকবার দেখতে চাই এবং নির্মাতা শঙ্খর সঙ্গে এই ছবি নিয়ে আমি দীর্ঘ আড্ডা দেয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করি।
ডেব্যু সিনেমার জন্য প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ নির্মাতা শঙ্খ দাশগুপ্তকে আমার সুতীব্র উষ্ণ আলিঙ্গন ও প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। 'প্রিয় মালতী' টিমের জন্য শুভ কামনা। জয় হোক বাংলা সিনেমার। জয় হোক প্রিয় মালতীর।
রেজা ঘটক: কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে