প্রতিবাদ বিজ্ঞাপন
হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যের প্রতিবাদ
হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যের প্রতিবাদ
অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন; যার পরতে পরতে দুর্নীতিতে ভরা। সেই ভুঁইফোড় সংগঠন গত ০৯/০৭/২০২৪ এবং ০৭/০৯/২০২৪ তারিখে দুই দফায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্ত চিকিৎসকদের নিয়ে জাতির সামনে অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা, বানোয়াট, ভুল তথ্য উপস্থাপন করেছে। আমরা বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্ত চিকিৎসকরা এর তীব্র নিন্দী জ্ঞাপন করছি। আমরা কিছু দিন ধরে লক্ষ্য করছি, সেই সংগঠনের ব্যানারে কতিপয় অসাধু চিকিৎসক কর্মকর্তা নামে-বেনামে ফেসবুকসহ নানা সামাজিকমাধ্যমে কুৎসা রটিয়ে দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে বিঘ্নিত করতে তৎপর, যা পীড়াদায়ক, সম্মানহানীকর এবং উসকানিমূলক। আমরা দেশের জনগণের স্বাস্থ্যসেবা এবং বর্তমান সরকারের কাজে যাতে কোনো প্রকার বিঘ্ন না ঘটে, তাই এতদিন এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করিনি। কিন্তু এ অবস্থা এভাবে চলতে পারে না। তাই আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য এই প্রতিবাদলিপি।
তথাকথিত সংগঠন হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ডা. নেয়ামত হোসেন রিপন, সহযোগী অধ্যাপক, নিওনেটোলজি বিভাগ, দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তিনি নিয়মিত কর্মস্থলে যান না। তার স্ত্রী ফাতিমা-তুজ-জোহরা ঠাকুর, উপসচিব (স্বাস্থ্য-৩ শাখা), স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত, উভয়ে যোগসাজশে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ গোপন নথি পাচার করেন। ডা. নেয়ামত হোসেন রিপনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাজনিত কারণে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তার স্ত্রী ওই মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থাকার কারণে প্রভাব খাটিয়ে তা বন্ধ করে দেন। গত ০৭/০৯/২০২৪ তারিখের সংবাদ সম্মেলনে আমরা লক্ষ্য করলাম- ডা. তৌফিক আহমেদ, যিনি তার প্রতিটি কর্মস্থলে দুর্নীতির কারণে স্থানীয় পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলছেন, আমাদের নিয়োগ চুক্তিভিত্তিক ছিল, যা সম্পূর্ণ অসত্য এবং বিভ্রান্তিমূলক। আমাদের নিয়োগ এবং তৎপরবর্তীকালে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্তকরণ ও অন্য বিষয়গুলো জাতির সামনে স্পষ্ট করার জন্য নিচের প্রবন্ধটি সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হলো।
সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে এবং তৃণমূল পর্যায়ে ভঙ্গুর স্বাস্থ্যসেবা পুনর্গঠনকল্পে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ক্যাডার ও নন-ক্যাডার সব শ্রেণির শূন্য পদ পূরণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। ওই সময় মাঠপর্যায়ে চিকিৎসকের ৪১৩৩টি প্রবেশ পদ (ক্যাডারে) শূন্য ছিল। চিকিৎসকদের এ বিপুল সংখ্যক শূন্য পদ সাধারণ বিসিএসের মাধ্যমে অনতিবিলম্বে পূরণ করা সম্ভব না হওয়ায় 'প্রথম শ্রেণির (নন-ক্যাডার মেডিকেল) কর্মকর্তা নিয়োগ বিধিমালা-২০১০' প্রণয়ন করা হয় এবং ওই বিধিমালার ভিত্তিতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২৩/০৮/২০০৯ সালে স্মারক নং স্বাপকম পার-২/১এ-১/২০০৬/৪১২ মূলে অতিরিক্ত সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে আহ্বায়ক করে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের একজন সদস্যসহ মোট ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চপর্যায়ের নিয়োগ কমিটি প্রণয়ন করা হয়। ওই নিয়োগ কমিটি কর্তৃক ২৭/০৮/২০০৯ সালে স্মারক নং স্বাপকম পার-২/১এ-১/২০০৬/৪১৮ মূলে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে প্রায় ১০৫০০ প্রার্থী আবেদন করেন।
পরবর্তীতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার (প্রিলিমিনারি পরীক্ষা) মাধ্যমে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ২৫/০৩/২০১০ সালের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্মারক নং স্বাঅধি/চিশি/বিবিধ/২০০৯-১০/২৮০ মূলে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য সময়সূচি প্রকাশ করে। পরবর্তীতে ০১/০৬/২০১০ তারিখে চূড়ান্ত ফলাফল জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ করে। চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশ ভ্যারিফিকেশন পূর্বক ১৩/০৬/২০১০ এবং ২৩/০৩/২০১১ সালে যথাক্রমে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং স্বাপকম/পার-২/১এ (এড:নি:)-১১/২০০৯/৩৯৫ এবং স্বাপকম/পার-২/১ এ (এড:নি:)-৫/২০১০/২০৬ মূলে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের নামের তালিকার প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। বিদ্যমান ক্যাডারের শূন্য পদে এডহক ভিত্তিতে ২০১০ সালে ৩৫৫১ এবং ২০১১ সালে ৫৮২ সর্বমোট ৪১৩৩ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়। এই ৪১৩৩ জন এডহক (নন-ক্যাডার) চিকিৎসককে চাকরি নিয়মিতকরণের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। ০২/০৮/২০১২ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পত্রের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন থেকে অবগত করা হয় যে, বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা গ্রহণ করে নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের ক্যাডারভুক্তকরণের কোনো চলমান পদ্ধতি নেই। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে এডহক (নন-ক্যাডার) চিকিৎসকদের পর্যায়ক্রমে তাদের চাকরির প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে নিয়মিতকরণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে নিয়মিতকরণকৃত নন-ক্যাডার চিকিৎসকদের তাদের চাকরির প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে নন-ক্যাডার পদে চাকরি স্থায়ীকরণ করা হয়।
২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নন-ক্যাডারে স্থায়ীকৃত চিকিৎসকদের ক্যাডারভুক্তকরণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে বারবার চিঠি প্রেরণ করা হয়। এসব চিকিৎসককে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্তকরণের জন্য ২৩/০১/২০২০ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ৪৫.০১.০০০০.১৪০.২২.০০২.১৯.১৫০ মূলে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ২৩/০১/২০২০ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যেসব এডহক/প্রকল্প (রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত) চিকিৎসক যারা ক্যাডারভুক্ত হননি, সেই সব চিকিৎসককে ক্যাডারভুক্তির জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। ২৯/০৭/২০২০ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্মারক নং ডিজিএইচএস/পার-১/স্কেল/২০১৮/৭৫০৩ মূলে ২০১৫ সালের পে- স্কেল বিধি মোতাবেক ভূতাপেক্ষ সিলেকশন গ্রেড প্রদানের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। অবশেষে ৩০/০৫/২০২২ সালে সব বিধি অনুসরণপূর্বক বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে Bangladesh Civil Service Recruitment Rules 1981 অধিকতর সংশোধন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং এস.আর.ও নং ১১৩-আইন/২০২২ মূলে ১৯৮৯ জন চিকিৎসককে তাদের সরকারি চাকরিতে প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্তকরণ করা হয়। পরবর্তীতে ০৬/১২/২০২২ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের স্মারক নং ৪৫.০০.০০০০.১৪৮.২২.০০১.২১-৭০৮ মূলে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার পদে যোগদান গৃহীত হয়েছে মর্মে আদেশ প্রকাশ করে।
কর্মকর্তাদের চাকরি ইতোমধ্যে স্থায়ী হলেও ক্যাডারভুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা-১৯৮১ এর ৭(১),৮(জি) ও ৮ (এইচ) বিধিসমূহের আলোকে ক্যাডারভুক্ত পদে পুনরায় চাকরি স্থায়ীকরণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। উল্লেখ্য, এসব চিকিৎসক বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে আগ্রহী, এই মর্মে আগ্রহ প্রকাশ করে বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করা হলে প্রতিবারই ব্যর্থ হয় এবং জানানো হয় যে, বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুধু ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত। ইতোমধ্যে এসব চিকিৎসক ২০১৫ সালের পে-স্কেল অনুসারে বিধিমোতাবেক উচ্চতর গ্রেড (৬ষ্ঠ গ্রেড) পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করলে ২৫/০৫/২০২৩ থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সময় উচ্চতর গ্রেড (৬ষ্ঠ গ্রেড) প্রদান করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন স্মারকে প্রজ্ঞাপন জারি করে। ২৭/০৩/২০২৪ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ০৫.০০.০০০০.১৭৪.২২.০০১.২৪.৪৩ মূলে ১৯৮৯ জন বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্ত এবং প্রকল্পে নিয়োজিত পরবর্তীতে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত এবং পরবর্তীতে ক্যাডারভুক্ত ৩৫৭ জন চিকিৎসকের চাকরি স্থায়ীকরণের শর্তাবলি প্রমার্জনার নিমিত্তে The Bangladesh Civil Service Recruitment Rules 1981 সংশোধনের একটি প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নিকট প্রেরণ করা হয়। গত ২৩/০৫/২০২৪ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রশাসনিক উন্নয়ন ও সমন্বয়-১ অধিশাখা স্মারক নং ০৪.০০.০০০০.৭১১.০৬.০০৪.২৪.৮৫ মূলে সর্বসম্মতিক্রমে The Bangladesh Civil Service Recruitment Rules 1981 সংশোধন করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ করা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ওই চিঠি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনে প্রেরণ করে। বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্ত এসব চিকিৎসকের মধ্যে প্রায় ৯৩ জন কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (UH&FPO) হিসেবে কর্মরত আছেন। দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত বা চলতি দায়িত্বে থাকার কারণে তারা কর্মস্পৃহা হারাচ্ছেন। ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের অনেকেই বেসিক সাবজেক্ট ও ক্লিনিক্যাল সাবজেক্টে বিভিন্ন উচ্চতর ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ/অর্জন করেছেন। উল্লেখ্য, এডহক ভিত্তিতে নিয়োগকৃত চিকিৎসকরা চিকিৎ তাদের চাকরিকাল ১২ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর তাদের সরকারি চাকরিতে প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন। এডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা যথাক্রমে ০১.০৭.২০১০ তারিখ থেকে ১৯.০৫.২০১১ তারিখের মধ্যে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। সে মোতাবেক ০১/০৭/২০১০ তারিখে যোগদানকৃত চিকিৎসকদের চাকরি ৩০/০৬/২০২৪ তারিখ ১৪ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং ১৯/০৫/২০১১ তারিখে যোগদানকৃত চিকিৎসকদের চাকরি আগামী ১৯.০৫.২০২৫ তারিখে ১৪ বছর পূর্ণ হবে। আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি ভুঁইফোড় সংগঠন যারা ক্ষণে ক্ষণে তাদের রং পরিবর্তন করে, তারা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ধ্বংসের লক্ষ্যে এবং বিগত সরকারের বিভিন্ন মহলকে ব্যবহার করে আমাদের এই নিয়োগকেপ্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানা মিথ্যা প্রোপাগান্ডা রটনায় লিপ্ত থাকে এবং যা এখনো চলমান। তারা এই মিথ্যা প্রোপাগান্ডা সাধারণ চিকিৎসক ও জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে ক্ষান্ত হয়নি বরং ২০২২ সালে উচ্চ আদালতে আমাদের নিয়োগ এবং জ্যেষ্ঠতা নিয়ে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ আরও ৪টি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বিবাদী করে একটি রিট দায়ের করে। আগস্ট ২০২২ সালে দায়েরকৃত রিটের এই পর্যন্ত ৪৭টি শুনানি সম্পন্ন হয়েছে এবং গত ২৫/০৭/২০২৪ সালে ৪৮তম শুনানিতে সম্মানিত বিচারক মহোদয় ২০১০/২০১১ সালে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগকৃত পরবর্তীতে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্ত এসব চিকিৎসকের নিয়োগ বৈধ এবং এসব চিকিৎসকের ক্যাডার পদে চাকরির প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে স্থায়ীকরণে কোনো বাধা নেই মর্মে রায় দেন। রিট পিটিশন নং ১০৭৩৬/২০২২। অবশেষে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন থেকে প্রমার্জনার প্রস্তাবনার ফাইলটি প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের জন্য গত ০৩/০৯/২০২৪ তারিখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরিত হয়। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা প্রজ্ঞাপন প্রকাশে
বাধার সৃষ্টি করছে এবং সময় ক্ষেপণের জন্য নিত্যনতুন ফন্দি আঁটছে। আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব মোখলেছুর রহমান মহোদয়ের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা স্থবির করে দেওয়ার জন্য হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের কুচক্রী মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। আপনাদের সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, গত ১১/০৮/২০২৪ তারিখে হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চিকিৎসক হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার বিঘ্ন ঘটিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মানিত মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) এবং পরিচালক প্রশাসন মহোদয়কে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং জিম্মি করে একটি একপেশে, বিধিবহির্ভূত এবং অবৈধ আদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মানিত মহাপরিচালক মহোদয়ের স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এ ঘটনা জানার পর বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্ত চিকিৎসকরা ১২/০৮/২০২৪ তারিখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়ে এই অবৈধ আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাই এবং উপযুক্ত যুক্তিস্থাপন করে ওই অবৈধ আদেশটি বাতিল করার জন্য সম্মানিত মহাপরিচালক মহোদয়ের নিকট অনুরোধ জানাই। বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্ত চিকিৎসকদের যুক্তি সন্তোষজনক জানিয়ে ১১/০৮/২০২৪ তারিখের অবৈধ আদেশটি স্থগিত করে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ প্রদানের অনুরোধ করেন।
১৩/০৮/২০২৪ থেকে অদ্যাবধি প্রতিদিন হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক তাদের কর্মস্থলে না গিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অবস্থান করছে, এতে বিপুল সংখ্যক রোগী চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাকে অরাজকতায় নিমজ্জিত করার জন্য এরা প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা শুধু এগুলো করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না বরং প্রতিনিয়ত বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্ত চিকিৎসকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হত্যার হুমকি দিচ্ছে এবং কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য পেশ করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি। এই অরাজকতা ও হুমকি বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবো। তাদের এহেন কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ভণ্ডুলের এসব ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড রুখে দেওয়ার এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাকে আরও গতিশীল করার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারভুক্ত অ্যাসোসিয়েশন
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে