গৌরব '৭১ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক
‘কোটা আন্দোলন দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ'
কোটা আন্দোলন আদালতে মীমাংসিত বিষয়। এরপরও নানা ধরনের দফা দিয়ে আন্দোলন হচ্ছে। বিষয়গুলো তলিয়ে দেখা প্রয়োজন। এত কিছু প্রাপ্তির পরও কারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে? কোটা আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াও করেছে?
সোমবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গৌরব '৭১-এর আয়োজনে ‘সন্ত্রাস, নাশকতা ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা আরও বলেন, এ সবকিছুর আলামত ভালো নয়। আন্দোলনের ধরন দেখে মনে হয় এটি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল।
প্রধান আলোচক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেন, ২১ জুলাই আপিল বিভাগ যখন কোটা সংস্কার করে রায় দিলেন- দেশবাসী ভেবেছিলেন আন্দোলনের আর প্রয়োজন হবে না। কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের যা প্রত্যাশা ছিল তার চেয়ে বেশিই পেয়েছে। কিন্তু এরপর নতুন মাত্রায় সহিংসতা শুরু হল। কারণ বিএনপি-জামায়াত সরকার পতনের একদফা দাবি বাস্তবায়নে কৌশলে শিক্ষার্থীদের পেছনে অবস্থান নিলো। মূল খেলোয়াড় তো শিক্ষার্থীরা নয়। এই আন্দোলনের মূল খোলোয়াড় বিএনপি-জামায়াত।
সভাপতির বক্তব্যে সংসদের হুইপ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম এমপি বলেন, “বাংলাদেশ অনেক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে, ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকি। শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হয়েছে- তারা যেন ঢাল হিসেবে ওই অপশক্তিকে আর সুযোগ না দেয়।”
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, “বিশ্বের কোথাও এমন আছে যেখানে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর পরাজিত শক্তি আস্ফালন দেখায়? এই ক্ষতবিক্ষত বাংলাদেশ কি আমরা কল্পনা করেছিলাম। মৃত্যু যারই হোক- পুলিশ-শিক্ষার্থী, এক ফোঁটা রক্ত ঝরুক আমরা চাইনি।”
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এমপি বলেন, ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দুষ্কৃতিকারী যারা আওয়ামী লীগকে সহ্য করতে পারে না, যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা দেখতে চায় না তারা এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো, মুক্তিযুদ্ধের প্রতিপক্ষকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় না আনা, বরং ক্ষেত্রেবিশেষে উদারভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা। শুধু দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ নিশ্চিত করলেই হবে না, সাংস্কৃতিক জাগরণের মধ্য দিয়ে অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, “নাশকতার ষড়যন্ত্র ছিল বলা হচ্ছে, কিন্তু এই নাশকতা কীভাবে হলো? এটি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ। ৯ ও ১৭ জুলাই বিদেশি মিশনে আন্দোলনকে চাঙা করার জন্য বৈঠক হয়েছে। গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য ছিল। তথ্য থাকা সত্ত্বে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। দেশের অধিকাংশ জনগণ কোটা সংস্কারের পক্ষে ছিল। এটা গোড়াতেই সমাধান করা যেতো। আমরা বুঝতে পারিনি তৃতীয় কোনো পক্ষ আন্দোলনে ঢুকে পড়েছে। ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা অনেক দিন ধরেই হচ্ছে, আমরা বুঝতে পারিনি।”
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে