Views Bangladesh

Views Bangladesh Logo

বিদায়ের পথে বর্ষা, মাসের শেষে প্রবেশ করবে হিমেল হাওয়া

Hira  Talukder

হিরা তালুকদার

সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

প্রকৃতির রানী বর্ষা ঋতু বিদায় নিয়েছে আগেই। এরপর প্রকৃতিতে শুভ্র-সাদা মেঘমালা ও কাশফুলের কোমল ডানা মেলে আসা অপরূপা ‍ঋতুরাণী শরৎও প্রায় শেষ। অথচ কাটেনি বর্ষার রেশ। সারা দেশে বৃষ্টি ঝড়ছে এখনো। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে- আগামী ২৫ অক্টোবরের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষা) বাংলাদেশ থেকে পর্যায়ক্রমে বিদায় নেবে। এরপরই দেশের উত্তরের জনপদ রংপুর অঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করবে হিমালয় থেকে আসা শুষ্ক হিমেল হাওয়া। কৃত্তিকা ও আর্দ্রা- এ দুটি তারার নামে রাখা কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসের হেমন্তকালের এই হিমেল হাওয়া নিয়ে আসবে তীব্র শীত। আর এবারের শীতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শৈত্যপ্রবাহ বইবে দেশে। এমনটাই জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ড. আবুল কালাম মল্লিক ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, ‘মুলত অক্টোবরের প্রথমভাগেই দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষা) বাংলাদেশ থেকে পর্যায়ক্রমে বিদায় নিয়ে থাকে। রংপুর থেকে আগেভাগে বিদায় নেয়। তবে এবার একটু বিলম্ব হচ্ছে। আগামী ২৫ অক্টোবরের পর ধীরে ধীরে সারা দেশে থেকে বিদায় নেবে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু।’

তিনি বলেন, ‘অক্টোবর মাস ঘূর্ণিঝড়প্রবণ মাস। এই সময়ে সাগরে একাধিক সিস্টেম তৈরি হয়। এবারও চলতি মাসে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা প্রবল। দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে দুই-চার দিন মাঝারি থেকে তীব্র বজ্রঝড় এবং সারা দেশে তিন-পাঁচ দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় হতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে পারে; তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা কিছুটা বেশি থাকবে। বন্যার পূর্বাভাস জানিয়ে সংস্থাটি জানায়, অক্টোবর মাসে দেশের প্রধান নদনদীতে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে। তবে ভারি বৃষ্টিপাতজনিত কারণে দেশে আর কোনো বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভাবনা কম।’

এদিকে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো বিশ্লেষণ করে বলেছেন, ‘চলতি অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে পঞ্চগড় দিয়ে শীতের বাতাস দেশে প্রবেশ করতে শুরু করবে। এরপর তা ধীরে ধীরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। এবার শীতও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে অন্য বছরের তুলনায় বেশি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে। ভারি ঘনত্বের কুয়াশা থাকবে দীর্ঘ মেয়াদি।’

তিনি আরো বলেন, ‘চলতি অক্টোবর মাসের ১৫ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। অক্টোবর মাসের এই সময়ে অতীতে বারবার ঘূর্ণিঝড় আঘাত করেছে দেশে। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এবং ২০২৩ সালের অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ সৃষ্টি হয়েছিল। এই দুটি ঘূর্ণিঝড়ই সরাসরি বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল উপকূলে আঘাত হেনেছিল।’

আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। চলতি অক্টোবর সামের শেষ সপ্তাহে দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষা) সারা দেশ থেকে বিদায় নিতে পারে এবং বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে। এই সময়ে উত্তরের হিমেল হাওয়া রংপুর অঞ্চল দিয়ে দেশে প্রবেশ করবে এবং ধীরে ধীরে তা সারা দেশে বিস্তার লাভ করবে।

তিনি বলেন, ‘এবার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শীত অনুভূত হতে পারে। সর্বোচ্চ ও সর্বোনিম্ন তাপমাত্রাও কম থাকতে পারে এবারের শীতে।’

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ