রমনা বটমূলে বোমা হামলা: হত্যা মামলার রায় ১৩ মে
২০০১ সালের পয়লা বৈশাখে রাজধানীর রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১৩ মে দিন নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের এই দিন ধার্য করেন।
এর আগে, গত ৩০ এপ্রিল মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৮ মে দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। তবে শুনানি শেষে ১৩ মে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়। উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উদযাপনকালে রমনা বটমূলে বোমা বিস্ফোরণে ১০ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ৯ জন। তারা হলেন—আল মামুন হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম, জান্নাতুল ফেরদৌস শিল্পী, আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ এমরান হোসেন, অসীম চন্দ্র সরকার, ইসমাইল হোসেন স্বপন ও আনসার আলী। একজন নিহতের পরিচয় জানা যায়নি। ঘটনার পর পুলিশ রমনা থানায় মামলা করে।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ১৯ নভেম্বর মামলার মূল পরিকল্পনাকারী নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি-বি) প্রধান মুফতি আবদুল হান্নান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে মামলার তদন্তে গতি আসে। ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিআইডি) মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করে দুটি অভিযোগপত্র দেয়—একটি হত্যা ও অপরটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে।
২০১৪ সালের ২৩ জুন বিচারিক আদালত মামলার রায় দেন। এতে মুফতি হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—মুফতি হান্নান, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলাল উদ্দিন, আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মাওলানা তাজউদ্দিন (সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই) এবং হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর বদর।
তাদের মধ্যে প্রথম চারজন কারাগারে আটক ও পরবর্তী চারজন পলাতক। বাকি ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। তারা হলেন—হাফেজ আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির ওরফে আবদুল হান্নান, হাফেজ ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আবদুর রউফ ও শাহাদাত উল্লা ওরফে জুয়েল। এরা সবাই কারাগারে আটক।
ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা আরেকটি মামলাটি এখনও বিচারাধীন রয়েছে। ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন এই মামলায় ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ১৭ মে মামলার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি হবে।
উল্লেখ্য, সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত রমনা বোমা হামলার প্রধান আসামি মুফতি হান্নানের ফাঁসি ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে